একদিন বিকেলে আমি আর শিহাব ভাইয়া বসে গল্প করছিলাম। গল্পের ফাঁকে ভাইয়া বলল, ‘প্রভা, চিকেন ফ্রাই খাইতে অনেক ইচ্ছা করতেছে। আয়, আম্মুরে বলি দোকান থেকে আনতে।’ আমাদের ভাই–বোনদের মধ্যে ভাইয়া আবার একটু ভোজনরসিক। বিকেলে ও সন্ধ্যায় প্রতিদিন মজাদার নাশতা না হলে যেন ভাইয়ার চলেই না। আম্মুকে বলার সঙ্গে সঙ্গেই আম্মু বলল, ‘পাঁঠা, তোমার কি প্রতিদিন বাইরের নাশতা খেতে হবে?’ এই কথা শুনে ভাইয়া কিছুটা মর্মাহত হলো। আম্মু কিন্তু বলতেই থাকল, ‘শিহাব, তোমার পেটে আমি আর প্রভা মিলে একটা চাপ দিলে কিন্তু গত এক মাসের তোমার খাওয়া নাশতাগুলো একটা একটা করে বের হবে।’ আম্মুর কথা শুনে আমি তো টানা হাসছিলাম। ভাইয়া কিছুক্ষণ মন খারাপের পর আবার গল্পগুজবে ফিরে গেল। আম্মু আবার আমাদের পাশেই বসা ছিল। গল্পের একফাঁকে আমি কী মনে করে যেন জলপরি ও কাঠুরের গল্প নিয়ে ভাইয়াকে বলছিলাম। এর মধ্যেই আম্মু বলে উঠল, ‘প্রভা, কাঠুরে যদি শিহাবের মতো নাশতা খেয়ে খেয়ে পেটলা হইত, তাহলে কিন্তু জলপরি পানি থেকে কুঠার আনত না। কারণ, পানি থেকে উঠেই জলপরি দেখত, একটা পেটলা কাঠুরে বসে কান্না করতেছে। আর এই পেটলাকে দেখে জলপরি ভয়ে নিজেই আবার পানিতে ডুব দিত।’ আম্মুর কথা শুনে আমার আর ভাইয়ার হাসতে হাসতে পেট ফাটার মতো অবস্থা। কোনোরকমে হাসি শেষ করে আমি বললাম, তাহলে তো ইংরেজির কমপ্লিটিং স্টোরি আইটেমটার জন্য এই নতুন গল্প বইয়ে সংযুক্ত করা দরকার। আর এটার শিরোনাম থাকবে এ রকম, ‘জলপরি ও পেটলা কাঠুরে’। তবে ওই দিনের পর ভাইয়া বিকেলে অন্য কোনো নাশতা খেলেও চিকেন ফ্রাইয়ের কথা আর বলেনি। হয়তো মনে নেই। এই লেখা ছাপা হলে ভাইয়াকে বিকেলে চিকেন ফ্রাই দিয়ে সারপ্রাইজ দেব।
লেখক: শিক্ষার্থী, একাদশ শ্রেণি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া