আর কদিন পরই শুরু হচ্ছে ইউরোপিয়ান ফুটবল। ইউরো আর কোপার উত্তেজনার পর একটু বিরতি ছিল ফুটবলে। ৮ আগস্ট ফ্রান্সের লিগ ওয়ান দিয়ে আবার শুরু হবে ফুটবল উৎসব। ১৪ আগস্ট থেকে শুরু হবে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ, স্প্যানিশ লা লিগা এবং জার্মান বুন্দেসলিগা। আর ইতালিয়ান সিরি ‘আ’ শুরু হবে ২২ আগস্ট থেকে। ফুটবলভক্ত হলে তোমার মধ্যে এখনই উত্তেজনা শুরু হয়ে যাওয়ার কথা।
তবে ইউরোপিয়ান ফুটবল নিয়ে দ্বিধায় ভোগে অনেকেই। কোনটা কোন টুর্নামেন্ট, কোন দল কোথায় খেলছে, তা নিয়ে ঝামেলায় পড়ে যাওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। বিশেষ করে যারা সবেমাত্র ইউরোপের ফুটবল নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি শুরু করেছে, তাদের কাছে একটু জটিল লাগতেই পারে। তবে চিন্তা নেই। ইউরোপিয়ান ফুটবলে হাতেখড়ি নাহয় এই মৌসুম থেকেই শুরু হোক। তার আগে প্রাথমিক ধারণাটা নিয়ে নেওয়া দরকার। আজ থাকছে ইউরোপিয়ান ফুটবলের কাপ সমাচার। প্রতি মৌসুমে অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টগুলোর ধরন, নিয়ম, কীভাবে খেলা হয়—সবকিছুই বলার চেষ্টা করব এ লেখায়।
লিগ
ইউরোপিয়ান ফুটবলে নিজ নিজ দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিরোপা হলো লিগ শিরোপা। লিগের জন্য মূলত লড়াই করে ২০টি দল। প্রত্যেকে প্রত্যেকের বিপক্ষে পুরো বছরে মুখোমুখি হয় দুইবার। একবার নিজেদের মাটিতে, অন্যবার প্রতিপক্ষের মাটিতে। ২০ দল ২০ দলের মুখোমুখি হয়ে মৌসুম শেষ করে ৩৮ ম্যাচে। এই ৩৮ ম্যাচ শেষে সবচেয়ে বেশি পয়েন্ট পাওয়া দল হয় চ্যাম্পিয়ন। আর যদি দুই দলের পয়েন্ট সমান থাকে, তবে দেখা হয় কাদের গোল ব্যবধান (মোট গোল দান ও মোট গোল হজম) বেশি। শুধু স্প্যানিশ লা লিগা ও ইতালিয়ান সিরি ‘আ’য় দেখা হয় হেড টু হেড। অর্থাৎ দুই দলের মুখোমুখিতে কাদের জয় বেশি। জয় সমান হলে দেখা হয় কাদের গোল বেশি। গোলও সমান হলে ফেরত যাওয়া হয় আগের নিয়মে।
৩৮ ম্যাচ শেষে তালিকায় সবচেয়ে নিচে থাকা ৩টি দল হয় অবনমিত বা রেলিগেটেড। অর্থাৎ তারা চলে যায় পরের ডিভিশনে। ইউরোপিয়ান ফুটবলে প্রতিটি দেশেই তাদের লিগের কয়েকটি স্তর থাকে। প্রথম ডিভিশন থেকে দ্বিতীয় ডিভিশনে নেমে যাওয়া ৩ দলের শূন্যস্থান পূরণ করতে আসে দ্বিতীয় ডিভিশনের শীর্ষে থাকা ৩ দল। এভাবেই ইউরোপিয়ান ফুটবলের শীর্ষ লিগগুলো পরিচালিত হয়।
শীর্ষ লিগগুলোর মধ্যে ব্যতিক্রম শুধু জার্মানির বুন্দেসলিগা। তাদের লিগে মোট ১৮টি দল, ফলে ম্যাচ হয় ৩৬টি। বাদবাকি সবকিছু চলে একই নিয়মে।
লিগ কাপ
লিগের গল্প তো বুঝলে। এবার আসা যাক লিগ কাপের গল্পে। একটু আগে তোমাদের ডিভিশন পদ্ধতির হিসাব বললাম না? লিগ কাপের খেলা হয় সেখান থেকেই। ইংল্যান্ডের কথাই বলি। ইংল্যান্ডে এ রকম মোট ডিভিশন আছে ৯টি। ৯ ডিভিশনে ক্লাবের সংখ্যা মোট ৭৮৪। লিগ কাপে খেলার সুযোগ হয় প্রতিটি দলের। নক-আউট পদ্ধতিতে লটারির মাধ্যমে নির্ণয় করা হয় কে মুখোমুখি হবে কার। ইংলিশ লিগ কাপকে বলা হয় এফএ কাপ। এফএ কাপ হলো বিশ্বের অন্যতম পুরোনো টুর্নামেন্ট। পুরো নাম ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন কাপ, যা চলছে ১৮৭১ সাল থেকে প্রতিবছর।
প্রতিটি দেশেই এই টুর্নামেন্টের নিয়ম একই। স্পেনে কোপা দেল রে, ইতালিতে কোপা ইতালিয়া, জার্মানিতে ডিএফবি-পোকাল, ফ্রান্সে কাপ দে লা লিগ নামে পরিচিত এই টুর্নামেন্ট। একটি দেশের প্রতিটি পেশাদার ক্লাব খেলার সুযোগ পায় বলে এখানে অঘটন ঘটার সুযোগও থাকে সবচেয়ে বেশি। ফলে প্রতিবছরই কোনো না কোনো অঘটন ঘটতে দেখা যায় এখানে।
সুপার কাপ ফাইনাল
নামেই বোঝা যাচ্ছে, এখানে শুধু ফাইনাল হয়। হ্যাঁ, শুধু একটা ম্যাচই হয় এই কাপে। আর ম্যাচটা হয় টপ ডিভিশনের লিগজয়ী দল বনাম লিগ কাপজয়ী দলের মধ্য। যেমন ইংল্যান্ডে এবার লিগ জিতেছে ম্যানচেস্টার সিটি আর লিগ কাপ জিতেছে লেস্টার সিটি। ফলে ইংল্যান্ডে সুপার কাপ ফাইনাল বা কমিউনিটি শিল্ড ফাইনাল হবে এই দুই দলের মধ্যে। এখন প্রশ্ন করতে পারো, একই দল দুইটি শিরোপাই জিতলে কী হবে? সে ক্ষেত্রে প্রিমিয়ার লিগ বা ইংলিশ লিগের দ্বিতীয়তে থাকা দল সুযোগ পাবে ফাইনালে। ইতালিয়ান সিরি ‘আ’য় আবার সুযোগ পায় লিগ কাপ বা কোপা ইতালিয়ার রানার্সআপ দল।
এখানে ব্যতিক্রম স্পেন। লা লিগা দুই বছর ধরে বদলে ফেলেছে সুপার কোপা দ্য ইস্পানার নিয়মাবলি। গত দুই মৌসুমে চার দল মুখোমুখি হয়েছে এই কাপে। এক লেগের সেমিফাইনাল ও ফাইনাল হয় নিরপেক্ষ ভেন্যুতে। নির্বাচিত চার দল হলো লিগজয়ী ও লিগ রানার্সআপ এবং লিগ কাপজয়ী ও রানার্স-আপ দল। যদি কোনো দল দুই জায়গায়ই থাকে, তবে বিবেচনায় আসে লিগের তৃতীয় ও চতুর্থ দল।
ইএফএল কাপ
ইংল্যান্ড ছাড়া আর কোনো দেশে দেখা যায় না এই কাপ। এখানে অংশ নিতে পারে ইংল্যান্ডের শীর্ষ চার ডিভিশনের ৯২টি দল। এই ৯২ দল কোয়ালিফাইং ও নকআউট পর্ব খেলে সবশেষে জিতে নেয় ইএফএল কাপ। মূলত ইংলিশ ফুটবলে শীর্ষ চার ডিভিশন হলো পেশাদার ডিভিশন। আর বাকিগুলো পুরোপুরি পেশাদার নয়। তাই এই কাপের আলাদা করে আয়োজন হয়। এই ট্রফি অফিশিয়ালি ট্রেবলের ক্ষেত্রে গণনা করা হয় না।
চ্যাম্পিয়নস লিগ
এবার আসা যাক ইউরোপের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ টুর্নামেন্ট প্রসঙ্গে। ইউরোপের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ র্টুনামেন্ট ইউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ। ইউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে মুখোমুখি হয় ইউরোপের প্রতিটি লিগের সেরা দলগুলো। সেরা ৩২ দল মুখোমুখি হয় ইউরোপের সেরা হওয়ার লড়াইয়ে। তাদের মধ্য থেকেই প্রথমে গ্রুপ ও পরে দুই পর্বের নকআউট ম্যাচ খেলে নির্ধারণ করা হয় বিজয়ী।
ইউরোপের শীর্ষ লিগগুলো থেকে পজিশনের ভিত্তিতে কোয়ালিফাই করে দলগুলো। প্রতিটি লিগে শীর্ষে থাকা দলগুলো সুযোগ পায় চ্যাম্পিয়নস লিগে। শীর্ষ চার লিগ অর্থাৎ ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ, লা লিগা, ইতালিয়ান সিরি ‘আ’ ও বুন্দেসলিগা থেকে সুযোগ পায় মোট চারটি করে দল। আগের বছরের লিগ টেবিলের শীর্ষে থাকা চার দল সরাসরি সুযোগ পায় চ্যাম্পিয়নস লিগে। অন্যদিকে পর্তুগাল ও ফ্রান্স থেকে সুযোগ পায় শীর্ষে থাকা তিনটি করে দল। বাদবাকি লিগ থেকে সুযোগ পায় দুইটি, একটি করে দল। একটি নির্দিষ্ট র্যাঙ্কিং বজায় রাখা হয় এ ক্ষেত্রে। সেই র্যাঙ্কিং অনুযায়ী কোন দেশ থেকে কতজন সরাসরি সুযোগ পাবে, তা নির্ভর করে। এ ছাড়া র্যাঙ্কিংয়ে নিচের সারির দেশের লিগজয়ী দলগুলো থেকে সুযোগ পায় কোয়ালিফিকেশন খেলার। কোয়ালিফাইং রাউন্ডে অন্যান্য দেশের সেরা দলের সঙ্গে জিতে তাদের আসতে হয় মূল টুর্নামেন্টে। এ ছাড়া আগের মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লিগ ও ইউরোপা লিগজয়ী দুই দলও সরাসরি সুযোগ পায় এই টুর্নামেন্টে। তারা যদি শীর্ষ ৪–এর বাইরেও থাকে, তবু ওয়াইল্ড কার্ড হিসেবে সুযোগ পায় খেলার।
৩২টি দলকে মোট ৮ গ্রুপে ভাগ করা হয় লটারির ভিত্তিতে, প্রতি গ্রুপে থাকে ৪টি দল। এ ক্ষেত্রে দেখা হয় যাতে একই লিগের কোনো দল একই গ্রুপ ও নকআউট পর্বের ম্যাচে মুখোমুখি না হয়। প্রতি গ্রুপের শীর্ষ দুই দল সুযোগ পায় পরবর্তী পর্বে। আর তৃতীয় দল চলে যায় ইউরোপের দ্বিতীয় সেরা প্রতিযোগিতা ইউরোপা লিগে। আর চতুর্থ দল বাদ পড়ে যায় ইউরোপ থেকে। এই ১৬ দল নকআউট পদ্ধতিতে একে অপরের মুখোমুখি হয় দুই লেগের ম্যাচে। হোম-অ্যাওয়ে পদ্ধতিতে ম্যাচে জয়ী দল থেকে সেরা ৮, শেষ ৪ ও সবশেষে ফাইনাল। যদি দুই লেগ শেষে দুই দলের গোলসংখ্যা সমান হয়, তবে জয়ী নির্ধারিত হয় অ্যাওয়ে গোলের হিসাবে। অর্থাৎ প্রতিপক্ষের মাটিতে সবচেয়ে বেশি গোল যে দিয়েছে, সেই যাবে পরের পর্বে। আর তাও সমান হলে ম্যাচ যায় অতিরিক্ত সময়ে। আর ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয় এক লেগে ও নিরপেক্ষ ভেন্যুতে। যেমন এবারের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল ম্যানচেস্টার সিটি ও চেলসি, খেলা হয়েছে পর্তুগালে। তবে অ্যাওয়ে গোলের নিয়মটি থাকছে না এ মৌসুম থেকে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী দুই লেগ শেষে দুই দলের গোলসংখ্যা সমান হলে খেলা গড়াবে অতিরিক্ত সময়ে।
ইউরোপা লিগ
এবার আসা যাক ইউরোপের দ্বিতীয় টুর্নামেন্ট ইউরোপা লিগে। এই লিগে সুযোগ পায় ইউরোপের দ্বিতীয় সারিতে থাকা দলগুলো। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের কথাই ধরো। এখান থেকে সরাসরি চারটি দল সুযোগ পায় চ্যাম্পিয়নস লিগে। কিন্তু পাঁচ ও ছয় নম্বর পজিশনের দল দুটো সুযোগ পায় ইউরোপা লিগে। এটা বলতে গেলে, যারা সরাসরি চ্যাম্পিয়নস লিগে সুযোগ পায় না, তাদের জন্যই এই টুর্নামেন্ট। চ্যাম্পিয়নস লিগ পজিশনের নিচের পজিশনই হলো ইউরোপা লিগ পজিশন। এ ছাড়া আগের মৌসুমে যারা লিগ কাপ জিতেছে, তারা সরাসরি সুযোগ পায় এই টুর্নামেন্টে। যদি লিগ কাপজয়ী দল চ্যাম্পিয়নস লিগ স্পটে থাকে, তবে সে ক্ষেত্রে বাতিল হয়ে যায় তারা। এ ছাড়া চ্যাম্পিয়নস লিগে যারা কোয়ালিফাইং রাউন্ড খেলে বাদ পড়ে যায়, তারা সরাসরি সুযোগ পায় এখানে। চ্যাম্পিয়নস লিগে গ্রুপ পর্বে তৃতীয় হয়ে বাদ পড়া দলও সুযোগ পায় ইউরোপা লিগে, তবে সেটা নকআউট পর্ব থেকে। এখানে চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বেশি দল খেলে, সেই সঙ্গে বেশি দেশ থেকেও সুযোগ পায়।
ইউরোপা লিগে প্রথমত সুযোগ পায় ৪৮ দল। সেখান থেকে ৪টি করে দল ১২ গ্রুপে ভাগ হয়ে শুরু করে গ্রুপ পর্বের খেলা। গ্রুপ পর্ব শেষে শীর্ষ দুই দল নিয়ে মোট ২৪ দল চলে যায় নকআউট পর্বে। আর চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে আসা ৮ দল মিলে হয় ৩২ দল। এই ৩২ দল নকআউট পদ্ধতিতে দুই লেগের ম্যাচ খেলে জিতে নেয় শিরোপা।
ইউরোপিয়ান সুপার কাপ ফাইনাল
এটাও লিগ সুপার কাপ ফাইনালের মতোই। তবে এখানে খেলে ইউরোপের সেরা দুই দল। অর্থাৎ চ্যাম্পিয়নস লিগ ও ইউরোপা লিগজয়ী দুই দল। সেই ম্যাচের বিজয়ী দল হয় সেই মৌসুমে ইউরোপের সেরা দল।
ক্লাব বিশ্বকাপ
ক্লাব বিশ্বকাপে সুযোগ পায় মোট সাতটি দল। ছয়টি দল থাকে প্রতিটি মহাদেশের সর্বোচ্চ প্রতিযোগিতার সেরা দল। এশিয়া থেকে এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগজয়ী দল, আফ্রিকা থেকে সিএএফ চ্যাম্পিয়নস লিগজয়ী দল, উত্তর আমেরিকা থেকে কনকাফ চ্যাম্পিয়নস লিগজয়ী দল ওশেনিয়া অঞ্চলের চ্যাম্পিয়ন ও স্বাগতিক দল, মোট পাঁচটি দল খেলে প্লে-অফ। তাদের থেকে মাত্র দুটি দল ওঠে সেমিফাইনালে। আর তাদের সঙ্গে যুক্ত হয় ইউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ ও কোপা লিবার্তোদোরেস জয়ী দল। মোট চারটি দল খেলে সেমিফাইনাল। আর সেখান থেকে ফাইনাল ও বিজয়ী।
ক্লাব বিশ্বকাপজয়ী দল হয় সেই মৌসুমে বিশ্বের সেরা দল।
ট্রেবল কী?
একটা দল যদি ভালো পারফরম্যান্স করে, তাহলে তিনটি প্রতিযোগিতায় নাম লেখাতে পারে। সেই তিনটি প্রতিযোগিতাই যদি জেতে, তাহলে তাকে বলা হয় ট্রেবল। (যেমন লা লিগায় বার্সেলোনা প্রতিবছর লা লিগা, কোপা দেল রে ও চ্যাম্পিয়নস লিগ খেলার সুযোগ পায়। তারা যদি তিনটি শিরোপাই জিততে পারে, তাহলে তারা অর্জন করবে ট্রেবল। এ পর্যন্ত বার্সার মোট দুটি ট্রেবল আছে।) আর ট্রেবল জিতলে আরও তিনটি শিরোপা জেতার দরজা খুলে যায়। সেগুলো হলো সুপার কাপ ফাইনাল, ইউরোপিয়ান সুপার কাপ ও ক্লাব বিশ্বকাপ। সেই তিনটি শিরোপাও জিতলে কমপ্লিট হয় এক মৌসুমের ছয় ট্রফি। এটাকে বলা হয় সেক্সটুপল। গত মৌসুমেই তা জিতে নিয়েছে বায়ার্ন মিউনিখ।
এই হলো ইউরোপিয়ান ফুটবলের কাপ সমাচার। তাহলে আর দেরি কেন? শামিল হয়ে যাও ইউরোপিয়ান ফুটবলের আনন্দে।