আমি যখন প্রথম চশমা পরি, তখন আমার বয়স নয়। ক্লাস থ্রিতে পড়তাম। যদিও আমার চোখে কোনো সমস্যা ছিল না, কিন্তু চশমা পরার ভূতটা মাথায় চাপে বেশ আকস্মিকভাবেই!
আমার দশম শ্রেণিপড়ুয়া বড় ভাইয়ের চোখে সমস্যা দেখা গেল। অতএব ডাক্তার দেখিয়ে ভাইয়াকে তিনটা চশমা কিনে দিলেন বাবা। কয়েক মাস পর ভাইয়ার একটা চশমার ফ্রেমের কোনা ভেঙে গেল। ভাইয়া কাচ দুটো খুলে ফ্রেমটা দিয়ে দিল আমার কাছে। সুপার গ্লু দিয়ে চশমাটা লাগিয়ে ফেললাম আমি। পরদিন খুব শখ করে সেটা স্কুলে পরে গেলাম। কী আশ্চর্য! কেউ বুঝতেই পারল না যে আমার চশমায় কাচ নেই! অ্যাসেম্বলিতে দাঁড়িয়ে আমার চোখের পাশটা চুলকাচ্ছিল। চশমার যখন কাচই নেই তো সমস্যা কোথায়? আমি দিব্যি মাঝখান দিয়ে আঙুল ঢুকিয়ে চুলকে নিলাম চোখ। কিন্তু আমার সামনে দাঁড়ানো পুষ্প নামের একটা মেয়ে হঠাত্ চেঁচিয়ে বলল, ‘তুই কাস ছাড়া চশমা পইরে আইছিস’ (ও ‘কাচ’কে কাস আর ‘পরে’কে পইরে বললেও আমি কিছু মনে করলাম না)। ভাগ্য ভালো যে কেউ তার কথা শুনল না। আমিও বেঁচে গেলাম জিজ্ঞাসাবাদের হাত থেকে। পরে অবশ্য আমি অনেককেই বিষয়টা বলেছিলাম। তারা আমার চশমা হাতে নিয়ে মজা করত। তবে আমার এত শখের কারণে বাবা কিছুদিন পরই আমাকে দুটো চশমা কিনে দিয়েছিলেন। সেগুলোতে কাচ ছিল, কিন্তু পাওয়ার ছিল না।
আজও আমি সেই চশমা দুটো পরি এবং তাতে এখনো কোনো পাওয়ার নেই।
লেখক : শিক্ষার্থী, চতুর্থ শ্রেণি, সরকারি করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, খুলনা