প্যারিস অলিম্পিকে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি

আধুনিক ক্যামেরা সিস্টেমের ফলে অ্যাথলেটদের শরীরে সেন্সর ব্যবহার না করেই তাঁদের গতিবিধি ও পারফরম্যান্স সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে প্যারিস অলিম্পিকে।ছবি: অলিম্পিক্স ডটকম

প্রতি চার বছরে একবার বসে প্যারিস অলিম্পিকের আসর। পৃথিবীর সেরা ক্রীড়াবিদেরা এক জায়গায় জড়ো হন নিজেদের প্রতিভা ও শক্তির প্রদর্শনী করতে। এটিই অলিম্পিক ক্রীড়াঙ্গনের সবচেয়ে বড় উৎসব। এই অলিম্পিকে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করা হচ্ছে।

প্যারিস অলিম্পিকে প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছে আলিবাবা, ডেলয়েট, ইন্টেল এবং ওমেগা। অলিম্পিক ব্রডকাস্টিং সার্ভিস (ওবিএস) ও ওমেগা একত্র হয়ে অলিম্পিক গেমসের প্রতিটি ইভেন্টের জন্য নির্দিষ্ট এআই মডেল ব্যবহার করছে। এর সহযোগিতায় রয়েছে ইন্টেলের গেটি এআই সফটওয়্যার টুলস। এই অলিম্পিক পরিচালনা করছে ‘অলিম্পিক মুভমেন্টের ওয়ার্ল্ডওয়াইড ইনফরমেশন টেকনোলজি পার্টনার অ্যাটোস’ নামক একটি প্রযুক্তি কোম্পানি, যাদের সঙ্গে আরও ১৫টি প্রযুক্তি কোম্পানির প্রায় ২ হাজারের বেশি বিশেষজ্ঞ নিয়ে একটি দল গঠন করা হয়েছে। তাদের প্রধান লক্ষ্য হলো অলিম্পিক ও প্যারালিম্পিক গেমসকে বিশ্বের সেরা ক্রীড়া উৎসব হিসেবে পরিচালিত করা। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য তারা নিরাপত্তা, পরিচালনা এবং সবাইকে যুক্ত করার দিকে বিশেষভাবে নজর রাখছে।

আরও পড়ুন
স্ক্যান ‘ও’ ভিশন মারিয়া নামের ক্যামেরা প্রতি সেকেন্ডে ২ হাজার ৪৮ পিক্সেলের ৪০ হাজার ফ্রেম ধরতে পারবে।
ছবি: অলিম্পিক্স ডটকম

প্যারিস অলিম্পিকে মোট ৩২৯টি ইভেন্টে প্রায় ১০ হাজার ৫০০ অ্যাথলেট প্রতিযোগিতা করবেন। হাজার হাজার দর্শক সরাসরি স্টেডিয়ামে এবং আরও কোটি কোটি দর্শক বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই আয়োজনের সাক্ষী হচ্ছেন। প্যারিস অলিম্পিকে এবারও টাইমকিপারের দায়িত্বপালন করছে স্ক্যান ‘ও’ ভিশন মারিয়া নামের ক্যামেরা। ওমেগা কোম্পানির এই নতুন ক্যামেরা সিস্টেম ফিনিস লাইনে প্রতি সেকেন্ডে ২ হাজার ৪৮ পিক্সেলের ৪০ হাজার ফ্রেম ধরতে পারবে। এটি অ্যাথলেটিকস, ঘোড়দৌড়, জিমন্যাস্টিকস, গ্রেহাউন্ড রেস, রোয়িং, সাইক্লিং, স্পিড স্কেটিংসহ বিভিন্ন ধরনের দ্রুতগতির খেলার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।

ওমেগা ক্যামেরার উচ্চসংবেদনশীল সেন্সর কম আলোতেও উচ্চ রেজল্যুশনের ছবি তুলতে পারে। এর ফলে দর্শকেরা অলিম্পিক দেখতে পারছেন ৮কে রেজল্যুশনে। এর আগে এই উচ্চ রেজল্যুশনে কখনো অলিম্পিক দেখা যায়নি। এই আধুনিক ক্যামেরা সিস্টেমের ফলে অ্যাথলেটদের শরীরে সেন্সর ব্যবহার না করেই তাঁদের গতিবিধি ও পারফরম্যান্স সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে পারে।

আরও পড়ুন

এই অলিম্পিকে দর্শকের জন্য এআই–নির্ভর একটি অনুবাদক যন্ত্র স্থাপন করা হয়েছে। এই যন্ত্র ১৬টি ভাষায় তাৎক্ষণিক অনুবাদ করে শোনানোর ক্ষমতা রাখে। যার ফলে বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকে আসা দর্শকেরা সহজেই খেলার ধারাভাষ্য এবং স্টেডিয়ামের ঘোষণাগুলো বুঝতে পারেন। প্যারিসের সিন নদী ও এর আশপাশে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্যামসাং-এর গ্যালাক্সি এস ২৪ আলট্রা স্মার্টফোন ব্যবহার করে ৫জি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

ওমেগার কোয়ান্টাম ঘড়ি অতি সুক্ষ্ম সময় মাপতে পারে।
ছবি: অলিম্পিক্স ডটকম

এ ছাড়া সুইমিং পুলের দুই পাশের দেয়ালে ওমেগা টাচ প্যানেল, স্বয়ংক্রিয়ভাবে অ্যাথলেটদের থ্রিডি মডেলের মাধ্যমে ফলাফল নির্ণয়, এইচডি স্কোরবোর্ড, কোয়ান্টাম টাইমারের মাধ্যমে সময় নির্ণয়, দর্শনার্থীদের ইভেন্টের সময় জানানোর জন্য বিশেষ অ্যাপ, অ্যাথলেটদের ব্যবহৃত সরঞ্জামে অত্যাধুনিক সেন্সর, অ্যাথলেটদের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষায় উন্নত প্রযুক্তির পোশাক প্যারিস অলিম্পিককে প্রযুক্তির দিক থেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে।

সূত্র: অলিম্পিক্স ডটকম, সিলিকন অ্যাঞ্জেল

আরও পড়ুন