লেখক হওয়ার উপায় কী?

পত্রিকা থেকে আমাকে অনুরোধ জানানো হলো, কীভাবে লেখক হওয়া যায় তার ওপর অন্তত ১০টি টিপস লিখে দিন। অনেক মাথা খাটালাম, অনেক চেষ্টা করলাম, কিন্তু কিছুই বেরোল না মাথা থেকে। বুঝতে পারলাম, চেষ্টা করে করে লেখা হয়তো যায়, তবে সেটা কতটুকু মানসম্পন্ন হবে, সেটা অন্য প্রশ্ন। কিছু কিছু ভাগ্যবান মানুষ গল্প বলার গুণটা জন্ম থেকেই পেয়ে যায়। লিখতে যারা পারে, তারা এমনিই পারে, শিখতে হয় না; যারা পারে না, তারা পারে না। টিপস দিয়ে বা অন্য কিছু করে কাউকে লেখা শেখানোর ফর্মুলাটা আমার অন্তত জানা নেই। তবু লিখতে যখন বলা হয়েছে, কী আর করা। ভাবলাম, ১০টি টিপস না লিখে ১০ লাইনে কিছু লিখে দিই।

ছোটবেলা থেকে বই পড়ার নেশা আমার। গল্পের বই। প্রচুর পড়তাম। যা পেতাম তা-ই পড়তাম। তারপর একদিন আমার পছন্দের একজন লেখকের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আস্ত একটা অ্যাডভেঞ্চার উপন্যাস লিখে ফেললাম। বইটা ছাপা হয়নি। কারণ পাণ্ডুলিপিটাই হাতছাড়া হয়ে গিয়েছিল। তাতে আমার আফসোস নেই। কারণ ওই বই কোনো প্রকাশক ছাপতেন বলে এখন অন্তত আমার মনে হয় না। তারপর, ২৭ বছর বয়সে বিদেশি গল্পের ছায়া অবলম্বনে একটা বই লিখে ফেললাম। ভয়ে ভয়ে প্রকাশকের হাতে দিলাম। প্রকাশক পড়ে প্রশংসা করলেন। ভুলভাল ঠিক করে বইটা ছেপে ফেললেন। প্রবল উৎসাহে পরপর আরও তিনটা বইয়ের অনুবাদ করে ফেললাম। সেগুলোও ছাপা হলো। পাঠকমহলে প্রশংসিত হলো। এরপর একের পর এক বই লিখতে লাগলাম। প্রকাশিত হলো। জনপ্রিয়তা পেল।

কেউ আমাকে লেখা শেখায়নি, কেউ আমাকে বলে দেয়নি কীভাবে লিখতে হবে। লেখক হতে হয় নিজের মেধা আর পরিশ্রমের জোরে। এ প্রসঙ্গে একটা টিপস দিতে পারি, লেখক হতে হলে পড়তে হবে। পড়তে হবে। প্রচুর পড়তে হবে। এর আর বিকল্প নেই। পড়তে পড়তে লেখা শিখে ফেলা যায়।