স্টোররুমে বসে কতগুলো কাগজ নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করছিল মিরা। বিশেষ একটি জিনিসের খোঁজে ছিল সে। দীর্ঘ ১ ঘণ্টা সময় ব্যয় করে অবশেষে আশার আলো দেখতে পেল মিরা। ওর চোখ দুটো যেন নক্ষত্রের মতো ঝলমলিয়ে উঠল। দীর্ঘ সময় ব্যয় করে এই মূল্যবান জিনিসটি খুঁজে পাওয়ায় খুব খুশি সে। তবে বেশিক্ষণ থাকেনি তার খুশি। কারণ, স্টোররুমে খুঁজে পাওয়া ডায়েরিটার অর্ধেক অংশ ছিঁড়ে গেছে। কিন্তু এই ছিঁড়ে যাওয়া ডায়েরিটাই উপহার হিসেবে দিতে হবে ওকে। ডায়েরিটা পেয়ে নিশ্চয়ই খুশি হবে ওর আম্মু। এই ডায়েরিতে রয়েছে হাজারো স্মৃতি, রয়েছে মরীচিকার মতো রঙিন স্বপ্নের বালু। খুব যত্নসহকারে গিফট বক্সে ভরল ডায়েরিটা। মিরা বাতাসের চেয়েও জোরে ছুটে যাওয়ার চেষ্টা করল ওর আম্মুর কাছে। কিন্তু ডাক্তাররা ওকে কিছুতেই আম্মুর কাছে যেতে দিল না। আইসিইউতে কাউকে নাকি ঢুকতে দেয় না ওরা। কিন্তু মিরা যেকোনো মূল্যে আম্মুর সঙ্গে দেখা করতে চায়। আম্মুর বলা শেষইচ্ছাটা পূরণ করতে চায় সে। সে জানে, তার আম্মু এই পৃথিবীতে আর বেশিক্ষণ থাকবে না, চলে যাবে মেঘের রাজ্যে, হারিয়ে যাবে অসংখ্য নক্ষত্রের ভিড়ে, মিশে যাবে সমুদ্রের ফেনায়। আর কখনো সে আম্মু বলে ডাকতে পারবে না। এখন কেউ আর মিরাকে বকবে না। এখন মিরাকে আর পরীক্ষার রেজাল্ট লুকিয়ে রাখতে হবে না। মিরা এখন স্বাধীন, ঠিক যেমন কাঠের পুতুলটি নিঃসঙ্গ স্বাধীনতা নিয়ে বাঁচে, মিরাও এখন সে রকম স্বাধীনতাকে বরণ করবে।
লেখক: নবম শ্রেণি, গাজীপুর উমেদা বেগম বালিকা উচ্চবিদ্যালয়