ম্যারাথন কীভাবে এল

ম্যারাথন কী?

এখন মনে হয় সবাই জানে ম্যারাথন একটা দৌড়ের নাম। না, ম্যারাথন কেবল একটা দৌড়ের নাম নয়। তাহলে ম্যারাথন কী? এটা একটা যুদ্ধের নাম! হ্যাঁ, ইতিহাসে এই নামে একটা যুদ্ধ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। গ্রিসের ম্যারাথন নামের জায়গাতেই ম্যারাথন যুদ্ধ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তবে কী ম্যারাথন একটা জায়গার নাম! জায়গার নাম ম্যারাথন হলেও, ম্যারাথনের আসল মানে এটি নয়। তাহলে ম্যারাথন কী?

আসলে ম্যারাথন একধরনের ভেষজ উদ্ভিদ। এই উদ্ভিদ বিশ্বের প্রায় অনেক দেশে পাওয়া যায়। আমরাও তাকে চিনি। আমাদের দেশে এটি মৌরি নামে পরিচিত। গ্রিক ভাষায় ম্যারাথন মানে হলো যে এলাকায় অনেক মৌরি গাছ পাওয়া যায়।

স্পিরিডন লুইস। যিনি ছিলেন গ্রিসের এক ক্রীড়াবিদ। এই প্রতিযোগিতায় তিনি কোনো পদক পাননি, তাঁর বদলে পেয়েছিলেন একটি কাপ।
আরও পড়ুন

অলিম্পিকের ম্যারাথন দৌড়ের সঙ্গে এসব ম্যারাথনের সম্পর্ক কী

ম্যারাথন দৌড়ের সঙ্গে সব ম্যারাথনের সম্পর্ক আছে। ম্যারাথন যেখানে জন্মাত, সেই উদ্ভিদের নামে জায়গার নাম হয় ম্যারাথন (এই নামে এখন গ্রিসের একটি শহর রয়েছে)। আর এই এলাকায় যুদ্ধ হওয়ায় যুদ্ধের নাম হয় ম্যারাথনের যুদ্ধ। আর এই ম্যারাথনের যুদ্ধে জীবন বাজি রেখে যে বীর এথেন্সের নাগরিকদের কাছে বিজয়ের বার্তা বয়ে আনেন, তাঁর স্মরণে যে দৌড়, সেটারই নাম ম্যারাথন দৌড়।

যিশুখ্রিষ্টের জন্মের ৪৯০ বছর আগে ম্যারাথন নামের সেই জায়গায় পারস্য বনাম গ্রিসের এথেন্সের মধ্যে যুদ্ধ হয়েছিল। সে সময়কার পারস্য মানে আজকের ইরান ছিল শক্তিশালী এক রাষ্ট্র। পারস্য এথেন্স নগর রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। এথেন্সের নাগরিকদের ধারণা ছিল, শক্তিশালী পারস্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধে গ্রিস যদি জিততে যদি না পারে, তাহলে এথেন্সের ওপর পারসিকদের এক ভয়াবহ অত্যাচার নেমে আসবে।

দুই দিনে সে প্রায় ২৪০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে স্পার্টায় এই বার্তা পৌঁছে দিয়ে আবার সে একই সমান দূরত্ব পাড়ি দিয়ে দৌড়ে এথেন্সে ফিরে আসেন। এসেই আবার ৪০ কিলোমিটার বা ২৫ মাইল দূরে অবস্থিত ম্যারাথন নামের জায়গার উদ্দেশ্যে দৌড়ানো শুরু করেন।
আরও পড়ুন

সে সময় গ্রিসের নগরগুলো আলাদা আলাদা রাজ্যে বিভক্ত ছিল। পারস্যের সেনারা যখন এথেন্সের দিকে এগিয়ে আসছিল, তখন গ্রিসের আরেক নগরী ও রাজ্য স্পার্টার কাছে সাহায্যের আবেদন জানানোর প্রয়োজন হয়ে পড়ল।

আর এই কাজের দায়িত্ব এসে পড়লো ফিডিপাইডিসের কাঁধে। ফিডিপাইডিস ছিলেন পেশায় একজন হেরাল্ড বা হেমেরোড্রোম। এর মানে যাঁর কাজ দৌড়ে গিয়ে অন্যের কাছে বার্তা পৌঁছে দেওয়া।

যখন পারস্যের সেনারা এথেন্সের দিকে এগিয়ে আসছিল তখন ফিডিপাইডিস সাহায্যের বার্তা নিয়ে স্পার্টার উদ্দেশ্যে দৌড়াতে শুরু করলেন। দুই দিনে সে প্রায় ২৪০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে স্পার্টায় এই বার্তা পৌঁছে দিয়ে আবার সে একই সমান দূরত্ব পাড়ি দিয়ে দৌড়ে এথেন্সে ফিরে আসেন। এসেই আবার ৪০ কিলোমিটার বা ২৫ মাইল দূরে অবস্থিত ম্যারাথন নামের জায়গার উদ্দেশ্যে দৌড়ানো শুরু করেন। সেখানে পৌঁছে আবার তিনি এথেন্সের দিকে দৌড়াতে থাকেন। এথেন্সে ফিরেই তিনি সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে একটা কথাই উচ্চারণ করে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন। তাঁর শেষ উচ্চারিত শব্দটি ছিল ‘নিকোমেন’। যার মানে ‘আমরা জিতেছি’। গ্রিসের ইতিহাসবিদেরা ফিডিপাইডিসের এই আত্মত্যাগের কাহিনি অমর করে রেখেছে।

আরও পড়ুন

অলিম্পিকে কবে থেকে শুরু ম্যারাথন রেস

অলিম্পিকের খেলা হলেও ম্যারাথন কিন্তু প্রাচীন অলিম্পিকে ছিল না। আধুনিক অলিম্পিকে ম্যারাথন রেস অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আর এটা শুরু করা হয় প্রথম আধুনিক অলিম্পিকে ১৮৯৬ সালে।

সেই রেস শুরু হয়েছিল কোথায়

প্রথম অলিম্পিকের ম্যারাথন দৌড়টি শুরু হয়েছিল ঠিক সেখান থেকে, যেখান থেকে এথেন্সের উদ্দেশ্যে জয়ের বার্তা নিয়ে দৌড় শুরু করেছিলেন ফিডিপাইডিস।

আরও পড়ুন

প্রথম আধুনিক অলিম্পিক ম্যারাথনে বিজয়ী হয়েছিল কে

স্পিরিডন লুইস। যিনি ছিলেন গ্রিসের এক ক্রীড়াবিদ। এই প্রতিযোগিতায় তিনি কোনো পদক পাননি, তাঁর বদলে পেয়েছিলেন একটি কাপ। সেটির নাম ছিল ব্রেয়াল কাপ। রুপা দিয়ে তৈরি কাপটি লুইসকে উপহার দিয়েছিলেন ফরাসি নাগরিক মিশেল ব্রেয়ল।

এই মিশেল ব্রেয়াল কে ছিলেন

মিশেল ব্রেয়াল ছিলেন সেই ব্যক্তি, যিনি চেয়েছিলেন অলিম্পিকে ম্যারাথন দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে। অলিম্পিকে ম্যারাথন দৌড়ের অন্তর্ভুক্তর জন্য চেষ্টা চালিয়ে প্রথম অলিম্পিকে তিনি সফল হন, আর তাঁর এই প্রচেষ্টা কারণে আজ অলিম্পিকসহ সারা বিশ্বে ম্যারাথন দৌড়ের আয়োজন করা হয়।

আরও পড়ুন