জীবনকৃষ্ণ বাবু ইংরেজ আমলে লাখ টাকার মালিক হয়েছিলেন। কিন্তু কোনো এক অদ্ভুত কারণে তিনি তাঁর সব টাকা জনকল্যাণে দান করে মারা যান নিঃস্ব হয়ে। জীবনকৃষ্ণ মেমোরিয়াল হাইস্কুল তারই শেষ স্মৃতিচিহ্ন। স্কুলের হেডমাস্টার ফজলুল করিম। স্কুলটাকে বাঁচানোর জন্য শেষ চেষ্টা করে চলেছেন। কিন্তু স্কুলটা বোধ হয় বেশি দিন টিকবে না। দিন দিন তাঁর আশা ফুরিয়ে চলেছে। পাশেই এ এলাকার মন্ত্রী তৈরি করেছেন নতুন স্কুল। ছাত্ররা সব চলে যাচ্ছে পাশের স্কুলে, এই স্কুলের অধিকাংশ বেঞ্চ ফাঁকাই পড়ে থাকে। দীর্ঘদিন বেতন না হওয়ায় শিক্ষকেরা পর্যন্ত চলে যাচ্ছেন। সরকারি টাকাও আসা বন্ধ হয়ে গেছে। যার সবচেয়ে বেশি সাহায্য করার কথা ছিল, সেই অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার মাহবুব সাহেবই স্কুলের বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছেন। তবে কি আর কিছুই করার নেই! এভাবেই বন্ধ হয়ে যাবে জীবনকৃষ্ণ মেমোরিয়াল হাইস্কুল? হেডমাস্টার ফজলুল করিম হাল ছেড়ে দেওয়ার লোক নন। সঙ্গে থাকেন তরুণ বিজ্ঞান শিক্ষক মামুন, ধর্ম শিক্ষক ইরতাজউদ্দীন। ২৪ ঘণ্টা তত্ত্বাবধানে নিয়ে আসেন এসএসসি পরীক্ষার্থী শিক্ষার্থীদের। এসএসসির একটা ভালো রেজাল্টই পারে স্কুলটাকে বাঁচিয়ে দিতে। একটি ছাত্রের বোর্ড স্ট্যান্ড করা রেজাল্টই পারে আবার সব ছাত্রকে আগের স্কুলে ফিরিয়ে আনতে, সব শিক্ষককে চেনা ক্লাস রুমে ফিরিয়ে আনতে, জীবনকৃষ্ণ বাবুর স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে। হেডমাস্টার ফজলুল করিমের আশা–ভরসা সবকিছু কেন্দ্রীভূত হয় মেধাবী ছাত্র বদরুলের ওপর। কঠোর পরিশ্রম করতে থাকেন তিন শিক্ষক আর এক মেধাবী ছাত্র। শেষ দুই পরীক্ষার আগে জ্বরে পড়ে যায় বদরুল। শেষমেশ কী হয়েছিল, সেটি জানতে তোমাদের হুমায়ূন আহমেদের জীবনকৃষ্ণ মেমোরিয়াল হাই স্কুল বইটি পড়তে হবে।