জানা-অজানা
মানুষ মস্তিষ্কের মাত্র ১০ শতাংশ ব্যবহার করে—এটা কি সত্য
মানবমস্তিষ্ক শরীরের সবচেয়ে জটিল অঙ্গগুলোর একটি। এই অঙ্গে রয়েছে বিলিয়নসংখ্যক নিউরন বা স্নায়ুকোষ। যেগুলো আবার ট্রিলিয়নসংখ্যক সংযোগ বা সিন্যাপসের মাধ্যমে একটি আরেকটির সঙ্গে যুক্ত। নর্থওয়েস্টার্ন মেডিসিনের নিউরোলজিস্ট ড. কপিল সাচদেভা মস্তিষ্ক নিয়ে কিছু জরুরি তথ্য জানিয়েছেন। এখানে তুমি মস্তিষ্ক সচল থাকার জন্য কতটুকু শক্তি প্রয়োজন, তা জানতে পারবে। এ ছাড়া অন্যান্য তথ্য জেনে তুমি মানবমস্তিষ্কের সক্ষমতা বিষয়ে ধারণা পাবে।
১. মানুষের মস্তিষ্কের ৬০ শতাংশই চর্বি দিয়ে তৈরি। এটি শরীরের সবচেয়ে চর্বিযুক্ত অঙ্গও বটে।
২. মস্তিষ্ক ২৫ বছর বয়স পর্যন্ত পুরোপুরি গঠিত হয় না। তোমার বয়স যদি ২৫-এর কম হয়, তাহলে তোমার জন্য সুখবর। তোমার মস্তিষ্ক আরও বিকশিত হবে।
৩. মস্তিষ্কের ধারণক্ষমতা অনেক বেশি। গবেষণা বলে, মানবমস্তিষ্ক প্রায় ৮৬ বিলিয়ন নিউরন নিয়ে গঠিত। প্রতিটি নিউরন অন্যান্য নিউরনের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে, যা এক কোয়াড্রিলিয়ন (এক হাজার ট্রিলিয়ন) সংযোগ পর্যন্ত হতে পারে।
৪. মস্তিষ্কের তথ্য প্রায় ৩৫০ মাইল প্রতি ঘণ্টা গতিতে চলতে পারে। যখন একটি নিউরন উদ্দীপ্ত হয়, এটি একটি বৈদ্যুতিক সংকেত তৈরি করে, যা কোষ থেকে কোষে পৌঁছায়।
৫. মানবমস্তিষ্ক প্রায় ২০ ওয়াট শক্তিতে চলে। ২০ ওয়াট শক্তি একটি লাইটবাল্ব চালানোর জন্য যথেষ্ট!
৬. স্পাইনাল কর্ড মস্তিষ্ক ও শরীরের মধ্যে যোগাযোগের প্রধান উৎস। অ্যামিওট্রফিক ল্যাটারাল স্ক্লেরোসিস রোগে মস্তিষ্ক ও স্পাইনাল কর্ডের নিউরন মারা যায়, ফলে পেশি চলাচল হয়ে পড়ে অনিয়ন্ত্রিত।
৭. তোমার মস্তিষ্কের মাত্র ১০ শতাংশ ব্যবহৃত হয়, এটি একটি মিথ। আসলে তুমি পুরো মস্তিষ্কই ব্যবহার করো। এমনকি ঘুমের সময়ও মস্তিষ্ক সক্রিয় থাকে।
আরও পড়ুন
৮. গড়ে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মস্তিষ্কের ওজন প্রায় তিন পাউন্ড। আধা গ্যালন দুধের ওজনও তিন পাউন্ড। পুরুষদের মস্তিষ্ক নারীদের তুলনায় সামান্য বড় হতে পারে, তবে এটি বুদ্ধিমত্তার ওপর কোনো প্রভাব ফেলে না।
৯. মস্তিষ্ক কোনো ব্যথা অনুভব করে না। যদিও ব্যথা মস্তিষ্কের মাধ্যমে প্রক্রিয়াজাত হয়, তবে মস্তিষ্ক নিজে কোনো ব্যথা অনুভব করে না।
১০. একটি বালুর দানার আকারের মস্তিষ্ক টিস্যুতে এক লাখ নিউরন ও এক বিলিয়ন সিন্যাপস থাকে। নিউরনের ক্ষতি হলে শরীরে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। যেমন, স্ট্রোকের সময় রক্ত মস্তিষ্কে অক্সিজেন পৌঁছে দিতে পারে না, যার ফলে মস্তিষ্কের কোষ মারা যায়। একইভাবে পারকিনসনস রোগে মস্তিষ্কের একটি অংশে থাকা কোষ (সাবস্টানশিয়া নাইগ্রা) মারা যেতে শুরু করে।
সূত্র: নর্থওয়েস্টার্ন মেডিসিন