পশুপাখি পছন্দ করা মানুষের সংখ্যাটা কম নয়। কিন্তু সেই মানুষগুলোই প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে এসব প্রাণীর জীবনের প্রতি হুমকিস্বরূপ। একটু ভেবে দেখো, এক বোতল পানি খাওয়ার পর বোতলটা ফেলে দিলে রাস্তায়। ময়লা-আবর্জনার সঙ্গে তা গিয়ে পৌঁছাল কোনো ডাম্প ইয়ার্ডে, বা বৃষ্টির পানিতেই তা জমা হলো ড্রেনে। ড্রেন থেকে আস্তে আস্তে নদীতে, এরপর সাগরে। এভাবে প্রতিদিন লাখ লাখ প্লাস্টিক বা অপাচ্য বস্তু জমা হচ্ছে মাটিতে-পানিতে। এসব বস্তু প্রকৃতিতে ঘুরে বেড়ানো প্রাণীদের জন্য ক্ষতিকারক। বিভিন্ন সামুদ্রিক পাখি বা প্রাণী খাবার ভেবে অনেক সময় খেয়ে ফেলে এগুলো। পরিণতিতে নেমে আসে মৃত্যু। একইভাবে বায়ুদূষণ যেভাবে বেড়ে চলেছে, তা তো মানুষের ক্ষতি করছেই, এসব প্রাণীকেও ছাড়ছে না।
কিন্তু এমন অনেক মানুষই আছেন, যাঁদের পশুপাখির প্রতি এতটাই ভালোবাসা যে তাদের জন্যই কাজ করে যাচ্ছেন। এমন একজন মানুষ হচ্ছেন ডিন শ্নাইডার। সুইজারল্যান্ডের বিলাসবহুল জীবন ছেড়ে পাড়ি জমিয়েছেন আফ্রিকাতে। সবকিছু বিক্রি করে দিয়ে আফ্রিকা চলে আসার একটাই কারণ, পশুপাখির জন্য ভালোবাসা।
সুইজারল্যান্ডে ডিন ছিলেন একজন অর্থ পরিকল্পনাকারী। দক্ষিণ আফ্রিকা এসে তিনি তৈরি করেন ‘হাকুনা মিপাকা’, যার অর্থ ‘নো লিমিটস’। ৩০০ হেক্টর জমিতে নির্মিত হাকুনা মিপাকা মূলত সিংহ প্রজননকেন্দ্র। এর মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন এলাকাজুড়ে রয়েছে জেব্রা, হায়েনা, ঘোড়াসহ বেশ কিছু প্রাণীর আবাসস্থল। ডিনের লক্ষ্যই এসব প্রাণীকে স্বাধীনভাবে বেড়ে ওঠার সুযোগ দেওয়া।
ছোটবেলা থেকেই ডিন পশুপাখি পছন্দ করতেন। তিনি মনে করতেন, মানুষের উচিত পশুপাখির আচার-আচরণের সম্মান করা। তাদের কিংডম সম্পর্কে জানা। সেখান থেকেই ডিনের বিভিন্ন পশুপাখি নিয়ে ডকুমেন্টারির ঘাঁটাঘাঁটি শুরু হয়, প্রবেশ ঘটে প্রাণী রক্ষার বিভিন্ন সংস্থায়।
ডিন বর্তমানে বিভিন্ন প্রাণী নিয়ে মানুষকে ট্রেনিং করাচ্ছেন। কীভাবে এদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করা যায়, সেটিই দেখান তিনি। ইনস্টাগ্রামে তাঁর অ্যাকাউন্টের ফলোয়ার সংখ্যা ৪ মিলিয়নের কাছাকাছি।
ডিনের ছবিতে দেখা যায়, সিংহ বা হায়েনাকে জড়িয়ে ধরে বসে আছেন। আবার কাঁধের ওপর বানর বসে আছে, কুকুরগুলোর সঙ্গে দৌড়াতে বেরিয়েছেন। একজন নিঃস্বার্থভাবে জীবনের পুরোটা সময়ই কাটিয়ে দিচ্ছেন এসব পশুপাখিকে বাঁচানোর জন্য। তাঁর ইনস্টাগ্রাম আইডি থেকে সংগৃহীত কিছু ছবি দেওয়া হয়েছে।