কিশোর আলোর দশম জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠান নগদ–কিআ কার্নিভ্যালে শুভেচ্ছা জানাতে এসেছিলেন সাফজয়ী ফুটবলার মারিয়া মান্দা ও সানজিদা খাতুন। খেলোয়াড় হিসেবে যাঁদের গড়ে ওঠার শুরু ময়মনসিংহের কলসিন্দুর গ্রামে। শুধু তাঁরা দুজন নন, সাফজয়ী ১৪ নারী ফুটবলারের ৯ জনই ছিলেন এই গ্রামের।
এই গ্রামের কিশোরী ফুটবলারদের বৃত্তি প্রদান করে কিশোর আলো। এক বছর ধরে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে কলসিন্দুর গ্রামের একজন ক্রীড়াশিক্ষক, ৩৩ জন অদম্য ফুটবলারসহ মোট ৩৪ জনকে বৃত্তি প্রদান করা হয়েছে। এবার নবায়ন করা হলো বৃত্তি কার্যক্রম। আগামী এক বছর ক্রীড়াশিক্ষকসহ মোট বৃত্তি পাবেন ৩৮ জন।
ধোবাউড়া উপজেলার কলসিন্দুর গ্রামটি বেশ অবহেলিত। প্রত্যন্ত গ্রামের প্রতিকূল পরিবেশে মেয়েরা ফুটবল খেলে। সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর মেয়েদের একজন বলেছিলেন, তিনি ৮-১০ বছর আগে খেলতে আসতেন; কারণ, খেলার পর তাঁদের ডিম ও কলা খেতে দিতেন মফিজ স্যার। এখনো মেয়েরা অনেক কষ্ট করেই অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছে। তাই কলসিন্দুরের বর্তমান খেলোয়াড় কিশোরীদের জন্য কিশোর আলো গত বছর শুরু করেছে বিশেষ বৃত্তির কার্যক্রম। এই বৃত্তি আগামী এক বছরের জন্য নবায়ন করা হয়েছে। কিশোরী খেলোয়াড়েরা আগামী এক বছর বৃত্তির টাকা পাবে।
গত বছর বৃত্তি প্রদান সম্পর্কে কিশোর আলো সম্পাদক আনিসুল হক বলেছিলেন, ‘টাকার অঙ্কের দিক থেকে এই বৃত্তি খুব বেশি কিছু নয়। কিন্তু ওদের প্রতিদিনকার জীবনে এটি সামান্য ভূমিকা রাখতে পারলেও আমরা আনন্দ অনুভব করব।’ তিনি আরও বলেন, ‘যার সামর্থ্য যতটুকু, সে ততটুকু দিয়েই সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন ক্ষেত্রের মেধাবীদের সহযোগিতা করলে এই মেধাবীরা আরও এগিয়ে যাবে। সব মিলিয়ে আমাদের দেশটাই এগিয়ে যাবে।’
কিআ সম্পাদক এবার যোগ করেছেন, ‘কলসিন্দুরের মেয়েদের জন্য বৃত্তি কার্যক্রম চালু রাখতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত। মেয়েরা যত দিন খেলবে, আমরা তত দিন তাদের পাশে থাকতে চাই।’
কিশোর আলোর এই তহবিলে অনুদান দিয়েছেন শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগর, বুয়েট ক্লাবের সভাপতি প্রকৌশলী গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর, শামসুল আলম নাদিম ও লেখক বাদল সৈয়দ। আমাদের স্বপ্ন, মারিয়া-সানজিদাদের দেখানো পথে এগিয়ে যাবে কিশোরী ফুটবলররা।