মেয়ে রশ্মিকে কোলে নিয়ে কিআ কার্নিভ্যালে হাজির হয়েছিলেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও স্থপতি অপি করিম। উদ্দেশ্য ছিল নিজের শিক্ষা ও কর্মজীবন শিশু–কিশোরদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেওয়া।
নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করে নিতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি। জানান, ‘আমার শিক্ষাজীবন যখন শুরু হয়, তখন এত যানজট ছিল না। আমাদের মেধা ও সময়ের একটা বড় অংশ রাস্তায় অপচয় হতো না। আমি মা হওয়ার পর বুঝতে পেরেছি, মায়েদের নিয়ে এত এত কিছু বলি, তাঁদেরও আসলে তেমন কোনো দোষ নেই।’
ছোটবেলায় আমাকে যখন কেউ জিজ্ঞেস করত, কী হতে চাও, সেটা শুনেই আমি কেঁদে দিতাম। যে কারণে আমিও আমার মেয়েকে কখনো জিজ্ঞেস করি না, কী হতে চাও। সে যা হতে চায় হবে।
দুই বছর বয়স থেকে আমার অভিনয়জীবন শুরু হয়েছিল। অভিনয়ের পাশাপাশি আমার একটা জিনিসই ভালো লাগত, বাড়ি বানাতে। আস্তে আস্তে যখন বড় হলাম, তখন বুঝতে পারলাম, বাড়ি বানানোর জন্য পড়াশোনা করতে হয়। অনেক বেশিই পড়াশোনা করতে হয়।
তবে আমি আজীবন অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে পড়াশোনা করেছি। কারণ, আমাকে কেউ কখনো বলেনি প্রথম হতে হবে। আমার জীবনে অনেক চাপ, অভিভাবকদের জীবনেও অনেক চাপ থাকে। সেই চাপ যাতে শিশুদের ওপর না দেওয়া হয়। আমি জীবনে কখনো প্রথম-দ্বিতীয় হইনি।
পড়ালেখার জন্য কোনো পুরস্কার পাইনি। কিন্তু আমার স্কুল থেকে আমিই একমাত্র বুয়েটে সুযোগ পেয়েছিলাম। কারণ, পড়ালেখাকে আমি চাপ হিসেবে নিতাম না, উপভোগ করতাম। পড়ালেখাটা সব সময়ই প্রধান, তবে আমি সব সময়ই বলব, পড়ালেখার সঙ্গে কিছু না কিছু করো। সেটা হতে পারে বই পড়া, লেখালেখি করা, ছবি আঁকা। স্ক্রিনের ভেতর থেকে সময়টা কমিয়ে এনে যতটা পারো স্ক্রিনের বাইরে সময় দাও। আর কিছু না পারলে একটা কাগজ আর কলম নিয়ে বসে থাকো, দেখবে কিছু না কিছু তৈরি হবেই।
কিশোরদের জন্য আমি তিনটা উপদেশ দেব—
১. কখনোই অন্যের সঙ্গে নিজের তুলনা করবে না। তুলনা হবে শুধু নিজের সঙ্গে নিজের।
২. জীবনে চলার পথে প্রচুর বাধা আসবে। তবে যত কিছুই হোক না কেন, জীবন কিন্তু একটাই। তাই যত বাধাই আসুক না কেন, সামনে চলার মানসিকতা নিয়ে সব সময় চলতে হবে। কখনো থেমে থাকা চলবে না।
৩. জীবনে প্রচুর বন্ধু পাবে, কিন্তু মা–বাবার থেকে বড় বন্ধু আর কেউ নেই।
কিআ কার্নিভ্যালের লেখক দল : আমাতুননূর বুশরা, মৃণাল সাহা, মোহাম্মাদ উল্লাহ জাফরী, সামিহা হায়দার ও আহমাদ মুদ্দাসসের