কেমন গেল শীর্ষ দশের শীতকালীন দলবদল

শেষ হয়ে গেল শীতকালীন দলবদলের মৌসুম। অর্ধেক মৌসুম শেষে প্রিমিয়ার লিগের দলগুলো নেমেছিল দলের খুটিনাটি সমস্যা আর দূর্বলতা ঢাকতে। টাকার বস্তা হাতে রীতিমত ঝড় তুলেছে দলবদলের বাজারে। ৩৭৫ মিলিয়ন ইউরো খরচ করে নিজেদের কেমন সংস্কার করল দলগুলো? প্রথম পর্বে দেখে নেওয়া যাক শীর্ষ ১০ দলের দলবদল।

লিভারপুল

প্রথম মৌসুমেই পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে। তাও আবার যোজন যোজন ব্যবধানে। সবমিলিয়ে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা আর্নে স্লট তাঁর কম্বিনেশন ভাঙ্গতে চাননি। যে কারণে মৌসুম শুরু করেছিলেন যে দল দিয়ে, ঠিক সেই দলই রেখেছেন বাকি মৌসুমের জন্য। বড় কোনো দলবদল হয়নি তাদের।

আর্সেনাল

এই মৌসুমটা যেন গানার্সদের হোঁচট খাওয়ার মৌসুম। শুরু থেকে যতবারই লিগ টেবিলের শীর্ষে ওঠার সুযোগ এসেছে, হেলায় সে সুযোগ হারিয়েছে নিজেরা। অনেকেই ভেবেছিলেন, শীতকালীন দলবদলের মৌসুমে হয়ত নতুন কারও দিকে নজর দেবে তারা। অ্যাস্টন ভিলার ওলে ওয়াটকিনস ও বায়ার্ন মিউনিখের ম্যাথিস তেলের দিকে হাত বাড়ালেও শেষ পর্যন্ত কেনেনি তারা। টেবিলের শীর্ষ দলের মতো তারো শীতকালীন বাজার ছেড়েছে দলবদল ছাড়াই।

নটিংহাম ফরেস্ট

মৌসুমের শুরু থেকে একের পর এক চমক দেখিয়ে যাচ্ছে নটিংহাম ফরেস্ট। কোচ নুনো এসপারিতো সান্তোর হাত ধরে চ্যাম্পিয়নস লিগ নিশ্চিত করার পথে তারা। লিভারপুল পা হড়কালে শিরোপার জন্যও চ্যালেঞ্জ করতে পিছপা হবে না। এমন সময় দলবদলের বাজারে বেশ সাবধানে পা ফেলতে হতো তাদের। সেটাই করেছে তারা। একাদশের জন্য কাউকে না কিনলেও নিজেদের বেঞ্চে আরেকজন গোলরক্ষক যোগ করেছে তারা। যদিও ওয়েস্ট হামের কাছে হারাতে হয়েছে জেমস ওয়ার্ড-প্রাউসকে। নিজেদের খেলোয়াড়কে ধার থেকে ফিরিয়ে নিয়েছে ওয়েস্ট হ্যাম। 

আরও পড়ুন

চেলসি

দুর্দান্ত শুরুর পর মাঝপথে এসে খেই হারিয়েছে চেলসি। নতুন কোচের অধীনে একটা সময় শিরোপার স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিল ব্লুজরা। কিন্তু টানা হারে সে স্বপ্ন ক্ষীণ হয়ে গিয়েছে অনেকটাই। তাই শীতকালীন দলবদলের মৌসুমে নিজেদের রক্ষণকে ঠিকঠাক করেছে তারা। মৌসুমের শুরুতে ধারে ছেড়ে দেওয়া ট্রেভহ চেলোবাহকে আবারও ফেরত এনেছে তারা। অন্যদিকে বেশ কিছু তারকাকে পাঠিয়েছে ধারে। 

ম্যানচেস্টার সিটি

এবারের দলবদলের মৌসুমে সবচেয়ে বেশি সরব ছিল ম্যান সিটি। লিগের দৌড় থেকে অনেক দূরে তারা, শেষদিনে নিশ্চিত করেছে চ্যাম্পিয়নস লিগের প্লে-অফ। চোটের কারণে দলের মূল খেলোয়াড়েরা মাঠের বাইরে অনেকদিনের জন্য। সবমিলিয়ে ভালো কিছু করতে চাইলে দলে নতুন সংযোজন প্রয়োজন ছিল সিটির। গার্দিওলা সেটাই করেছেন এই মৌসুমে। 

নিউক্যাসল ইউনাইটেড 

দলবদলের বাজারের নিউক্যাসলও ছিল বেশ শান্ত। দলে নতুন কাউকে না ভেড়ালেও ছেটে ফেলেছে দুইজনকে। সামনে কারাবাও কাপ আর ইউরোপে সুযোগ পাওয়ার লড়াই। তার আগে বড় কোনো নামের পেছনে না ছোটা হিতে বিপরীত হতে পারে নিউক্যাসলের জন্য। 

আরও পড়ুন

বোর্নমাউথ

মৌসুমের শুরু থেকে একের পর এক চমক দেখিয়ে চলেছে বোর্নমাউথ। শিরোপার লড়াইয়ে থাকা দলগুলোকে রীতিমত নাকানিচুবানি খাইয়েছে ‘চেরিস’রা। চোটের কারণে লম্বা সময়ের জন্য মাঠের বাইরে চলে গিয়েছেন আক্রমণভাগের দুই তারকা ইভানিলসন ও ইনেস উনাল। কিন্তু বহু চেষ্টা করেও আক্রমণভাগে কাউকে ভেড়াতে পারেনি তারা। বরং কোচ আন্দনি ইরাওলাকে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে দুই ডিফেন্ডার নিয়ে। 

অ্যাস্টন ভিলা

আজ থেকে পাঁচ-ছয় বছর আগে কেউ যদি বলত, মার্কাস রাশফোর্ড আর মার্কো এসেন্সিও দুই উইং কাঁপাবেন একত্রে- প্রতিপক্ষের যে কেউ প্রার্থনা শুরু করে দিতো। তবে সেটা অ্যাস্টন ভিলার জার্সিতে শুনলে যে কেউ ফেটে পরতেন অট্টহাসিতে। শীতকালীন দলবদলে এমনই কাঁপন ধরিয়েছে উনাই এমেরির দল। চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোতে জায়গা করে নিয়েছে সরাসরি। ডনিয়েল মালেন, আন্দ্রেস গার্সিয়ার সঙ্গে ধারে দলে যোগ দিয়েছেন মার্কাস রাশফোর্ড ও মার্কো এসেন্সিও। তবে সবকিছুকে ছাড়িয়ে গিয়েছে জন ডুরানের দলবদল। কলম্বিয়ান এই তারকাকে সৌদি ক্লাব আল-নাসরের কাছে বিক্রি করেছে ভিলা। এই মৌসুমের সবচেয়ে চমকপ্রদ দলবদল হিসেবে উপরের দিকে থাকবে এটি। 

ফুলহাম

ইউরোপের জন্য হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করা ফুলহাম এবারের দলবদলের মৌসুমে ছিল একেবারে নিশ্চুপ। ক্রয়-বিক্রয়ের খাতা খুলেইনি মার্কো সিলভার দল। 

ব্রাইটন অ্যান্ড হোভ আলবিয়ন

গত বছরটা ছিল ব্রাইটনের টাকা ওড়ানোর বছর। ইউরোপের হেভিওয়েট দলদের টেক্কা দিয়ে খরচ করেছে তারা। নিজেদের ফর্মটা ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা তাদের। এই মৌসুমও তার ব্যতিক্রম নয়। দল ঠিকঠাক করতে দেদারসে খরচ করেছে তারা। 

টেবিলের নিচের সারিতে থাকা ১০ দলের দলবদলের গল্প থাকছে পরের পর্বে!

আরও পড়ুন