ইউরো ফাইনালের মঞ্চ প্রস্তুত। ১২ জুলাই বাংলাদেশ সময় রাত একটায় ইংল্যান্ডের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে ইতালি ও ইংল্যান্ড। এক মাস আগে শুরু হওয়া ইউরোপ মহাদেশীয় এই প্রতিযোগিতায় নিজেদের যোগ্যতার কঠিন পরীক্ষা পার করে ফাইনালে পৌঁছেছে দুই দল। ইংল্যান্ড–ভক্তরা তাই নিজেদের দলকে নিয়ে মুখোরিত হয়েছেন ‘ইটস কামিং হোম’ অর্থাৎ শিরোপা বাড়িতে আসছে স্লোগানে। স্টেডিয়ামের গ্যালারি থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, ভক্ত থেকে ফুটবল বোদ্ধা—সবার মুখেই সরব এ স্লোগান।
ইংল্যান্ডের ইতিহাসে একটিমাত্র শিরোপা রয়েছে, তা হলো ১৯৬৬ সালের বিশ্বকাপ। এরপর এত বছর পার হলেও আন্তর্জাতিক ফুটবলের কোনো শিরোপা ধরা দেয়নি থ্রি লায়ন্সদের হাতে। ১৯৯৬ সালে প্রথমবার ‘ইটস কামিং হোম’ গানটির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন দুই ব্রিটিশ কমেডিয়ান ডেভিড ব্যাডিয়েল এবং ফ্রাংক স্কিনার। সেবার নিজেদের মাটিতে ইউরোর সেমিফাইনালে পৌঁছেছিল ইংলিশরা। নিজেদের মাটিতে আরেকটি শিরোপা জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন সমর্থকেরা। তারই বহিঃপ্রকাশ হিসেবে গানটি গেয়েছিলেন ব্যাডিয়েল ও স্কিনার। যদিও তাঁদের বুক ভেঙে জার্মানির সঙ্গে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নেয় ইংল্যান্ড।
তারপর থেকে গানটি ইংল্যান্ড জাতীয় দলের অলিখিত সংগীত হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে ২০১৮ বিশ্বকাপে এটি পায় অন্য মাত্রা। সেমিফাইনাল খেলা ইংল্যান্ডকে ঘিরে আবারও শিরোপা জয়ের স্বপ্ন দেখছিলেন ভক্তরা। তাই খেলোয়াড়দের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে স্টেডিয়ামের মনিটর—সবখানেই ভেসে উঠতে দেখা যায় ‘ইটস কামিং হোম’ লেখাটি। যদিও আবার তাঁদের হৃদয় ভেঙে বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠে যায় ক্রোয়েশিয়া।
সেই ধারাবাহিকতা রয়েছে এবারের আসরেও। শুরু থেকেই ইংরেজদের ‘ইটস কামিং হোম’ স্লোগানে সর্বত্র মুখরিত। তবে এটি নিয়ে ব্যঙ্গ-বিদ্রূপও শুরু করেছে নিন্দুকেরা। বিশেষত, ইতালিয়ানরা তাদের দলের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের কারণে স্লোগানটিকে নিজেদের মতো রূপ দিয়ে গাইতে শুরু করেছে ‘ইটস কামিং রোম’ অর্থাৎ শিরোপা রোমে আসছে। এতে অবশ্য সাড়াও মিলেছে তাদের পক্ষে। ২০১২ সালের পর আবারও ইউরোর ফাইনালে পৌঁছেছে ইতালি, এ যাত্রায় তারা উপহার দিয়েছে দারুণ ফুটবল। তাই শিরোপা ইংল্যান্ডের ওয়েম্বলি থেকে রোমে নেওয়ার দাবিটাও ভুল কিছু নয়।
তবে শেষ পর্যন্ত কাদের স্লোগানের জয় হচ্ছে, শিরোপা হোম নাকি রোমে ফিরছে—সেটা কেবল সময়ই বলতে পারে।