আধুনিক অলিম্পিক শুরু হওয়ার পর অলিম্পিকে বিভিন্ন ধরনের খেলা অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল, যেগুলো পরে বাদ দেওয়া হয়। পরে আবার অনেক নতুন নতুন খেলা অলিম্পিকে যুক্ত করা হয়। যেমন এ বছর ২০২৪ প্যারিস অলিম্পিকের নতুন খেলা ব্রেকিং। অতীতে অলিম্পিকের ইভেন্ট ছিল এখন আর নেই, এ রকম কয়েকটি খেলা হচ্ছে রশি টানাটানি, এক হাতে ভারোত্তোলন, ৬০ মিটারের দৌড়, ক্রিকেট ইত্যাদি।
এই প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের আলাদাভাবে কোনো মেডেল দেওয়া হয়নি। তবে প্রতিযোগিতার পুরস্কার হিসেবে ২০ হাজার ফ্রা পুরস্কার প্রদান করা হয়। প্রতিযোগী প্রথম চারজন নিজেদের মধ্যে এই অর্থ ভাগাভাগি করে নেয়।
তবে ১৯০০ সালের অলিম্পিকে এমন এক ইভেন্ট ছিল, যা অন্য সব খেলা থেকে আলাদা। এবারের মতো সেবারও অলিম্পিকের আসর বসেছিল ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে। সেটা ছিল অলিম্পিকের দ্বিতীয় আসর। সেবার অলিম্পিক গেমস ঠিক নিজের নামে শুরু হয়নি, এটা ছিল ১৯০০ ওয়ার্ল্ড এক্সপো নামে এক মেলার অংশ। আর এটা ছিল অলিম্পিকের একমাত্র খেলা, যাতে সরাসরি কোনো প্রাণীকে হত্যার জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল। অলিম্পিকের এ খেলাটিকে ট্রেস এরিসট্রোকেট বা ‘অত্যন্ত অভিজাতদের’খেলা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এই খেলাটির নাম ছিল পায়রা শিকার।
সার্কেল দ্য বুয় দ্য বুলঞ্জ নামের এলাকায় এই ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হয় । এটি দুটি ভাগে বিভক্ত ছিল, যার একটির নাম ছিল সেন্টেনারি গ্রান্ড প্রাইজ আর অপরটি ওয়ার্ল্ড এক্সপো গ্রান্ড প্রাইজ। প্রথমটি শুরু হয় ১৯ জুন। এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় ১৬৬ জন। আর ১৯০০ এক্সপো গ্রান্ড প্রাইজ নামের কবুতর মারা প্রতিযোগিতা শুরু হয় ২৫, ২৬ ও ২৭ জুন। এটাই ছিল অলিম্পিকের মূল প্রতিযোগিতার একটি ইভেন্ট। এতে ৫৪ জন অংশ নেয়।
এই প্রতিযোগিতায় একজন প্রতিযোগীর ২৭ মিটার সামনে পরপর ছয়টি কবুতর ছেড়ে দেওয়া হয়। কেউ এই ছয়টির মধ্যে দুটি কবুতর মারতে ব্যর্থ হলেই সে প্রতিযোগিতা থেকে বাদ পড়ে যেত।
এই প্রতিযোগিতায় ২১টি কবুতর মেরে বেলজিয়ামের লিও দ লুদন প্রথম হন। তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা ফ্রান্সের মওরিওচি ফুউরে ২০টি কবুতর মারেন। তালিকার তৃতীয় স্থানে থাকা অস্ট্রেলিয়ার ডোনাল্ড ম্যাকেন্টিশ মারেন ১৮টি, একই সমান কবুতর মেরে ক্রিটেলেনডেন্ট চতুর্থ স্থান অধিকার করেন।
এই প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের আলাদাভাবে কোনো মেডেল দেওয়া হয়নি। তবে প্রতিযোগিতার পুরস্কার হিসেবে ২০ হাজার ফ্রা পুরস্কার প্রদান করা হয়। প্রতিযোগী প্রথম চারজন নিজেদের মধ্যে এই অর্থ ভাগাভাগি করে নেয়।
প্রতিযোগিতা শেষে পুরো এলাকা মৃত ও আহত কবুতরের দেহ ও রক্তে রঞ্জিত হয়ে যাওয়ার দৃশ্য আয়োজকদের দারুণ পীড়া দিয়েছিল। এরপর আর কোনো অলিম্পিকে এ ধরনের কোনো ইভেন্টের আয়োজন রাখা হয়নি।