দিবসের দুনিয়া, দুনিয়ার দিবস (জানুয়ারি-২০১৪)
১ জানুয়ারি: ব্লাডি ম্যারি দিবস
কেউ বলেন ইংল্যান্ডের কুইন ম্যারি প্রথমের নামানুসারে হয়েছে এই দিবস, হলিউড তারকা ম্যারি পিকফোর্ডের কথাও শোনা যায়। আবার অনেকের বিশ্বাস, দিবসটির নাম হয়েছে শিকাগোর বাকেট অব ব্লাড পানশালার পরিচারিকা ম্যারির নামে। তবে যার নামেই হোক, এই দিবসে পান করা হয় ব্লাডি ম্যারি ককটেল নামের এক বিশেষ পানীয়।
২ জানুয়ারি: বিজ্ঞান কল্পকাহিনি দিবস
বিখ্যাত সায়েন্স ফিকশন লেখক আইজাক আসিমভের জন্মদিন নির্দিষ্ট করে বলা কঠিন। ধারণা করা হয়, সেটা ২ জানুয়ারি। আর সেই উপলক্ষেই কয়েক বছর ধরে পালিত হচ্ছে বিজ্ঞান কল্পকাহিনি দিবস।
৩ জানুয়ারি: চকলেটে ঢাকা চেরি দিবস
বড়দিন বা নতুন বছরে যারা কোনো কারণে খুব বেশি হইহুল্লোড় করতে পারেনি, তাদের জন্য এই দিবস।
৪ জানুয়ারি: বিশ্ব ব্রেইল দিবস
অন্ধ ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য পড়া ও লেখার বিশেষ পদ্ধতির নাম ব্রেইল। এর আবিষ্কারক লুইস ব্রেইলের জন্মদিন উপলক্ষেই এই দিবস।
৫ জানুয়ারি: পাখি দিবস
পাখির অনেক প্রজাতির সংখ্যাই বিলুপ্তির পথে। বৈশ্বিক উষ্ণতা ও পরিবেশ বিপর্যয় এর অন্যতম কারণ। গবেষণা থেকে জানা যায়, ১২ শতাংশের বেশি প্রজাতির পাখিই হয়তো আগামী দশকে বিলুপ্ত হয়ে যাবে। তাই এ ব্যাপারে জনসচেতনতা জোরালো করতেই এই দিবস।
৬ জানুয়ারি: খুদে রুটি দিবস
দিবসটির ইংরেজি নাম হলো শর্টব্রেড ডে। শর্ট ব্রেড মানে কিন্তু শর্ট কেক নয়। এটা অনেকটা কুকির মতো। এক ভাগ চিনি, দুই ভাগ মাখন আর তিন ভাগে আটা দিয়ে তৈরি করা হয় এই বিশেষ খুদে রুটি।
৭ জানুয়ারি: এটা আমি আর এক দিনও সহ্য করব না দিবস
আমাদের নিজেদের ওপর প্রতিদিনই তো কত-না অত্যাচার চলে! টিভি দেখতে না দেওয়া, গেমস খেলতে নিষেধ, কিংবা বড়দের ওপরেও কতশত অত্যাচার! এসব অত্যাচারের প্রতিবাদ জানাতেই এই দিবস!
৮ জানুয়ারি: অ্যারগিল দিবস
অ্যারগিল হলো একধরনের নকশা। দেখতে ঠিক বরফির মতো। এই নকশা বেশি ব্যবহৃত হয়েছে মোজায়। অ্যারগিল নকশাকে ঘিরেই এই দিবসের আবির্ভাব।
৯ জানুয়ারি: স্থির বিদ্যুৎ দিবস
একটা ফোলানো বেলুন তোমার চুলে ঘষে দেখেছ কখনো? ঘষলেই দেখবে, বেলুন তোমার চুলকে আকর্ষণ করছে! এটাই হলো স্থির বিদ্যুতের সহজ উদাহরণ। এই দিবসে লোকজন এটাই করে!
১০ জানুয়ারি: তিতকুটে-মিষ্ট চকলেট দিবস
বিটারসুইট চকলেট নিশ্চয়ই খেয়েছ। এটি তৈরি হয় আখের চিনি থেকে। দুধের কোনো বালাই থাকে না এতে। বিটারসুইট চকলেটের ইতিহাসকে মনে করতেই এই দিবস।
১১ জানুয়ারি: দুগ্ধ দিবস
দুধ—শুনেই হয়তো আঁতকে উঠছ অনেকেই। কিন্তু বড়দের মতো বলতে হয়, দুধ না খেলে হবে না ভালো ছেলে বা মেয়ে! আর এটাই মনে করিয়ে দিতে দুগ্ধ দিবস!
১২ জানুয়ারি: ফার্মাসিস্ট দিবস
ওষুধ খেতে ভালো না লাগলেও উপায় নেই। জীবনের শুরু থেকে শেষ—কোনো না কোনো সময় আমাদের ওষুধ খেতেই হয়। তাই এ দিবসে স্মরণ করা হয় যাঁরা ওষুধ তৈরি করেন অর্থাৎ ফার্মাসিস্টদের।
১৩ জানুয়ারি: পিচ মেলবা দিবস
পিচ মেলবা একটা ফলের নাম। বিখ্যাত অপেরাশিল্পী নেলি মেলবার নামানুসারে নামকরণ হয়েছিল এই ফলের। এই ফল খেয়েই নাকি নেলি অনেক ওজন কমিয়েছিলেন। সেই ফল খেয়ে ‘ডায়েট কন্ট্রোল’ করাই এই দিবসের অন্যতম উপলক্ষ বলে মনে করেন অনেকে।
১৪ জানুয়ারি: প্যাস্ট্র্যামি স্যান্ডউইচ দিবস
স্যান্ডউইচভক্তদের দিবস এটি। বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজনকে নিয়ে গরমাগরম প্যাস্ট্র্যামি স্যান্ডউইচ খেয়ে দিবস উদ্যাপন করা হয় বিভিন্ন দেশে।
১৫ জানুয়ারি: হ্যাট দিবস
মাথা ঠান্ডা? ঠান্ডা বলতে আক্ষরিক অর্থেই ঠান্ডা? তাহলে একটা হ্যাট বা টুপি পরো। সেটা মনে করিয়ে দিতেই হ্যাট দিবস।
১৬ জানুয়ারি: আন্তর্জাতিক ‘হট অ্যান্ড স্পাইসি ফুড’ দিবস
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিচিত্র সাজে সজ্জিত হয়ে সবচেয়ে ‘হট অ্যান্ড স্পাইসি ফুড’ খাওয়ার প্রতিযোগিতা হয় এদিন।
১৭ জানুয়ারি: নতুন বছরের সংকল্প পরিত্যাগ দিবস
নতুন বছরে অনেকেই অনেক প্রতিজ্ঞা করে। কিন্তু গবেষণায় দেখা যায়, জানুয়ারির ১৭ তারিখ আসতে না আসতেই সেসব প্রতিজ্ঞা বা সংকল্পের কথা ভুলে যায় অনেকেই। সেটা মনে করিয়ে দিতেই এই দিবস। এই দিবসে আসলে জীবনের ভালো প্রতিজ্ঞায় অবিচল থাকতেই উৎসাহী করা হয়।
১৮ জানুয়ারি: উইনি-দ্য-পুহ দিবস
১৯২৬ সালে প্রথম উইনি-দ্য-পুহ চরিত্রটি নিয়ে বই লেখেন এ এ মিলন। তার পর থেকে ছোটদের কাছে দারুণ প্রিয় এক কাটুর্ন চরিত্রের নাম উইনি-দ্য-পুহ। ১৮ জানুয়ারি এ এ মিলনের জন্মদিন। তাই সেদিনই পালন করা হয় উইনি-দ্য-পুহ দিবস।
১৯ জানুয়ারি: ক্যান দিবস
এই ক্যান সেই ক্যান নয়। এই ক্যান হলো টিনের ক্যান। আরও খোলাসা করে বললে, যেটাতে করে আমরা কোমল পানীয় পান করি। এই টিনের ক্যান ১৮১০ সালের ১৯ জানুয়ারি পেটেন্ট করে নিয়েছিলেন টিপার ডিউর্যান্ড। সেই ঘটনাকে মনে করেই ক্যান দিবস।
২০ জানুয়ারি: পনির-অনুরাগী দিবস
পনির বানানোর পেছনে যে দীর্ঘ সময়, অসীম ধৈর্য আর কঠোর পরিশ্রমের দরকার, এটা নিশ্চয়ই অনেকেই জানো। সেটা জানাতেই চিজ লাভারস ডে।
২১ জানুয়ারি: কাঠবিড়ালি-চিহ্নিতকরণ দিবস
কঠাবিড়ালি কত প্রকার? কী কী রঙের হয় ছটফটে, মজার লেজওয়ালা এই প্রাণীটা? খঁুজেই দেখো না সেটা! কাঠবিড়ালিকে ভালোভাবে চিনে নেওয়ার জন্যই এই দিবস।
২২ জানুয়ারি: তোমার বিড়ালের প্রশ্নের উত্তর দাও দিবস
তোমার বিড়ালটা যদি কথা বলতে পারত, কেমন হতো? নিশ্চয়ই অনেক অজানা কথাই জানতে পারতে তুমি! আবার বিড়ালও নিশ্চয়ই অনেক প্রশ্ন করত তোমাকে। তুমিও নিশ্চয়ই অনেক জ্ঞান দেওয়ার চেষ্টা করতে। তবে বাস্তবে সেটা চেষ্টা করতে তো দোষ নেই। সেটা করার জন্যই ঘটা করে পালন করা হয় তোমার বিড়ালের প্রশ্নের উত্তর দাও দিবস।
২৩ জানুয়ারি: তোমার পা মাপো দিবস
পা নিয়ে খুব বেশি মাথা ঘামায়, এমন মানুষ খুব বেশি পাওয়ার কথা না। কিন্তু তোমার পায়ের দৈর্ঘ্য কত, জুতাগুলা ঠিকমতো পায়ে হচ্ছে তো?—এসব নিয়ে কি একটুখানি ভাববে? পা নিয়ে ভাবার জন্য একটা পুরো দিন ছুটিও পর্যন্ত দেওয়া হয় অনেক দেশে!
২৪ জানুয়ারি: পিনাট বাটার দিবস
পিনাট বাটার—জিবে জল আনার জন্য যথেষ্ট এক নাম। বুঝতেই পারছ, পিনাট বাটার-ভক্তরা এই দিবসের আয়োজন করে।
২৫ জানুয়ারি: আইরিশ কফি দিবস
১৯৪২ সালে আয়ারল্যান্ডে এক বিশেষ কফি উদ্ভাবন করেন জো শেরিড্যান। সেটার নাম রাখা হয় আইরিশ কফি। দিনটিকে মনে রেখে এই আয়োজন।
২৬ জানুয়ারি: স্বামী বা স্ত্রী দিবস
এটা আসলে বড়দের, বিশেষ করে বিবাহিত ব্যক্তিদের দিবস। এই দিনে স্বামী বা স্ত্রীর সঙ্গে বাকিটা জীবন ভালোভাবে কাটানোর অঙ্গীকারই করেন বড়রা।
২৭ জানুয়ারি: ‘বাবল র্যাপ অ্যাপ্রিসিয়েশন’ দিবস
বাবল র্যাপ মানে বুঝেছ তো? নতুন ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি কিনলেই জিনিসটা পাওয়া যায়। যন্ত্রপাতিকে সুরক্ষিত রাখার জন্য ছোট ছোট অসংখ্য বাবলওয়ালা কয়েকটি প্লাস্টিক দিয়ে মুড়ে রাখা হয়। ছবি দেখে নিশ্চয়ই আরও সহজ হয়েছে বিষয়টা। আর এই জিনিসটি ফোটানো যে কত মজার—তা আর বলার কী আছে! ২৭ জানুয়ারি ঘটা করে বাবল র্যাপ ফুটিয়ে পালন করা হয় এই দিবস।
২৮ জানুয়ারি: তথ্য গোপনীয়তা দিবস
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তোমার গোপন তথ্যগুলো গোপন আছে তো? মানুষ তোমার সম্পর্কে কতটুকু তথ্য জানতে পারে বা তুমি কতটুকু জানাতে চাও?—এসব বিষয়ে সতর্কতা তৈরিতেই এই দিবস।
২৯ জানুয়ারি: মুক্তচিন্তা দিবস
আলোকিত মানুষ তৈরির বিষয়ে কাজ করেছিলেন থমাস পেইনে। অনেক বই-ও লিখেছেন এই ব্রিটিশ-মার্কিন দার্শনিক। আমেরিকা ও ফরাসি বিপ্লবে তাঁর লেখা ও কাজ অনেককেই অনুপ্রাণিত করেছে। ২৯ জানুয়ারি তাঁর মৃত্যুদিন। তাই এই দিনে স্বেচ্ছাচারী মানুষ ও প্রতিষ্ঠানকে প্রশ্ন করার ব্যাপারে উৎসাহী করা হয়। বলা হয়, যুক্তি দিয়ে স্বেচ্ছাচারীদের বোঝাতে—তোমরা যা করছ, তা ঠিক নয়।
৩০ জানুয়ারি: ক্রোসাঁট দিবস
ক্রোসাঁট হলো অর্ধচাঁদ আকৃতির একধরনের পেস্ট্রি। জনশ্রুতি আছে, ১৬৮৩ সালে অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা শহর আক্রমণ করে তুর্কিরা। একাধিকবার চেষ্টা করেও সুবিধা করতে না পেরে মাটির নিচের সুড়ঙ্গ ধরে এগোতে থাকেন সেনারা। ভিয়েনার বেকারির কারিগরেরা কাজ করতেন মাটির নিচের ঘরে। ফলে মাটি খোঁড়াখঁুড়ির শব্দ কানে এসেছিল তাঁদের। দ্রুত সেই খবর তাঁরা পৌঁছে দেন শহরের সেনাবাহিনীর কাছে। বেঁচে যায় ভিয়েনা শহর। তখন থেকেই তুর্কিদের ওটোমান সাম্রাজ্যের প্রতীক অর্ধচাঁদ আকৃতির বিশেষ এক পেস্ট্রি পরিণত হয় ভিয়েনাবাসীর প্রতিদিনের সকালের নাশতা। প্রায় ১০০ বছর পরে ফ্রান্সের রানী মারি আন্তোনেত এর নামকরণ করেন ক্রোসাঁট। তখন থেকেই ৩০ জানুয়ারি ক্রোসাঁট দিবস।
৩১ জানুয়ারি: উল্টো দিবস
এই দিনে সবকিছুই উল্টো করে করা হয়। হাঁটা হয় উল্টো দিকে, কথা বলা হয় উল্টো শব্দে, লেখা হয় উল্টো বর্ণে। মানে পুরোপুরি ‘ল্টোউ’ আরকি!
ডেজ অব দ্য ইয়ার অবলম্বনে মাহফুজ রহমান