প্রথম আন্তর্জাতিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশ পেয়েছে দুটি রৌপ্য ও দুটি ব্রোঞ্জ পদক। ৯-১১ সেপ্টেম্বর সৌদি আরবের রিয়াদে অনুষ্ঠিত হয়েছে এই অলিম্পিয়াড। বিশ্বের ২৫টি দেশের শতাধিক শিক্ষার্থী এই বিশ্ব আসরে অংশ নেয়।
অলিম্পিয়াডে অংশ নেয় বাংলাদেশ দলের স্কুল ও কলেজপড়ুয়া চার শিক্ষার্থী। দলনেতা হিসেবে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক বি এম মইনুল হোসেন।
চার সদস্যের মধ্যে রৌপ্যপদক পেয়েছে সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থী আরেফিন আনোয়ার এবং নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী মিসবাহ উদ্দিন। আর ব্রোঞ্জপদক পেয়েছে নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী আবরার শহীদ এবং একাডেমিয়ার শিক্ষার্থী রাফিদ আহমেদ।
রিয়াদ থেকে অধ্যাপক বি এম মইনুল হোসেন বলেন, ‘এবারের প্রতিযোগিতায় গিয়ে বুঝতে পারি, অলিম্পিয়াডের জগতে বাংলাদেশকে অন্য দেশগুলো সমীহের চোখে দেখতে শুরু করেছে। বিভিন্ন অলিম্পিয়াডে আমাদের শিক্ষার্থীরা পদক অর্জন করে নিজেদের মেধার প্রমাণ দিচ্ছে, দেশের মুখ উজ্জ্বল করছে। নানা দেশ কৌতূহলী হয়ে আমাদের দলের কাছে এসে জানতে চাইছে, বাংলাদেশ কী পদ্ধতিতে সমস্যাগুলো সমাধান করেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের জন্য নিয়মিত প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও ক্যাম্পের আয়োজন করতে হবে। তাহলে শিক্ষার্থীরা আরও ভালো করতে পারবে।’
রৌপ্যপদকজয়ী মিসবাহ উদ্দিন বলে, ‘আন্তর্জাতিক আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম রৌপ্যপদক পেয়ে অত্যন্ত গর্ববোধ করছি। দেশের জন্য এরকম অর্জন অত্যন্ত সৌভাগ্যের ব্যাপার।’
আরেক রৌপ্যজয়ী আরেফিন আনোয়ার বলে, ‘প্রথমবার অনুষ্ঠিত এআই অলিম্পিয়াডের বিজয়মঞ্চে বাংলাদেশের নাম শোনা ছিল এক অপূর্ব গৌরবের মুহূর্ত।’
এর আগে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা নিবন্ধন করে বাংলাদেশ এআই অলিম্পিয়াডের অনলাইন পর্বে অংশগ্রহণ করে। আঞ্চলিক পর্বের বাছাইকৃত শিক্ষার্থীদের নিয়ে আয়োজিত হয় অনলাইন গ্রুমিং সেশন। এরপর গত ৮ মে, বুধবার প্রোগ্রামিং কনটেস্ট ওয়েবসাইট toph.co-তে অনুষ্ঠিত হয় অনলাইন বাছাইপর্ব। সেখান থেকে বাছাইকৃত শিক্ষার্থীদের নিয়ে গত ১৮ মে, শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত হয় এআই অলিম্পিয়াডের জাতীয় পর্ব। তাদের নিয়ে ২১-২২ মে অনলাইনে আয়োজিত হয় গ্রুমিং সেশন। এরপর ২৩-২৫ মে সিলেকশন ক্যাম্প এবং আন্তর্জাতিক টিম সিলেকশন টেস্ট আয়োজিত হয়। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পারফরম্যান্স ও বুদ্ধিমত্তার দক্ষতা যাচাই করে চূড়ান্তভাবে ঠিক করা হয় চার সদস্যের বাংলাদেশ দল। এই দলই সৌদি আরবের রিয়াদে এআই অলিম্পিয়াডের বিশ্ব আসরে অংশ নেয়।
আন্তর্জাতিক আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম রৌপ্যপদক পেয়ে অত্যন্ত গর্ববোধ করছি। দেশের জন্য এরকম অর্জন অত্যন্ত সৌভাগ্যের ব্যাপাররৌপ্যপদকজয়ী মিসবাহ উদ্দিন
বাংলাদেশ এআই অলিম্পিয়াড আয়োজন করে বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিডিওএসএন)। এ আয়োজনের স্পনসর ছিল রিভ চ্যাট, ব্রেন স্টেশন ২৩, ই-জেনারেশন, ইন্টেলিজেন্ট মেশিনস। এ ছাড়া আয়োজনের সহযোগী ছিল প্রথম আলো, আইসিটি বিভাগের এটুআই ও বাংলা ভাষা প্রকল্প এবং ম্যাগাজিন পার্টনার ছিল বিজ্ঞানচিন্তা ও কিশোর আলো। সহযোগিতায় ছিল ইন্টারনেট সোসাইটি বাংলাদেশ চ্যাপ্টার, বাইটস ফর অল, বাংলাদেশ রোবট অলিম্পিয়াড, জেআরসি বোর্ড, ওয়ার্ল্ড রোবট অলিম্পিয়াড-বাংলাদেশ, বাংলার ম্যাথ এবং স্ক্র্যাচ বাংলাদেশ।