দুই থেকে এক

বন্ধুত্বের সংজ্ঞাটা মানুষভেদে ভিন্ন ভিন্ন রকমের। যদিও সর্বজনীন একটা সংজ্ঞা অবশ্যই আছে। আর তাই তো আমরা প্রিয় বন্ধু খুঁজে নিই নিজের মতো করেই। অন্য কোনো প্রাণীতে বন্ধুত্ব শব্দটা আছে কি না জানা নেই, তবে কোনো জড় পদার্থে বন্ধুত্ব হওয়াটা নিশ্চিত অঘোষিত। আজকের জাদুটা কিন্তু তেমনই অসম্ভব একটা কিছুকে নিয়েই।

জাদুকরের জাদু

নিজের পকেট থেকে দুই টুকরো দড়ি বের করে আনলেন জাদুকর। সেগুলোকে নিজের হাতে ধরে নিয়ে উপস্থিত দর্শকদের বেশ ভালো করেই দেখিয়ে নিলেন তা (চিত্র-৪)। এবং বললেন, ‘দুটো দড়ির চারটি প্রান্ত হয়। আমার হাতেও তাই। দুটো দড়ি আর তার চারটি প্রান্ত।’ বলেই বিচিত্র একটা অঙ্গভঙ্গি করতে লাগলেন এবং বিড়বিড় করে বললেন, ‘ইলি ইলি, গিলি গিলি, হোকাস্ ফোকাস্, অ্যাবড়া কা ড্যাবড়া, ছু-মন্তর-ছু...’ এরপর দড়িগুলোর নিচের দুটো প্রান্ত ধরে টান দিতেই একটা দড়ি, বেমালুম একটা দড়িই...কোথায় দুটো? দড়ি তো একটাই। নিচের চোখকেও যেন বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু জাদুকর যে করে দেখালেন!

এ জন্য যা প্রয়োজন

পাটের তৈরি সাধারণ এক টুকরো দড়ি, তিন থেকে চার হাত লম্বা হলে ভালো হয়।

পেছনের জাদু

ভালো করে খেয়াল করে দেখো, পাটের দড়ি সচরাচর পাক পেঁচিয়েই তৈরি করা হয়। দড়িটার ঠিক মাঝখানটাই ঠিক রেখে এর দুই পাশে দুই হাতের তর্জনী ও বৃদ্ধাঙ্গুলি দিয়ে চিত্র-২-এর মতো করে দড়ির পাকটিকে উল্টো দিকে এমনভাবে ঘোরাও, যাতে করে পাকটি আলাদা হতে থাকে। এবার চিত্র-৩-এর মতো করে দুই পাশের অর্ধেক অর্ধেক পাক মিলিয়ে দেখতে ঠিক দড়িটির মতো একই আরও দুটি পাক দড়িটির দুই পাশে তৈরি করে নাও। তৈরি করা পাক দুটোকে এক পাশে নিয়ে আসো, যেটি দেখতে ঠিক চিত্র-৪-এর মতোই দেখাবে।

প্রদর্শন পদ্ধতি

কৌশল করা অবস্থায় দড়িটি তোমার পকেটে রেখে দাও। জাদুটি দেখানোর সময় কৌশল করা দড়িটিই তোমার পকেট থেকে এমনভাবে বের করে আনো, যাতে তোমার উপস্থিতিতে দর্শকেরা দড়িটিতে যে কৌশল করা আছে, সে বিষয়টি ঘুণাক্ষরেও টের না পায়।

চিত্র-৪-এর মতো করে দড়িটির কৌশল করা অংশের গোড়ায় অর্থাৎ সংযোগস্থলে বাঁ হাতের সাহায্যে এমনভাবে ধরো যেন সেটিতে দেখতে একেবারেই স্বাভাবিক দেখায়।

এবার নিজের মতো করে অভিনয় আর যা বলার বলে নাও। শুধু মনে রাখবে, সবশেষে যখন দড়িটি ধরে টান দেবে, তখন যেন নিচের দিকে ঝুলে থাকা বড় প্রান্তগুলো ধরেই টান দাও। শেষের পুরো কাজটা করতে হবে এক নিমেষেই, যেন বিশ্বাসযোগ্য হয় ব্যাপারটা।

পাদটীকা

যত বেশি চর্চা করে জাদুটা দেখাতে পারবে, ঠিক তত বেশি আকর্ষণীয় হবে পুরো ব্যাপারটা। সুতরাং সেভাবেই এগোতে থাকো।

ভালো থেকো, সুন্দর থেকো, সুস্থ থেকো। চেষ্টা করো প্রতিদিন নিদেনপক্ষে একটা করে ভালো কাজ করার জন্য।