ক্রিকেটের ইতিহাসে কতবার রানআউটের হ্যাটট্রিক হয়েছে
ক্রিকেট মাঠে কত কিছুই না ঘটে! রানের বন্যা, উইকেটের পতন, শ্বাসরুদ্ধকর ক্যাচ—সবই খেলার অংশ। তবে সম্প্রতি আইপিএলের একটি ম্যাচে কিছুটা বিরল ঘটনা ঘটেছে। দিল্লি ক্যাপিটালস ও মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের মধ্যকার ম্যাচের শেষ ওভারে দেখা গেল এক অবিশ্বাস্য রানআউটের হ্যাটট্রিক!
দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলা স্টেডিয়ামে ১৩ এপ্রিল মুম্বাই ইন্ডিয়ানস ও দিল্লি ক্যাপিটালস খেলতে নামে। মুম্বাই প্রথমে ব্যাট করে ২০৫ রান করে। এরপর দিল্লি ব্যাটিংয়ে নেমে ১৮ ওভারে তোলে ১৮৩ রান। জয়ের জন্য প্রয়োজন ১২ বলে ২২ রান। হাতে আছে ৩ উইকেট। ১৯ নম্বর ওভারে বল হাতে আসেন যশপ্রীত বুমরা। নিজের শেষ ওভারের প্রথম ৩ বলে দেন ৮ রান। জয়ের জন্য শেষ ৯ বলে দিল্লির প্রয়োজন ছিল ১৪ রান। ঠিক তখনই যশপ্রীত বুমরার পরপর তিন বলে তিনজন আউট হলেন। আশুতোষ শর্মা, কুলদীপ যাদব ও মোহিত শর্মা। প্রত্যেকে রানআউট হয়েছেন। আর এতেই শেষ হয়ে যায় ম্যাচের সব নাটকীয়তা। প্রথম দুটি রানআউট টিভি রিপ্লেতে চুলচেরা বিশ্লেষণের পর নিশ্চিত করা গেলেও শেষটি ছিল সরাসরি হিট। মিড–অন থেকে মিচেল স্যান্টনারের বুলেট গতির সরাসরি থ্রো লাগে স্ট্যাম্পে।
আইপিএলের ইতিহাসে এমন হ্যাটট্রিক প্রথম। তবে টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটের অন্যান্য ম্যাচে এর আগে এমন ঘটনার নজির রয়েছে। যদিও সব ম্যাচের বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। এর মধ্যে আছে বাংলাদেশের এক ম্যাচ।
এমন ঘটনা প্রথম ঘটে ২০১১ সালে পাকিস্তানের করাচিতে। ফয়সালাবাদ উলভস ও মুলতান টাইগার্সের ম্যাচে শেষ ওভারে চারটি রানআউট হয়েছিল! এরপর ২০১৪ সালে ভারতের সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে আসামের বিরুদ্ধে ত্রিপুরার ম্যাচেও রানআউটের হ্যাটট্রিক দেখা যায়। ২০১৯ সালে পাকিস্তানের কাবুলে আমো শার্কস ও স্পিন ঘর টাইগার্সের ম্যাচেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। আর সবশেষ ২০২৪ সালে এমন কীর্তি ঘটে বাংলাদেশে। মাত্র ৪ মাস আগে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে জাতীয় ক্রিকেট লিগের খেলায় বরিশাল ডিভিশনের শেষ ৩ ব্যাটসম্যানকে রানআউট করেছিলেন খুলনা ডিভিশনের ক্যাপ্টেন নুরুল হাসান। পরপর তিন বলে আউট হন কামরুল ইসলাম, তানভীর ইসলাম ও রুয়েল মিয়া। সেই ম্যাচে খুলনা ১ রানের নাটকীয় জয় পায়।
আগের হ্যাটট্রিক রানআউটগুলো ছিল ঘরোয়া লিগের। কিন্তু এই প্রথম আইপিএলের মতো এত বড় মঞ্চে এমন নাটকীয় সমাপ্তি হলো। ক্রিকেট যে সত্যিই অনিশ্চয়তার খেলা, তারই প্রমাণ এসব ম্যাচ।