আমি তখন ক্লাস নাইনে পড়ি, স্কুল আর প্রাইভেট নিয়ে পার করছিলাম এক অগোছালো জীবন। একদিন মুহম্মদ জাফর ইকবালের আমি তপু বইটা পড়া শুরু করলাম। এর আগে আমি কখনো গল্পের বই পড়িনি। বইয়ের প্রথম কয়েকটা পাতা বেশ মনোযোগ দিয়ে পড়লাম। মনে মনে ভাবছিলাম, আমি গল্পের বই কেন পড়ছি? এর থেকে ভালো অন্য কিছু করি... গান শুনতে পারি বা টিভি দেখতে পারি। তাছাড়া প্রাইভেটের পড়াও শেষ হয়নি। এমন উদ্ভট চিন্তা মাথায় আসছিল। যদিও কিছুক্ষণের মধ্যে এসব কিছুই আর রইল না। ধীরে ধীরে চলে গেলাম এক কল্পনার জগতে। বইয়ের প্রতিটি লাইন মুগ্ধ করছিল আমাকে। গল্পের বই যে এভাবে আরেকটা জগৎ তৈরি করতে পারে, তা কখনো ভাবিনি। অসাধারণ এক চরিত্র তপু। তার পরিবারে সে অবহলিত, যা তাকে করে তোলে অসামাজিক। স্কুলের পরীক্ষাগুলোতেও তেমন ভালো করতে পারে না তপু।
আশেপাশের মানুষও অবেহেলা করে তকে। স্কুল আর রান্নাঘরেই সীমাব্ধ তপুর জীবন। রান্নাঘরেই রাত কাটায় সে। তার মা তাকে ঘরে থাকতে দেয় না। তাই তার ভাই আর বোন মিলে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছে এখানে। এমন এক পরিবেশে বড় হতে হতেই তপুর এগিয়ে যায় রোমাঞ্চের দিকে। তোমরা একবার শুধু বইটি পড়ো, তারপর বুঝতে পারবে কেন কোনো গল্পের বই না পড়া আমি একটা বইয়ে বুঁদ হয়ে গেলাম!