বিচিত্র বিশ্বকাপ

১৯৩০ সাল থেকে শুরু হওয়া ফিফা বিশ্বকাপ বিশ্বের অন্যতম পুরোনো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট। চার বছর পরপর হওয়া বিশ্বকাপে অংশ নেয় ৩২টি দেশ। কিন্তু বিশ্বকাপ–জ্বরে কাঁপে গোটা বিশ্ব। প্রায় এক মাস ধরে হওয়া এই টুর্নামেন্টের প্রায় প্রতিটি আসরেই ঘটে মনে রাখার মতো ঘটনা। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচের মধ্যেও এসব ঘটনা দর্শকদের মনে জায়গা পাওয়ার পাশাপাশি স্থান পায় ইতিহাসের পাতায়।

যুবরাজের হুমকিতে গোল বাতিল

১৯৮২ সালে স্পেনে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছিল কুয়েত। গ্রুপ পর্বে ফ্রান্সের বিপক্ষে ম্যাচে সেদিন খেলা দেখতে মাঠে উপস্থিত হয়েছিলেন কুয়েতের যুবরাজ শেখ ফাহাদ আল আহমেদ আল জাবের আল সাবাহ। ম্যাচের শেষ দিকে ফ্রান্সের একটি গোল নিয়ে আপত্তি তোলেন কুয়েতের ফুটবলাররা। তাঁদের দাবি, রেফারির বাঁশি শুনে খেলা বন্ধ করে দিয়েছিলেন তাঁরা। এর ফাঁকে ফ্রান্সের চতুর্থ গোল করেন গিরেস। তাই ওই গোলকে বাতিলের আবেদন জানান কুয়েতের খেলোয়াড়েরা। কিন্তু রেফারি তা মানতে নারাজ। কারণ, তিনি একবারও বাঁশি বাজাননি ওই সময়ে। বাঁশির শব্দ শোনা গিয়েছিল গ্যালারি থেকে। কুয়েতের ফুটবলারদের সঙ্গে রেফারির তর্কের একপর্যায়ে গ্যালারি থেকে মাঠে নেমে আসেন কুয়েতের যুবরাজ। হুমকি দেন ওই গোল বাতিল না করলে বন্ধই করে দেবেন ম্যাচ! হুমকির কাছে নতি স্বীকার করে সেই গোলটি বাতিল করেন রেফারি স্টুপার। শেষ পর্যন্ত আরও একটি গোল করে ম্যাচটি ৪-১ ব্যবধানে জিতে নেয় ফ্রান্স। কিন্তু ম্যাচের শেষে যুবরাজের হুমকিতে গোল বাতিল করার অপরাধে ম্যাচ রেফারিকে নিষিদ্ধ করে ফিফা।

গণভর্ৎসনা

প্রিয় দল ম্যাচ হেরে দেশে ফিরলে তাদের ঘিরে সমালোচনা, কটূক্তি ছোড়ার রেওয়াজ কমবেশি সব জায়গায়ই আছে। কিন্তু তাই বলে আয়োজন করে ভর্ৎসনা করা? অদ্ভুত এ কাণ্ড ঘটেছে উত্তর কোরিয়ায়। স্বৈরশাসনের কারণে দেশটিকে নিয়ে সমালোচনার কমতি নেই। ২০১০ বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বে সব কটি ম্যাচ হেরে দেশে ফেরার পর আরেক সমালোচনার জন্ম দেয় তারা। উত্তর কোরিয়ার ফুটবল দলকে নিয়ে একটি গণভর্ৎসনা আয়োজন করে সে দেশের সরকার। সেখানে প্রকাশ্যে ফুটবলার এবং কোচকে নিয়ে ভর্ৎসনা করতে থাকেন দেশটির ক্রীড়ামন্ত্রীসহ বিভিন্ন উচ্চপদস্থ নেতা-কর্মীরা। দোষ হিসেবে বলা হয়, দেশটির স্বৈরশাসক কিম জং-ইলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। প্রায় ছয় ঘণ্টা ধরে চলা অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার করা হয় সে দেশের টিভি চ্যানেলেও। পরে গুজব শোনা গেছে, চূড়ান্ত শাস্তি হিসেবে দলটির কোচকে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। যদিও ফিফা এর কোনো প্রমাণ পায়নি।

হ্যান্ড অব গড

বিশ্বকাপের অদ্ভুত ঘটনা লেখা হবে আর এটি থাকবে না, তা কি হয়! প্রয়াত আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি ম্যারাডোনার ওই কাণ্ড নিয়ে এখনো তর্কবিতর্ক-আলোচনা চলে মানুষের মধ্যে। ১৯৮৬-এর বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচ। দ্বিতীয়ার্ধের ছয় মিনিটের সময় আর্জেন্টিনার হোর্হে ভালদানোর দেওয়া পাসটি ডি-বক্সে ক্লিয়ার করতে যান ইংলিশ মিডফিল্ডার স্টিভ হজ। দুর্ভাগ্যজনকভাবে বল ক্লিয়ার না হয়ে ভেসে চলে আসে ডি-বক্সে, ম্যারাডোনাও ততক্ষণে সেখানে উপস্থিত। ওদিকে ভেসে আসা বল পাঞ্চ করতে এগিয়ে আসেন ইংল্যান্ডের গোলরক্ষক পিটার শিলটন। কিন্তু শিলটন বল ধরার আগেই ম্যারাডোনা এক টোকায় বলকে জালে জড়িয়ে মেতে ওঠেন উল্লাসে। ততক্ষণে ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়েরা উচ্চ স্বরে আবেদন করছেন হ্যান্ডবলের। পরে রিপ্লেতে দেখা যায়, গোলকিপার পাঞ্চ করার আগেই নিজের হাত দিয়ে বলটিকে জালে জড়ান ম্যারাডোনা। অদ্ভুতভাবে ব্যাপারটি বুঝতে পারেননি সেদিনের ম্যাচ রেফারি। রেফারির জিজ্ঞাসায় লাইনসম্যানও গোল নিশ্চিত করেছিলেন। বহু বছর পর নিজের আত্মজীবনীতে গোলটিকে হ্যান্ড অব গড বা ঈশ্বরের হাত থেকে হয়েছে বলে মজা করেন ম্যারাডোনা।

খেলোয়াড় ও কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ ট্রফি হাতে ফ্রান্সের দিদিয়ের দেশম

বিশ্বকাপ জেতার কারিগর স্বদেশি কোচরাই

অদ্ভুত হলেও সত্য যে এখন পর্যন্ত যে দলই বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, তাদের কোচরা ছিলেন ওই দেশেরই নাগরিক! ইউরোপে ট্রফি এসেছে ১২ বার। দক্ষিণ আমেরিকার দল বিশ্বকাপ জিতেছে ৯ বার। কোনোবারই এই ধারাবাহিকতার ব্যত্যয় ঘটেনি। এর মধ্যে খেলোয়াড় এবং কোচ হিসেবে আবার বিশ্বকাপ জিতেছেন তিনজন! তালিকায় প্রথম নাম ব্রাজিলের স্বর্ণযুগের লেফট উইঙ্গার মারিও জাগালো। খেলোয়াড় হিসেবে ১৯৫৮ এবং ১৯৬২ বিশ্বকাপ জয়ের পর, ব্রাজিলেরই কোচ হিসেবে দলটিকে বিশ্বকাপ উপহার দেন ১৯৭০ সালে। ১৯৭৪ সালে ক্রুইফের নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে পশ্চিম জার্মানির অধিনায়ক হিসেবে বিশ্বকাপ ট্রফি উঁচু করা বেকেনবাওয়ার তালিকায় দ্বিতীয় নাম। পরে ১৯৯০ সালে ম্যারাডোনার আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে পশ্চিম জার্মানিকে শিরোপা এনে দেন কোচ হিসেবে। সর্বশেষ এই গৌরবে ভাগ বসানো ব্যক্তিটির নাম ফ্রান্সের দিদিয়ের দেশম। গত ২০১৮ বিশ্বকাপে ফ্রান্স জাতীয় দলকে শিরোপা জেতানোর পেছনে ভূমিকা রেখেছেন হেড কোচ হিসেবে। এর আগে বেকেনবাওয়ারের মতোই ক্যাপ্টেন হিসেবে ফ্রান্সকে শিরোপা জিতিয়েছেন ১৯৯৮ সালে।

অক্টোপাস পলের ভবিষ্যদ্বাণী

ঘটনাটা ২০১০ বিশ্বকাপের। সেবার দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত আয়োজনে ভবিষ্যদ্বাণী করে পৃথিবীকে চমকে দেয় জার্মানির সি লাইফ সেন্টারে থাকা এক সামুদ্রিক অক্টোপাস। একটি নয়, দুটি নয়; একে একে আটটি ম্যাচের আগে সঠিক বিজয়ীর নাম ভবিষ্যদ্বাণী করে তাক লাগিয়ে দেয় সবাইকে। এর মধ্যে নকআউট রাউন্ডের ম্যাচগুলো যেমন ছিল, তেমনি ছিল নেদারল্যান্ডস বনাম স্পেনের ফাইনাল ম্যাচও! পল নামের অক্টোপাসটির সামনে দুই দলের পতাকাসংবলিত দুটো পাত্রে খাবার রাখা হতো, পল যে পাত্রটি থেকে খাবার খেত, তাদের বিজয়ী বলে অনুমান করা হতো। শুরুতে ২০০৮–এর ইউরোতে জার্মানির ৬টি ম্যাচের মধ্যে ৪টির সঠিক ভবিষ্যদ্বাণী করে আলোচনায় এসেছিল পল। পরে বিশ্বকাপে ১০০ ভাগ সাফল্য পাওয়ায় রাতারাতি তারকা খ্যাতি পেয়ে যায় পল। পলের অভাবনীয় সাফল্যের পর বিশ্বকাপ শুরু হলে প্রতিবারই এমন নানা প্রাণীকে কেন্দ্র করে ভবিষ্যৎ বলার প্রতিযোগিতা শুরু হয়। ২০১৪ বিশ্বকাপের জন্য হাতি নেলি, ২০১৮ বিশ্বকাপে উট শাহিন এবং অ্যাকিলিস নামের এক বিড়াল পরিচিতি পায় মানুষের কাছে। কিন্তু তারা কেউ পলের মতো নিখুঁত ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারেনি। ২০১০ সালের অক্টোবর মাসেই মারা যাওয়া সেই অক্টোপাস পলকে তাই কিংবদন্তির মতো মনে রেখেছে সবাই।

ঘাতক যখন আত্মঘাতী গোল

ফুটবল বিশ্বকাপ ঘিরে হওয়া বিভিন্ন ঘটনার মধ্যে এটিই বোধ হয় সবচেয়ে দুঃখজনক এবং অনাকাঙ্ক্ষিত। ১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপে কলম্বিয়াকে ঘিরে দেশটির জনগণের প্রত্যাশার পারদ ছিল অনেক ওপরে। বিশ্বকাপের আগে হওয়া ২৬ ম্যাচের মধ্যে মাত্র একটিতে হেরেছিল তারা। বাছাইপর্বেও মাত্র ২ গোল হজম করে বিশ্বকাপে জায়গা করে নেয় দক্ষিণ আমেরিকার দেশটি। সমর্থকদের বাড়তি প্রত্যাশা তাই একেবারে অযৌক্তিক নয়। কিন্তু বিশ্বকাপের মূল মঞ্চে প্রথম ম্যাচেই ৩-১ গোলের ব্যবধানে বাজেভাবে হেরে যায় তারা। পরের রাউন্ডে যেতে গ্রুপ পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচে জয় পাওয়াটা তাই অবশ্যকর্তব্য হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে সেই ম্যাচের ৩৪ মিনিটে আত্মঘাতী গোল দিয়ে বসেন কলম্বিয়ান ডিফেন্ডার আন্দ্রেস এস্কোবার। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি ২-১ গোলে হেরে কলম্বিয়া বিদায় নেয় বিশ্বকাপ থেকে।

আত্মঘাতী গোল করায় আন্দ্রেস এস্কোবার তখন পরিণত হন জাতীয় খলনায়কে। দেশে ফেরার পর তাঁকে উদ্দেশ করে কটূক্তি, অপমানসূচক বক্তব্য, এমনকি মৃত্যুর হুমকি পর্যন্তও আসতে থাকে! আপনজনেরা তাঁকে পরামর্শ দেন কিছুদিন গা ঢাকা দিয়ে থাকার। আন্দ্রেস সেটা কানে তোলেননি একবারও। ১ জুলাই বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটিয়ে বাসায় ফিরছিলেন তিনি। পার্কিং লটে তাঁকে একা পেয়ে একদল যুবক তাঁকে ঘিরে ধরে। প্রশ্ন করতে থাকে বিশ্বকাপের আন্দ্রেসের আত্মঘাতী গোলটি নিয়ে। প্রশ্ন থেকে কথা–কাটাকাটি, সেখান থেকে ধস্তাধস্তি, তারপর গুলিবর্ষণ। ছয় ছয়টা গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয় আন্দ্রেস এস্কোবারের। তখনো বিশ্বকাপ চলছে যুক্তরাষ্ট্রে! পরে কলম্বিয়ান মাদক ব্যবসায়ীর এক দেহরক্ষী হামবার্তো ক্যাস্ত্রো মুনোজ তাঁকে হত্যার দায় স্বীকার করেন। বিচার শেষে ৪৩ বছরের সাজা হয় মুনোজের। কিন্তু অবাক করা ব্যাপার, মাত্র ১১ বছর জেল খেটেই মুক্তি পেয়ে যান মুনোজ!

সৌভাগ্য বয়ে আনা কুকুর

১৯৬২ সালের বিশ্বকাপ। কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিল মুখোমুখি হয় ইংল্যান্ডের। সেবার বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল চিলিতে। বাগানের শহর নামে পরিচিত ভিনা দেল মারের স্টেডিও সুসিলি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে একটা পর্যায়ে খেলা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন রেফারি, মাঠে এক অতিথির আগমনে। তিনি আর কেউ নন, কালো রঙের এক কুকুর।

মাঠে প্রবেশ করে সারমেয় মহাশয় প্রথমে ইংল্যান্ডের গোলরক্ষক রোরিং স্প্রিংগেটকে পাশ কাটিয়ে ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি গারিঞ্চাকে ডজ দিয়ে ঘুরতে থাকে মাঠে।

কেউ যখন তাকে ধরতে পারছে না, তখন এগিয়ে আসেন ইংল্যান্ডের ফরোয়ার্ড জিমি গ্রিভস। ফুটবলের মাঠে গোল দিতে দক্ষ টটেনহাম হটস্পার ক্লাবের এই খেলোয়াড় কুকুরপ্রেমী হিসেবেও বেশ পরিচিত ছিলেন।

জিমি গ্রিভস কুকুরটির কাছে গিয়ে আদর করার মধ্য দিয়ে তাকে ধরে কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেন। তবে তিনি যখন কুকুরটিকে আদর করছিলেন, তখন দুষ্ট কুকুর গ্রিভসের গায়ে মূত্র বিসর্জন করে দেয়।

গ্রিভস পরে উল্লেখ করেছেন, ‘সে সময় জার্সি থাকত একটাই। ফলে সেই জার্সি বদলানোর আর কোনো সুযোগ ছিল না। ফলে গা থেকে বাজে একটা গন্ধ বের হচ্ছিল। এই গন্ধের কারণে ব্রাজিলের রক্ষণভাগের খেলোয়াড়েরা আর আমার কাছে ভেড়েনি।’

ঘটনার এখানেই শেষ নয়। এই কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিল ৩-১ গোলে পরাজিত করে ইংল্যান্ডকে। ব্রাজিলের এই ৩ গোলের মধ্যে গারিঞ্চা করেন ২টি। খেলা শেষে দেখা যায় কুকুরের মালিকানার কোনো দাবিদার নেই। তখন ব্রাজিল দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে এই কুকুর নিয়ে কাড়াকাড়ি পড়ে যায়। তাঁরা মনে করেন, এই কুকুর তাঁদের জন্য সৌভাগ্য বয়ে এনেছে। কুকুরটিকে কে রাখবেন, সেটা নিয়ে লটারি হয়। লটারিতে ওঠে গারিঞ্চার নাম। সে বছর ফাইনালে চেকোস্লোভাকিয়াকে ৩-১ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ জয় করে ব্রাজিল। সব জায়গায় কুকুরটিকে নিয়ে যায় ব্রাজিল দল। তারা কুকুরটির নামও রাখে ‘বি’। এটি হচ্ছে ‘বিকাম্পেনাওতো’র সংক্ষিপ্ত রূপ। যার মানে দ্বিতীয় শিরোপা জয়। স্বদেশে ফিরে আসার সময় গারিঞ্চা কুকুরটিকে সঙ্গে করে নিয়ে আসেন তাঁর বাসায়। মৃত্যু পর্যন্ত কুকুরটি তাঁর সঙ্গেই বাস করত। ব্রাজিলের নাগরিকেরা সে সময় জিমি গ্রিভসকে অভিহিত করেন এভাবে, তিনি সেই খেলোয়াড়, যিনি গারিঞ্চার কুকুরটিকে ধরে দিয়েছিলেন।