অলিম্পিকের অজানা ৭ তথ্য

নতুন অলিম্পিক রেকর্ড গড়েছেন কেটি লেডেকিরয়টার্স

সদ্য শেষ হলো গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকের ৩৩তম আসর। ২৬ জুলাই থেকে ১১ আগস্ট ফ্রান্সের প্যারিসে আয়োজিত হয় এই আসর। এ বছর ৪০টি করে স্বর্ণপদক নিয়ে যৌথভাবে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। তবে পদকের তালিকায় চীনের চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ৪০ স্বর্ণপদকের পাশাপাশি ৪৪টি ব্রোঞ্জপদকসহ যুক্তরাষ্ট্র ১২৬টি পদক জিতেছে। অন্যদিকে ৪০ স্বর্ণপদকের সঙ্গে ২৭ ব্রোঞ্জপদকসহ ৯১টি পদক পেয়েছে চীন। আর ২০ স্বর্ণপদকসহ ৪৫ পদক নিয়ে তৃতীয় হয়েছে জাপান।

এবার চলতি বছরের অলিম্পিক ছেড়ে সম্পূর্ণ অলিম্পিক গেমসের নিয়ে আলোচনা করা যাক। এখানে তোমাদের এমন সাতটি তথ্য জানাব, যার বেশির ভাগই হয়তো তোমাদের জানা নেই। হিসাব করে দেখো তো, এখান থেকে কয়টি তথ্য তুমি আগে জানতে?

প্রথম অলিম্পিক শুরু হয় খ্রিষ্টপূর্ব ৭৭৬ অব্দে

প্রাচীন রাষ্ট্র - বর্তমানের গ্রীসের এথেন্স
ছবি: ব্রিটানিকা ডটকম

প্রাচীন গ্রিকদের একটি উৎসব হিসেবে শুরু হয় প্রথম অলিম্পিক। সে অলিম্পিক বর্তমান সময়ের মতো ছিল না। মূলত কুস্তি, বক্সিং, রথের দৌড়, জ্যাভলিন ও উচ্চ লাফের মতো ছয়টি খেলা দিয়ে শুরু হয় অলিম্পিক। সেটা যিশুখ্রিষ্টের জন্মের ৭৭৬ বছর আগে। তখন অলিম্পিক হতো প্রায় ছয় মাস। তবে আধুনিক অলিম্পিক শুরু ১৮৯৬ সালে এথেন্সে।

২. দেড় হাজার বছর পর অলিম্পিক

ব্যারন পিয়ের দ্য কুবার্তিন

৩৯৩ খ্রিষ্টাব্দে অলিম্পিক খেলা বন্ধ ছিল। কারণ, রোমান শাসক সম্রাট প্রথম থিওডোসিয়াস ধর্মীয় কারণে অলিম্পিক নিষিদ্ধ করেন। অলিম্পিককে পৌত্তলিক উৎসব মনে করতেন তিনি। তার পর থেকে দেড় হাজার বছর আর কোনো অলিম্পিক আয়োজিত হয়নি। এরপর ১৮৯৬ সালে ব্যারন পিয়ের দ্য কুবার্তিন আবার অলিম্পিক চালু করেন। যা আজও আধুনিক অলিম্পিক নামে চলছে।

আরও পড়ুন

অলিম্পিকে জ্বলে মশাল

ড. মুহাম্মদ ইউনূস ২০১৬ সালে ব্রাজিলের রিও অলিম্পিকে মশাল বহন করেছিলেন

প্রাচীনকাল থেকেই অলিম্পিকে মশাল জ্বালানোর রীতি রয়েছে। তখন যত দিন অলিম্পিক চলত, মশাল জ্বালিয়ে রাখা হতো তত দিন। আধুনিক অলিম্পিকে প্রথম মশাল জ্বালানো হয় ১৯২৮ সালে। এই মশাল হাতে ছোটেন বিশ্বের নামীদামি বিখ্যাত সব ব্যক্তি। তুমি জেনে অবাক হবে, বাংলাদেশের একমাত্র নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস ২০১৬ সালে ব্রাজিলের রিও অলিম্পিকে মশাল বহন করেছিলেন।

আরও পড়ুন

মাত্র ১৪টি দেশ নিয়ে গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক

অস্ট্রেলিয়া, চিলি, যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশ প্রথম থেকেই অলিম্পিকের সঙ্গে ছিল
এএফপি

প্রথম গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক অনুষ্ঠিত হয় ১৮৯৬ সালে। সেবার মাত্র ১৪টি দেশ এ খেলায় অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে ১১টি ছিল ইউরোপীয় দেশ। অস্ট্রেলিয়া, চিলি, যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশ প্রথম থেকেই অলিম্পিকের সঙ্গে ছিল। বর্তমানে অলিম্পিকে ২০০টির বেশি দেশ অংশগ্রহণ করে। সদ্য শেষ হওয়া অলিম্পিকে ২০৬টি দেশের ১০ হাজার ৭১৪ জন প্রতিযোগী অংশ নেন।

আরও পড়ুন

অলিম্পিকের প্রতীকে আছে সব দেশের রং

পাঁচটি বৃত্ত পাঁচটি মহাদেশকে বোঝায়
এএফপি

১৯১৩ সালে প্রথম অলিম্পিকের প্রতীক ডিজাইন করা হয়। অলিম্পিকে চিরচেনা পাঁচটি বৃত্ত তো তোমরা সবাই দেখেছ। এগুলো দিয়ে তখনকার পাঁচটি মহাদেশকে বোঝানো হতো। মহাদেশগুলো হলো এশিয়া, আফ্রিকা, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ও ইউরোপ। পাঁচ মহাদেশের জন্য পাঁচটি রং বাছাই করেন আধুনিক অলিম্পিকের জনক ব্যারন পিয়ের দ্য কুবার্তিন। রংগুলো হলো নীল, হলুদ, কালো, সবুজ ও লাল। এই প্রতীক বিশ্বের সব অ্যাথলেটকে একত্রিত হওয়ার প্রতিনিধিত্ব করে।

অলিম্পিকে ছিল হরিণ শিকার ও ডুয়েল প্রতিযোগিতা

হরিণ
ফাইল ছবি: সংগৃহীত

অলিম্পিক শুরু হওয়ার পর অনেক পরিবর্তন হয়েছে। কিছু খেলা যেমন বাদ হয়ে গেছে, তেমনি অনেক খেলাই যোগ হয়েছে অলিম্পিকে। মূলত অলিম্পিকে কোন খেলা থাকবে, তা নিয়ে ভোটাভুটি হয়। সে রকম ভোটে বাদ হয়ে গেছে হরিণ শিকার খেলা ও পিস্তল ডুয়েলিং। দুটি পিস্তল দিয়ে দুজনের যুদ্ধকে ডুয়েলিং বলে। আগে গলফ ও রাগবি খেলাও ভোটের মাধ্যমে বাদ দেওয়া হয়েছিল। তবে এখন আবার এ দুটি খেলা চালু হয়েছে।

আরও পড়ুন

অলিম্পিকে অংশগ্রহণ করতেন লেখক, শিল্পী ও স্থপতিরা

প্রতীকী ছবি

১৯২১ থেকে ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত অলিম্পিকে চিত্রশিল্পী, স্থপতি, লেখক ও সংগীতশিল্পীদের দেখা যেত। শিল্পকর্ম তৈরী করে চিত্রশিল্পীরা প্রতিযোগিতায় আসতেন। লেখক নিয়ে আসতেন তাঁর লেখার পাণ্ডুলিপি। তবে ১৯৪৮ সালে এসব বন্ধ হয়ে যায়।

সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক কিডস ও অলিম্পিকস ডটকম

আরও পড়ুন