তরুণ জলবায়ুকর্মীদের জলবায়ু ধর্মঘট

ঢাকার প্রেসক্লাবের সামনেও তেমনি বিক্ষোভ দেখিয়েছে কিশোর-তরুণ জলবায়ুকর্মীরাছবি: সংগৃহীত

২০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিশ্বব্যাপী পালিত হয়েছে গ্লোবাল ক্লাইমেট স্ট্রাইক বা বৈশ্বিক জলবায়ু ধর্মঘট। জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিশ্বের ৫০টির বেশি দেশে প্রায় ১৫০টি ধর্মঘট আয়োজিত হয়েছে। বার্লিন, ব্রাসেলস, রিও ডি জেনিরো, নিউ দিল্লি, ঢাকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন শহরে যুব-নেতৃত্বাধীন সংগঠন ‘ফ্রাইডেস ফর ফিউচারের’ আয়োজনে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নিউইয়র্কের ব্রুকলিন ব্রিজের পাশে যেমন বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে, ঢাকার প্রেসক্লাবের সামনেও তেমনি বিক্ষোভ দেখিয়েছে কিশোর-তরুণ জলবায়ুকর্মীরা।

বাংলাদেশের জলবায়ু সংগঠন ‘ইয়ুথ নেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস’ ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালন করে। সকাল থেকে কিশোর-তরুণ জলবায়ুকর্মীরা জড়ো হন প্রেসক্লাবের সামনে। অনেকের হাতে ছিল ব্যানার-ফেস্টুন। যেখানে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে নিজেদের প্রতিজ্ঞা ও দাবির কথা লেখা ছিল।

আরও পড়ুন

ঢাকায় তরুণ জলবায়ুকর্মীরা সমন্বিত বিদ্যুৎ-জ্বালানি মহাপরিকল্পনা (আইইপিএমপি) পরিকল্পনা সংশোধন এবং নবায়নযোগ্য শক্তিতে বিনিয়োগ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন। তাঁরা জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর অর্থায়ন বন্ধ করার পাশাপাশি কপ ২৯ সম্মেলনে জলবায়ু অর্থায়ন বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে।

ইয়ুথ নেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের নির্বাহী সমন্বয়ক সোহানুর রহমান বলেন, ‘আমাদের এই গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে জ্বালানি নীতিগুলো পুনর্বিবেচনা করে নবায়নযোগ্য শক্তির দিকে দ্রুত রূপান্তর করতে হবে। বাংলাদেশের তরুণেরা আর অপেক্ষা করতে রাজি নযন। তাঁরা দৃঢ়ভাবে দাবি করছেন যে জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি মোকাবিলায় এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। আমাদের নেতাদের সাহসী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে একটি টেকসই ও জলবায়ু স্থিতিস্থাপক ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে হবে।’

আরও পড়ুন

কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া তরুণ জলবায়ুকর্মী আরুবা ফারুক বলেন, ‘আমাদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে হলে কেবল নীতিগুলো বদলালেই হবে না। আমাদের জীবনযাত্রার ধরনেও সুস্পষ্ট পরিবর্তন আনতে হবে। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে নবায়নযোগ্য শক্তিতে দ্রুত রূপান্তর এবং এই রূপান্তরের জন্য বিশ্ব সম্প্রদায় ও আমাদের রাষ্ট্রনেতাদের কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ জলবায়ু অর্থায়ন প্রয়োজন।’

সিপিডি গবেষণা পরিচালক ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম তরুণদের দাবি সমর্থন করে বলেন, ‘বাংলাদেশের নতুন রাজনৈতিক নেতৃত্ব ২০৫০ সালের মধ্যে নেট-জিরো কার্বন নিঃসরণের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। কিন্তু বর্তমান আইইপিএমপি কার্বন লক-ইনকে শক্তিশালী করে এবং নবায়নযোগ্য শক্তির ন্যায্য রূপান্তরকে বিলম্বিত করে। জাতীয় জলবায়ু লক্ষ্যগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং একটি টেকসই ভবিষ্যৎ অর্জনের জন্য অবিলম্বে এই পরিকল্পনা দ্রুত সংশোধন করা জরুরি।’

সমাবেশ শেষে তরুণেরা নেতাদের স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন যে তাঁরা দেশের জ্বালানি নীতিতে জলবায়ু-সহনশীলতা এবং টেকসই ভবিষ্যতের প্রতিফলন না দেখা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবেন।

আরও পড়ুন