এরিক টেন হাগ ঘোষণা দিয়েছিলেন, প্রিমিয়ার লিগে তিনি নতুন এক যুগের সূচনা করবেন। পেপ গার্দিওলা, ইয়ুর্গেন ক্লপদের দিন ফুরিয়ে এসেছে, নতুন যুগটা হবে তাঁর। প্রিমিয়ার লিগ দেখবে ডাচ বিপ্লব! টেন হাগের ডাচ বিপ্লব থেমে গেছে মাঝপথেই। ২০২৪-২৫ মৌসুমে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের প্রথম কোচ হিসেবে বরখাস্ত হয়েছেন টেন হাগ। আর তাঁকে বিদেয় করেই দেরি করেনি ইউনাইটেড, সঙ্গে সঙ্গে ধরেছে লিসবনের বিমান। লক্ষ্য যেভাবেই হোক, রুবেন আমোরিমকে কোচ হিসেবে নিয়ে আসা। কে এই রুবেন আমোরিম? তাঁকে দলে ভেড়ানোর জন্য কেন এত মরিয়া ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড?
রুবেন আমোরিম নামটা অনেকের কাছে বেশ নতুন। তবে ফুটবলপ্রেমীদের কাছে গত কয়েক মৌসুমে নামটা বেশ পরিচিত হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে পর্তুগিজ ফুটবল মুগ্ধ হয়ে আছে আমোরিম–জাদুতে। প্রিমিয়ার লিগের বড় বড় দলবদলের পেছনে হাতটা যে তাঁরই। বয়স মাত্র ৩৯। আরও ভেঙে বললে, যে বয়সে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো পর্তুগালের জার্সিতে বাইসাইকেল কিকে গোল করছেন, ঠিক সেই বয়সেই ইউনাইটেডের দায়িত্ব নিতে চলেছেন আমোরিম। এককালে সতীর্থও ছিলেন, দলে তাঁর ডাকনাম ছিল ‘কবি’! পর্তুগিজ কবির নতুন দায়িত্ব পথভ্রষ্ট ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে আবারও ট্র্যাকে ফেরানোর।
আমোরিম কোচিং–জগতে পা রেখেছেন বছর ছয়েক হতে চলল। বয়স কিংবা অভিজ্ঞতা, দুই দিক দিয়েই আমোরিম বেশ তরুণ। অবশ্য সময়টা এখন তরুণদেরই। কোচিং–জগতে নিয়মিত আবির্ভাব ঘটছে তরুণ কোচদের, হেভিওয়েটদের সঙ্গে টেক্কাও দিচ্ছেন নিয়মিত। বেশির ভাগ তরুণ কোচই যেখানে বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার শেষে পা রাখেন কোচিং–জগতে, আমোরিম সে তুলনায় একটু ব্যতিক্রম। খেলোয়াড়ি জীবনে বড় কিছু হতে পারেননি। খেলোয়াড়ি জীবনের প্রায় পুরোটাই কেটেছে পর্তুগালে, জাতীয় দলে খেলেছেন মাত্র ১৪টি ম্যাচ। মাত্র ৩২ বছর বয়সেই খেলোয়াড়ি জীবনের ইতি টানেন আমোরিম। ২০১৭ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বুট তুলে রাখেন তিনি। কোচ হওয়ার ইচ্ছা ছিল আগে থেকেই, যে কারণে সময় নষ্ট না করে যোগ দেন কোচিং একাডেমিতে। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই আসে কোচিং অফার। পর্তুগিজ তৃতীয় বিভাগের দল কাসা পিয়ার দায়িত্ব নেন আমোরিম। কোচিং ক্যারিয়ারের শুরুটাই হয় পরপর দুই ম্যাচে হার দিয়ে। কে জানতো এই দুই হারই হয়ে উঠবে আমোরিমের শাপেবর?
প্রথম দুই ম্যাচ হেরে আমোরিম ঘোষণা দেন, পরের ম্যাচ থেকে বদলে যাবে খেলার ধরন। আর ফলাফলে যদি কোনো পরিবর্তন না আসে, তবে নিজেই পদত্যাগপত্র পৌঁছে দেবেন ক্লাব মালিকের কাছে। আমোরিম তৃতীয় ম্যাচ শুরু করেন নতুন এক ট্যাকটিকসে, থ্রি ব্যাক ফরমেশনে। কাজে লাগে ডিফেন্সে তিনজন খেলানোর টোটকা। ৪-০ গলের জয় দিয়ে শেষ হয় তৃতীয় ম্যাচ। এর পর থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি আমোরিমকে। টানা আট ম্যাচ জিতে দলকে নিয়ে আসেন শীর্ষে। কিন্তু তখনই বাদ সাধে পর্তুগিজ ফুটবল ফেডারেশন। কোচ হিসেবে নিয়োগ পেলেও আনুষ্ঠানিক কাগজপত্র ছিল না তাঁর। যে কারণে নিষিদ্ধ হতে হয় তাঁকে, ৬ পয়েন্ট কাটা হয় দলের। উপায়ান্তর না দেখে ছেড়ে দেন চাকরি। কিন্তু কাসা পিয়া পথভ্রষ্ট হয়নি, সে মৌসুমেই লিগ জিতে উত্তীর্ণ হয়েছিল দ্বিতীয় বিভাগে।
ছয় মাস বিরতি নিয়ে আমোরিম যোগ দেন ক্লাব ব্রাগার রিজার্ভ দলের কোচ হিসেবে। ৮ ম্যাচে ৭ জয় আর মূল দলের ভরাডুবিতে রাতারাতি পদোন্নতি হয় তাঁর। চার মাসের দায়িত্ব নেন মূল দলের। ব্রাগার ডাগআউটে বেশিদিন থাকা হয়নি তাঁর, তবে যতটুকু সময় ছিলেন, আলো ছড়িয়েছেন নিজের মতো করে। বিশেষ করে তাঁর ‘থ্রি অ্যাট দ্য ব্যাক’ ট্যাকটিকস আলোড়ন তুলেছিল পর্তুগালজুড়ে। তিন সপ্তাহের মাথায় পোর্তোকে হারিয়ে জিতে নেন কোচিং ক্যারিয়ারের প্রথম শিরোপা। ৬৫ বছর পর বেনফিকার মাঠে গিয়ে বেনফিকাকে হারানোর ইতিহাসও তৈরি হয় আমোরিমের হাত ধরে। আমোরিমের অধীনে যখন বড় কিছু করার স্বপ্ন দেখছে ক্লাব ব্রাগা, তখনই হাত বাড়ায় স্পোর্টিং লিসবন। ২০ মিলিয়ন ইউরো বাইআউট ক্লজ আর ১০ মিলিয়ন ইউরো বেতনে স্পোর্টিং লিসবনের ডাগআউটে যোগ দেন আমোরিম।
পর্তুগালের সর্বোচ্চ লিগে কোচিং করানোর অভিজ্ঞতা মাত্র দুই মাসের। সর্বসাকল্যে কোচিং অভিজ্ঞতা টেনেটুনে এক বছর। এমন এক কোচের জন্য ২০ মিলিয়ন ইউরো খরচ করা? সঙ্গে আবার বছর বছর ১০ মিলিয়ন ইউরো বেতন? অনেকের কাছেই স্পোর্টিং লিসবনের এমন কাণ্ড হাস্যকর ঠেকেছিল। সত্যি বলতে স্পোর্টিংয়ের পিঠ তত দিনে দেয়ালে ঠেকে গিয়েছিল। দুই বছরে দলের দায়িত্ব নিয়েছেন পাঁচজন; শিরোপা দূরে থাক ইউরোপে খেলতেই হিমশিম অবস্থা তাদের। দুই দশকের কাছাকাছি সময় ধরে নেই লিগ শিরোপা। পর্তুগালের ত্রিমুখী রাইভালরি ‘ওস ত্রেস গ্রান্দেস’ থেকে তত দিনে অনেক দূর ছিটকে গেছে তারা। বেনফিকা আর পোর্তোর লড়াইয়ে স্পোর্টিং যেন শুধু দর্শক! এমন দুর্দিনে আমোরিমে যেন পুরো ভরসা ঢেলে দিয়েছিল স্পোর্টিং বোর্ড।
গুরুদায়িত্ব হাতে নিতেই হানা দিল করোনা। এক সপ্তাহের নোটিশে বন্ধ হয়ে গেল ইউরোপিয়ান ফুটবল। তবে করোনার বিরতি শাপেবর হয়ে এল আমোরিমের জীবনে। এত বড় ক্লাবের দায়িত্ব, সেই সঙ্গে চাপ; সবটাই শিথিল হয়ে এল সময়ের সঙ্গে সঙ্গে। খেলোয়াড়দের নিয়ে পরীক্ষা-নীরিক্ষা, নিজেকে ঝালিয়ে নেওয়া; সবকিছুতেই বাড়তি সময় পেয়েছিলেন আমোরিম। করোনার পর যখন ক্লাব ফুটবল আবারও মাঠে ফিরল, তত দিনে অনেকটাই শাণিত হয়ে উঠেছেন আমোরিম। সেই শাণিত আমোরিমের দেখা মিলেছে মাঠে। চতুর্থ অবস্থানে থেকে শেষ হয়েছিল স্পোর্টিংয়ের করোনাক্রান্ত মৌসুম।
নতুন মৌসুমে আমোরিম পরিচয় করিয়ে দেন একঝাঁক তরুণ তারকার সঙ্গে। পেদ্রো গনকালভেস, ব্রুনো তাবাতা, নুনো সান্তোস, পেদ্রো পোরো, গনসালো ইনাকিও, টিয়াগো টমাস, ডানিয়েল ব্রাগাঙ্কা। তরুণ রুবেন আমোরিমের ডাগআউটে তখন কচিকাঁচার মেলা। ২৫ না ছোঁয়া তারকাদের ওপরে ভর করেই আঁকেন নতুন ছক। আমোরিমের ছকটা বেশ পরিচিত। ৩-৪-৩ ফরমেশনে খেলাতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন তিনি। স্পোর্টিংয়ে তুরুপের তাস ছিলেন এই তরুণ তারকারা। হাই পজেশন আর ফ্লেক্সিবল অ্যাটাকিং প্লের জন্য প্রয়োজন প্রচুর স্ট্যামিনা। প্রতিটি পজিশনেই তরুণ খেলোয়াড় থাকার কারণে পজেশনভিত্তিক খেলাটা সহজ হয়ে উঠেছিল আমোরিমের জন্য। তেমনই ম্যাচের মধ্যে টুকটাক ফরমেশন চেঞ্জ করা, ট্যাকটিকস এদিক-সেদিক করাও বেশ সহজ ছিল তাঁর জন্য। প্রচণ্ড প্রেস রেসিস্ট্যান্ট দলের সামনে প্রতিরোধ গড়ার মতো খেলা খেলতে পারেনি কেউই। টানা ৩১ ম্যাচ অপরাজিত থেকে ১৮ বছর পর লিগ শিরোপা উচিয়ে ধরে স্পোর্টিং লিসবন। আর এই পুরো অর্জনের কারিগর ৩৬ বছর বয়সী রুবেন আমোরিম!
কোচিং জীবনের প্রথম পুরো মৌসুমের দায়িত্ব নিয়েই লিগ শিরোপা ছিল আমোরিমের অগ্নিপরীক্ষা। সেই অগ্নিপরীক্ষায় ভালোভাবেই উতরে গেলেন। পরের মৌসুমে দ্বিতীয়, তার পরের মৌসুমে চতুর্থ। একদিকে নিজেদের তরুণ তারকাদের যেমন উচ্চমূল্যে বিক্রি করছেন, তেমনই তুলে আনছেন নিত্যনতুন তারকা। নুনো মেন্দেস, হোয়াও পালহিনহা, ম্যাথিউস নুনেসরা যেমন চড়া মূল্যে দল ছেড়েছেন। তেমনই দলে যোগ দিয়েছেন ম্যানুয়েল উগার্তে, মার্কাস এডওয়ার্ডস, জেরি জাস্ট, ত্রিনকাওয়ের মতো তরুণ প্রতিভা। তবে আমোরিমকে ইউরোপিয়ান হেভিওয়েটদের নজরে এনেছে গত মৌসুমের পারফরম্যান্স।
আমোরিমকে মৌসুম শুরু করতে হয়েছিল একঝাঁক তরুণকে ছাড়াই। আগের মৌসুমে জায়গা করে নিতে পারেননি চ্যাম্পিয়নস লিগে। ঝাঁকে ঝাঁকে স্পোর্টিংয়ের তরুণ তারকাদের দলে ভিড়িয়েছে ইউরোপের হেভিওয়েট দলগুলো। যাঁদের নিয়ে দলের ভিত গড়েছিলেন সেই পেদ্রো পোরো, ম্যানুয়েল উগার্তে, টিয়াগো টমাস, ইউসুফ শেরমিতি স্পোর্টিং ছেড়ে ভিড়েছেন ইউরোপের বড় বড় দলে। সে অনুযায়ী বলার মতো দলবদল ছিল মাত্র দুটো, কভেন্ট্রি সিটি থেকে ২১ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে ভিক্টর গাইকোরেস আর লিস থেকে ১৮ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে মোর্তেন হুলমুন্দ। কিন্তু সবাই বেমালুম ভুলেই গিয়েছিল, স্বয়ং জোসে মরিনিওর শিষ্য তিনি। তাঁর সেরা পারফরম্যান্সটা বেরিয়ে আসে চাপের মধ্যে থেকেই।
নতুন প্রতিভাদের নিয়ে নতুন করে দল সাজালেন আমোরিম। চিরাচরিত ৩-৪-৩ ফরমেশনকে একটু ঢেলে সাজিয়ে তৈরি করলেন ৩-৪-২-১। ডিফেন্সিভ বিল্ডআপে ঠিক রেখে উইংব্যাকদের ঠেলে দিলেন সামনে। দুই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার ত্রিনকাও আর গনকালভেস সারাক্ষণ তাতিয়ে রাখেন প্রতিপক্ষের ডিফেন্সকে। আর সেই সুযোগটাই নেন ভিক্টর গাইকোরেস। প্রচণ্ড পরিমাণ প্রেস রেসিস্ট্যান্ট হওয়ায় সহজেই ডিফেন্স থেকে বিল্ডআপ করতে পারে স্পোর্টিং। যে কারণে মুহূর্তেই খেলার গতি কমাতে বা বাড়াতে খুব একটা বেগ পেতে হয় না তাঁদের। আমোরিমের ফ্লুইড ট্যাকটিকসের কারণে বিল্ডআপ করে আক্রমণ করা এবং কাউন্টার অ্যাটাক, দুটোতেই সমান পারদর্শী হয়ে উঠেছে স্পোর্টিং। গত মৌসুমে পর্তুগিজ লিগে সবচেয়ে বেশি বিল্ডআপ অ্যাটাক (১২৬) এবং ডিরেক্ট অ্যাটাক (৭৪), দুটোই তাদের দখলে। ৬ ফুট ২ ইঞ্চির স্ট্রাইকার গাইকোরেসের আগমনের পর স্পোর্টিং নজর দিয়েছে ডিরেক্ট আক্রমণে। আর এই ফ্লুইড আক্রমণই স্পোর্টিংকে এনে দিয়েছে তাদের বিশতম লিগ শিরোপা।
চার বছরে দ্বিতীয় লিগ শিরোপা জয়ের নৈপথ্যের কারিগর স্পোর্টিংয়ের আক্রমণত্রয়ী। গাইকোরেস-ত্রিনকাও-গনকালভেস—এই ত্রয়ী যেকোনো ডিফেন্সকে ধরাশায়ী করতে সমর্থ। পুরো মৌসুমেই ছিল তার ছাপ। গাইকোরেসের ঝুলিতে ৪৩ গোলের পাশাপাশি ছিল ১৫ অ্যাসিস্ট। গনকালভেসের ১৮ গোল, ১৭ অ্যাসিস্ট আর ত্রিনকাওয়ের ১০ গোল ১০ অ্যাসিস্ট স্পোর্টিংকে পৌঁছে দিয়েছে অনন্য উচ্চতায়। আমোরিমের কাজটা অনেকটাই সহজ করে দিয়েছেন তিনজন।
গত মৌসুমের পারফরম্যান্স দেখেই তাঁকে দলে ভেড়ানোর জন্য উঠেপড়ে লেগেছিল প্রিমিয়ার লিগের দলগুলো। ইয়ুর্গেন ক্লপের যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে ভাবা হচ্ছিল তাঁকে। কিন্তু তিনজন ডিফেন্ডার খেলানোর কৌশলে অটল থাকায় পিছু হটে লিভারপুল। গত এপ্রিলে লন্ডনে এসে ওয়েস্ট হাম ইউনাইটেডের সঙ্গে কথাবার্তা পর্যন্ত বলেছেন। কিন্তু সে চুক্তিও ভেঙে গেছে মাঝপথে। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডও খোঁজখবর নিয়েছিল, কিন্তু এফএ কাপের শিরোপা বাঁচিয়ে দেয় টেন হাগের চুক্তি। তখনই সিদ্ধান্ত নেন, অন্তত আরও এক মৌসুমের জন্য স্পোর্টিংয়ে থাকছেন আমোরিম।
তিন মাস যেতে না যেতেই বদলাতে বাধ্য হলেন সে সিদ্ধান্ত। টেন হাগকে বরখাস্ত করেই তাঁকে দলে নেওয়ার জন্য উঠেপড়ে লাগে ইউনাইটেড। অবশেষে ইউনাইটেডের অনুরোধ আমলে নেন আমোরিম। তাঁর দেওয়া সব চুক্তি মেনেই তাঁকে ওল্ড ট্রাফোর্ডে এনেছে ইউনাইটেড। আগের কোচিং প্যানেলের কেউ থাকছেন না আমোরিমের সঙ্গে। বরং নিজের আস্থাভাজন পাঁচ সহকারী কোচকে নিয়েই ইউনাইটেডে ভিড়েছেন তিনি। একে তো মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে স্পোর্টিং থেকে ছাড়িয়ে আনা, সঙ্গে টেন হাগকে বরখাস্ত করার খরচ। বিশাল খরচের বোঝা মাথায় নিয়ে যে আমোরিমকে দলে ভেড়াল ইউনাইটেড, সেই আস্থা রাখতে পারবেন তো তিনি?