আশা না হারানোর গল্প

আমি তখন অষ্টম শ্রেণিতে পড়ি। আমাদের স্কুলে সে সময় কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতার জন্য ছাত্রছাত্রীরা এক মিসের কাছে নাম দিচ্ছিল। মিসের নাম শায়লা শবনম। আমরা তাঁকে শায়লা মিস বলে ডাকতাম। সবার মতো আমিও কবিতা আবৃত্তিতে নাম দিয়েছিলাম। শায়লা মিস বাছাইয়ের জন্য একদিন সবার আবৃত্তি শুনলেন। আমিও সেদিন কবিতা আবৃত্তি করেছিলাম। আমার আবৃত্তি করা কবিতার নাম ‘ছাড়পত্র’। কবিতাটি লিখেছেন সুকান্ত ভট্টাচার্য। আবৃত্তি করাটা আমার আরও ভালো করা লাগবে—এ কথা বলে শায়লা মিস আমাকে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন। কিন্তু আমাকে প্রতিযোগিতায় নেননি। তারপরও আমার আশা ছিল, একদিন এ কবিতা আবৃত্তির জন্য আমি কোনো বড় পুরস্কার পেতে পারি। কবিতাটি আমার ভালো লেগেছিল। কবিতাটিকে আমি ক্ল্যাসিক কবিতা মনে করেছিলাম। স্কুলের কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতা শেষ হলো। একদিন আমি আমার দাদির সঙ্গে তাঁর একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। সেখানে কবিতা আবৃত্তি করার জন্য প্রার্থী নেওয়া হচ্ছিল। আমি এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে প্রথম দিকে আমার নাম লিখলাম। সুকান্তর সেই ক্ল্যাসিক কবিতার নামটাই লিখেছিলাম। নাম ডাকার পর আমি গিয়ে বিশাল মঞ্চে দাঁড়িয়ে আবৃত্তি করেছিলাম আমার ভালো লাগা কবিতাটি। এরপর আমি মঞ্চ থেকে নেমে আশা করছিলাম, এবার যেন আমি এ কবিতা আবৃত্তির জন্য কোনো পুরস্কার পাই। যখন পুরস্কার বিতরণীর সময় এল, তখন আমার আশা পূরণ হয়েছিল। আমি পুরস্কার হিসেবে দুটি প্রাইজবন্ড পেয়েছিলাম। প্রাইজবন্ড দুটি আমার কাছে এখনো আছে। দুটি দেখলে আমার মন ভালো হয়ে যায়। নতুনভাবে অনুপ্রেরণা পাই, ভাবি যে এ পুরস্কার দুটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে আমার আশা না হারানো গল্প।

লেখক: শিক্ষার্থী, অষ্টম শ্রেণি, মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা

আরও পড়ুন