গ্লাস কেমন শূন্যে ভাসে

চোখের সামনেই কিছু একটাকে শূন্যে ভেসে থাকতে দেখলেই তোমরা সেটাকে জাদু বলে ধরে নেবে—তাই না! সত্যিটা তোমাদের বলেই দিই। জাদু বলে পৃথিবীতে সত্যিই কিছু নেই। এটা কেবল বিশেষণ। দেখো না, আব্বু-আম্মুরা তোমাদের কেমন আদর করে জাদু সোনা বলে ডাকে।

আজকের জাদু

জাদুকরের হাতে বেশ কয়েকটা কাগজের তৈরি গ্লাস। সেগুলোর প্রতিটিকেই তিনি তাঁর দর্শকদের দিয়ে খুব ভালোভাবে পরীক্ষা করিয়ে নিলেন। এবার দর্শকদের বললেন গ্লাসগুলো থেকে যেকোনো একটি গ্লাস তাঁদের পছন্দ অনুযায়ী জাদুকরের হাতে দেওয়ার জন্য।

দর্শকদের পছন্দ করা গ্লাসটি জাদুকর তাঁর দুই হাত দিয়ে নাড়াচাড়া করে দেখছেন। এবার জাদুকর গ্লাসটিকে তাঁর বাঁ হাতের তালুর ওপর রেখে ডান হাতের বুড়ো আঙুল দিয়ে গ্লাসটিকে ছুঁতেই সেটি কেমন অবলীলায় শূন্যে ভাসতে লাগল।

জাদুকরও নানা ভঙ্গিমায় গ্লাসটিকে শূন্যে ভাসিয়ে দেখালেন এবং প্রমাণের চেষ্টা করলেন যে গ্লাসটিতে কিংবা তাঁর হাতে আপাত কোনো কৌশল করা নেই।

তবু তো কৌশল

আগেই বলেছিলাম যে কৌশলের অন্য নামই জাদু। এখানেও জাদুকর কিন্তু ছোট্ট একটা কৌশলের আশ্রয় নিয়েছেন। চলো, তবে সেটাই আগে জেনে নেওয়া যাক।

ব্যবহৃত কাগজের গ্লাসগুলোর প্রতিটিই সাধারণ—এতে কোনো সন্দেহ নেই। জাদুকর তাঁর সুবিধামতো আশপাশে কোথাও স্কচ টেপ দিয়ে তৈরি গোলাকৃতি গিমিকটাকে (জাদুর ভাষায় কৌশল করা জিনিসটাকে গিমিক বলা হয়) লুকিয়ে রেখেছিলেন। দর্শকদের দিয়ে গ্লাসগুলো তো তিনি পরীক্ষা করিয়ে নিলেন, নিজের হাত দুটিকেও খালি দেখালেন সত্যি—কিন্তু কৌশলে কোনো এক ফাঁকে তিনি নিজের ডান হাতের বুড়ো আঙুলে লাগিয়ে নিলেন স্কচ টেপের টুকরোটি।

বাকিটা খুব সহজ। টেপটা তো জাদুকরের বুড়ো আঙুলেই লেগে আছে। স্বচ্ছ হওয়ায় সেটা ঠিক নজরেও আসবে না দর্শকদের। ধীরে ধীরে উপস্থাপনের অভিনয়জ্ঞানটা জাদুকর এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকলেন, আর দর্শকেরা গ্লাসটি শূন্যে ভেসে বেড়াচ্ছে ভেবে অভিভূতই হবেন নিশ্চিত।

পাদটীকা: চাইলে স্কচ টেপের স্থলে উভয়মুখী টেপ ব্যবহার করতে পারো। এতে সুবিধা বেশি, ঝুঁকিও কম। তবে মনে রাখবে, ভালোভাবে বেশ কয়েকবার করে চর্চা না করে জাদুটি কোনোভাবেই জনসমক্ষে দেখাতে যেয়ো না। ভালো থেকো, সুন্দর থেকো।