ফুটবল
সৌদি আরবকে ফিরিয়ে দিয়েছেন যাঁরা
একে একে ইউরোপের সেরা ফুটবলাররা দল বেঁধে যোগ দিয়েছেন সৌদি আরবে। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, নেইমার থেকে শুরু করে বেনজেমা, মানে, কান্তে, এমনকি মিত্রোভিচ, জোটার মতো সম্ভাবনাময় খেলোয়াড়ও পাড়ি জমিয়েছেন সৌদির ট্রেনে। কিন্তু সবার গল্পটা এক রকম নয়, কিছু খেলোয়াড় আছেন, যাঁরা নিশ্চিন্তে ফিরিয়ে দিয়েছেন সৌদির প্রস্তাব, লোভনীয় প্রস্তাব। সৌদিকে ফিরিয়ে দেওয়া তারকাদের নিয়েই আজকের লেখা
লিওনেল মেসি
নামটা স্বাভাবিকভাবে চলেই আসে। একসময় সবাই ধরেই নিয়েছিলেন, মেসির পরবর্তী গন্তব্য হতে চলেছে সৌদি আরব। কিন্তু আল–হিলালের ৪০০ মিলিয়ন ইউরোর অফার ফিরিয়ে দিয়েছেন মেসি। শেষ বয়সে রোনালদোর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়, নিজের জীবন আর ফুটবলকে পূর্ণাঙ্গভাবে উপভোগ করার জন্যই হয়তো মেসি বেছে নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রকে।
জোসে মোরিনহো
না, কোনো খেলোয়াড় নয়। সৌদিকে ‘না’ বলে ইউরোপে থেকে যাওয়া সবচেয়ে বড় তারকার নাম জোসে মোরিনহো। শুধু খেলোয়াড় নয়, বড় বড় কোচ এনে লিগকে অন্য মাত্রায় নিতে চেয়েছিল সৌদি আরব। কিন্তু ‘স্পেশাল ওয়ান’কে মানানো তো এত সহজ নয়। স্বয়ং সৌদি ক্লাব আল-আহলির সভাপতি ইতালিতে এসেও তাঁর মন গলাতে পারেননি। বছরে প্রায় ২০ মিলিয়ন ইউরোর প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে মোরিনহো রয়ে গিয়েছেন রোমাতেই।
জেমি ভার্ডি
তালিকায় জেমি ভার্ডির নামটা একটু বিশেষভাবেই নিতে হবে। গত মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগ থেকে অবনমিত হয়ে গিয়েছে লেস্টার সিটি। লেস্টারের বড় বড় তারকা যখন নতুন দল খুঁজে ফিরছেন, তখন জেমি ভার্ডি বরাবরের মতোই রয়ে গিয়েছেন সেখানে। লক্ষ্য, দলকে আরেকবার খাদের কিনারা থেকে তুলে আনা। ইউরোপের শীর্ষ লিগ থেকে ছিটকে পড়েও টাকার পেছনে ছুটছেন না তিনি, যে কারণে ফিরিয়ে দিয়েছেন সৌদি আরবের লোভনীয় প্রস্তাব। সৌদি ক্লাব আল-খালিজের প্রস্তাব চোখ বুলিয়েও দেখেননি তিনি।
আলভেরো মোরাতা
দলবদলের মৌসুমের হটকেক হিসেবে বেশ সুনাম আছে স্প্যানিশ এই স্ট্রাইকারের। রিয়াল, চেলসি ও জুভেন্টাসের মতো হেভিওয়েট দলে খেলা মোরাতা এখনো স্পেনের আক্রমণভাগের ভরসার নাম। তাঁকে কেনার চেষ্টা করেছিল সৌদি ক্লাব আল-তাওয়ান। বছরে ৪৩ মিলিয়ন ইউরোর প্রস্তাবও ছিল তাঁর জন্য। কিন্তু তাদের ‘না’ করে শৈশবের ক্লাব আতলেতিকো মাদ্রিদেই থিতু হয়েছেন মোরাতা।
লুকা মদরিচ
ব্যালন ডি’অরজয়ী তারকাদের প্রতি একটু বিশেষ নজরই রাখছে সৌদি ক্লাবগুলো। লিওনেল মেসিকে ভেড়াতে ব্যর্থ হওয়ার পর আল-হিলালের নজর পড়েছিল আরেক ‘এলএম১০’ লুকা মদরিচের ওপর। ৩ বছরে ১৮০ মিলিয়ন ইউরোর প্রস্তাব ছিল মদরিচের জন্য। মদরিচ তা শুধু প্রত্যাখ্যানই করেননি, সঙ্গে রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে এক বছরের জন্য চুক্তি বাড়িয়েছেনও। ৩৮ বছর বয়সে এসেও ইউরোপের বাঘা বাঘা দলের বিপক্ষে নিজের সেরা খেলাটা দেখিয়ে যাচ্ছেন মদরিচ। ইউরোপিয়ান জৌলুসে আরও কয়েক বছর গা ভাসালে তাঁকে না নিশ্চয় করবে না কেউ।
আনহেল ডি মারিয়া
জুভেন্টাসের সঙ্গে চুক্তি শেষ হওয়ায় ফ্রি এজেন্ট হিসেবেও বসে ছিলেন বিশ্বকাপজয়ী তারকা ডি মারিয়া। সে সুযোগ কাজে লাগাতে চাইছিল সৌদি ক্লাবগুলো। বেশ কয়েকটি ক্লাব থেকে প্রস্তাব এলেও ডি মারিয়া ফিরিয়ে দিয়েছেন সবাইকে; বরং তিনি ফিরেছেন নিজের পুরোনো ক্লাব বেনফিকায়। সৌদির বিশাল চুক্তি ফেলে নামমাত্র বেতনে বেনফিকা মাতাচ্ছেন ডি মারিয়া।
সার্জিও রামোস
সাবেক সতীর্থের মতো সার্জিও রামোসের গল্পটাও একই সুতায় গাঁথা। পিএসজির সঙ্গে নতুন করে চুক্তিতে মন ছিল না সার্জিও রামোসের। সৌদি ক্লাব আল-ইতিহাদ ও আল-নাসর সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছিল রামোসকে দলে ভেড়ানোর। মৌসুমে ৩০ মিলিয়ন ইউরোর চুক্তিও সামনে এনেছিল। কিন্তু রামোসের লক্ষ্য ছিল ইউরোপ, টাকার কাছে নিজেকে সঁপে দেওয়ার সময় এখনো আসেনি তাঁর। এ কারণে বছরে মাত্র ১ মিলিয়ন ইউরো বেতনে যোগ দিয়েছেন শৈশবের ক্লাব সেভিয়ায়।