স্কাউটিং ক্যাম্পের কথা শুনলেই নেচে ওঠে মন। তাই ক্যাম্পের কথা শুনলেই আবেদন করতাম আমি। হঠাৎ শুনি ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে শ্রীলঙ্কান জাম্বুরির ঘোষণা। সঙ্গে সঙ্গে আবেদন করলাম। দিলাম মৌখিক পরীক্ষাও। তারপরই এল সেই কাঙ্ক্ষিত ঘোষণা—বাংলাদেশ থেকে আমরা ১৩ জন উত্তীর্ণ হয়েছি শ্রীলঙ্কান জাম্বুরির জন্য। শ্রীলঙ্কার এই ক্যাম্প হবে ২০-২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬। দ্রুত ভিসাসংক্রান্ত সব ঝামেলা শেষ করে তৈরি হয়ে নিলাম আমরা। ১৯ তারিখ দুপুর ১২টায় শ্রীলঙ্কার উদ্দেশে আমাদের ফ্লাইট।
শ্রীলঙ্কা পৌঁছাতেই সে দেশের রোভাররা স্বাগত জানাল আমাদের। থাকার ব্যবস্থা কলম্বোর বাংলোতে। সেখানে ভারত, নেপাল, মালদ্বীপের স্কাউটরাও ছিল। রাতের খাবার খেয়ে দ্রুত ঘুমিয়ে পড়লাম আমরা। পরদিন ভোরে যেতে হবে ক্যাম্প সাইটে।
সাইটটা কলম্বো থেকে ৬০০ কিলোমিটার দূরে জাফনায়। নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর প্রহরায় এগোচ্ছিল আমাদের বাস। দীর্ঘ ১৩ ঘণ্টা পর নির্ধারিত আন্তর্জাতিক সাইটে গিয়ে উঠি আমরা। পরের কয়েকটি দিন কেটে গেল খুব দ্রুত। স্থানীয় কলেজ দেখলাম আমরা। দেখলাম ২০০০ বছর আগের কিছু স্থাপনা। সাইট ক্যাম্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমাদের অংশগ্রহণ ছিল। অনুষ্ঠানটি দেখতে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টও এসেছিলেন। সেখানে ‘ইন্টারন্যাশনাল নাইট’-এ বাংলাদেশকে উপস্থাপন করি আমরা।
তারপর শুধুই ঘোরাঘুরি। সমুদ্র দেখাসহ বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ ছিল আমাদের। ২৫ তারিখ রাতে আবারও বাংলাদেশকে উপস্থাপন করে আমাদের দল। তারপর সব দেশের স্কাউটদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে দেশে ফেরার পালা। আবারও নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী প্রহরায় আমরা কলম্বো যাই। ২৬ তারিখ আমরা ঐতিহাসিক ‘অ্যাডামস পিক’ দেখা শেষে ঘুরে বেড়ালাম নিজেদের মতো। সবাই মিলে ঘুরতে খুব ভালো লাগছিল। কীভাবে যে সময়টা কেটে গেল, টেরই পেলাম না যেন।
মার্চের ১ তারিখ শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইনসের ফ্লাইটে দেশে ফিরে এলাম আমরা। দেশে ফিরেও বারবার মনে হচ্ছিল ক্যাম্পের কথা। সত্যি, ক্যাম্পটির স্মৃতি আর অভিজ্ঞতা ভোলার মতো নয়।