রোদ্দুরমাখা সেই গাছের লতাপাতা

অলংকরণ: সব্যসাচী চাকমা

ছোটবেলা থেকেই আমি কিছুটা অলস প্রকৃতির। শখ বলতে তেমন কিছু ছিল না। যখন নবম শ্রেণিতে উঠলাম, বাসায় কিছু গাছ আনা শুরু করলেন মা। গাছ লাগানো, তাদের যত্ন নেওয়া, পানি দেওয়া এসব—খুবই বিরক্ত লাগত শুরুর দিকে। কিন্তু যত দিন যেতে শুরু করল, একটি-দুটি গাছ যখন মোটামুটি বাগানে পরিণত হতে লাগল, শুরু হলো পাখিদের আনাগোনা, তখন সৃষ্টি হলো শান্তিময় একটা পরিবেশ। আমিও বুঝতে শুরু করলাম, চারা থেকে একটি পরিপূর্ণ গাছে রূপ নেওয়া যেন মানুষের এই জীবনে বেড়ে ওঠার মতোই চমৎকার ও অপূর্ব।

চারা হয়ে শৈশবের আনন্দ নেওয়া, আত্মনির্ভরশীল হয়ে বেড়ে ওঠা, শিকড়-মূল শক্ত করে নিজের মতো দাঁড়ানো, যত ফলমূল হবে ততই বিনয়ী হয়ে ওঠা, আস্তে আস্তে সবার উপকার করার মাধ্যমে বার্ধক্যের দিকে এগিয়ে যাওয়া, শেষমেশ সবাইকে কাঁদিয়ে এক সুন্দর পরিসমাপ্তি। ভোরের প্রথম আভা যখন গাছগুলোর ওপর ছড়িয়ে পড়ে, মনে হয় এক শিল্পী তাঁর অতি যত্নে আঁকা কারুকাজটি এই ধরণির বুকে সাজিয়ে রেখেছেন। রোদ্দুরমাখা সেই গাছের লতাপাতার দিকে তাকালেই মনে হয় তারা আমাকে প্রকৃতির এই অপরূপ সৌন্দর্য উপলব্ধির আহ্বান জানাচ্ছে। আর কাছে যাওয়ামাত্রই সব গ্লানি মুছে আমার অন্তরটুকুও হয়ে ওঠে হাস্যোজ্জ্বল, প্রাণবন্ত। সেই থেকেই বাগান করা আমার প্রিয় শখ।

লেখক: শিক্ষার্থী, দ্বাদশ শ্রেণি, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা

আরও পড়ুন