গুণের মতো ৫ দিয়ে ভাগ করাও সহজ। কোনো সংখ্যাকে ৫ দিয়ে ভাগ করতে চাইলে, প্রথমে ২ দিয়ে গুণ করতে হবে। তারপর ভাগ করতে হবে ১০ দিয়ে। তবেই ৫ দিয়ে ভাগ করা হবে। যেমন, ১৮-কে ৫ দিয়ে ভাগ করতে চাই। তাহলে প্রথমে ১৮-কে গুণ করতে হবে ২ দিয়ে। গুণফল হবে ১৮ × ২ = ৩৬। এবার এই ৩৬-কে ১০ দিয়ে ভাগ করলেই পাওয়া যাবে সমাধান। ১০ দিয়ে যেকোনো সংখ্যাকে ভাগ করা খুব সহজ। একঘর বাঁয়ে দশমিক বসালেই ১০ দিয়ে ভাগ করা হয়। যেমন, ৩৬-কে ১০ দিয়ে ভাগ করলে হবে ৩.৬। এবার ৫-এর পাশাপাশি ০.৫, ৫০ ও ৫০০ দিয়ে ভাগ করার কিছু কৌশল দেখি।
সমস্যা: ১ (সহজ)
৩৮ ÷ ৫
ধাপ ১: প্রথমে ৩৮-কে ২ দিয়ে গুণ করি। অথবা ৩৮ + ৩৮ করতে পারো। একই কথা। কীভাবে গুণ করবে? প্রথমে ৪০-কে দ্বিগুণ করো। অর্থাৎ ৮০। এখান থেকে ৪ বিয়োগ করলে পাবে ৭৬। এটাই ৩৮-এর দ্বিগুণ।
ধাপ ২: এবার ১০ দিয়ে ভাগ করতে হবে। খুব সহজ। একঘর বাঁয়ে দশমিক বসাতে হবে। অর্থাৎ উত্তর হলো ৭.৬।
একনজরে দেখে নাও
৩৮ ÷ ৫ → ৩৮ × ২ = ৭৬ → ৭৬ ÷ ১০ = ৭.৬
সমস্যা: ২ (সহজ)
৯৭ ÷ ৫
ধাপ ১: প্রথমে ৯৭-কে ২ দিয়ে গুণ করতে হবে। এ জন্য প্রথমে ৯৭-এর স্থানে ১০০ কল্পনা করো। তাহলে সহজে দ্বিগুণ করতে পারবে। ১০০-এর দ্বিগুণ করলে হবে ২০০। তুমি ৩ বেশি ধরেছ, কারণ দেওয়া ছিল ৯৭। এবার এই ৩-এর দ্বিগুণ বিয়োগ করতে হবে। অর্থাৎ ২০০ - ৬ = ১৯৪। এটাই ৯৭-এর দ্বিগুণ।
ধাপ ২: এবার ১০ দিয়ে ভাগ করতে হবে। একঘর বাঁয়ে দশমিক বসালে হবে ১৯.৪।
একনজরে দেখে নাও
৯৭ ÷ ৫ → ৯৭ × ২ = ১৯৪ → ১৯৪ ÷ ১০ = ১৯.৪
সমস্যা: ৩ (কঠিন)
২৪৫ ÷ ৫০
ধাপ ১: প্রথমে শূন্য বাদ দিতে হবে। শুধু সংখ্যার ডানে কোনো শূন্য থাকলে সেটাই বাদ দেওয়া যাবে। তাহলে শূন্য বাদ দিয়ে ভাগ হলো ২৪৫ ÷ ৫।
ধাপ ২: এবার আগের নিয়মে ভাগ করলেই সমাধান পাওয়া যাবে। প্রথমে ২৪৫-কে দ্বিগুণ করতে হবে। অথবা ২৪৫-এর সঙ্গে ২৪৫ যোগ করতে পারো। মনে মনেও কাজটা করা যায়। ২৫০ ও ২৫০ যোগ করলে হবে ৫০০। সেখান থেকে বিয়োগ করো ১০। ব্যস, পেয়ে যাবে ৪৯০। এটাই ২৪৫-এর দ্বিগুণ।
ধাপ ৩: এখন ৪৯০-কে ১০ দিয়ে ভাগ করতে হবে। অর্থাৎ একঘর বাঁয়ে দশমিক বসাতে হবে। ভাগফল হবে ৪৯.০। অর্থাৎ ৪৯।
ধাপ ৪: প্রথম ধাপে যে একটা শূন্য বাদ দিয়েছিলাম, তা খেয়াল আছে? ওই শূন্য বাদ দেওয়ার কারণে আরও একঘর বাঁয়ে একটি দশমিক হবে। অর্থাৎ উত্তর হবে ৪.৯।
তোমরা এখানে আরও একটি কৌশল অবলম্বন করতে পারো। যখন কোনো সংখ্যাকে ৫০ দিয়ে ভাগ করতে বলবে, তখন তৃতীয় ধাপে এসে ১০ দিয়ে ভাগের পরিবর্তে ১০০ দিয়ে ভাগ করতে পারো। আসলে একই কথা। কারণ, তুমি দুই বার ১০ দিয়ে ভাগ করা মানে ১০০ দিয়েই ভাগ করা হয়। সে ক্ষেত্রে ভাগ হয়তো আরও একটু সহজ ও দ্রুত করতে পারবে।
তুমি যখন এ ধরনের ভাগ বারবার চর্চা করবে, তখন তোমার মাথায় এ ধরনের কৌশল হামেশাই চলে আসবে। তাই বেশি বেশি চর্চা করো আর নিজেই বানাও নিজের মতো কৌশল।
একনজরে দেখে নাও
২৪৫ ÷ ৫০ → ২৪৫ ÷ ৫ → ২৪৫ × ২ = ৪৯০ → ৪৯০ ÷ ১০ = ৪৯ → ৪.৯।
সমস্যা: ৪ (কঠিন)
৪৪.৪ ÷ ৫
ধাপ ১: মনে করো, এখানে কোনো দশমিক নেই। অর্থাৎ তুমি ৪৪৪-কে ৫ দিয়ে ভাগ করছ। তাহলে ভাগ দাঁড়াল ৪৪৪ ÷ ৫।
ধাপ ২: এখন প্রথমে ৪৪৪-কে দ্বিগুণ করতে হবে। এটা খুব সহজ। ৮৮৮।
ধাপ ৩: এবার ৮৮৮-কে ভাগ করতে হবে ১০ দিয়ে। অর্থাৎ ভাগফল ৮৮.৮।
ধাপ ৪: প্রথম ধাপে দশমিকের পরে একটি অঙ্ক ছিল। সেটা আমরা বাদ দিয়েছিলাম। তাই এখন ভাগফলের বাঁয়ে এক ঘর পরে দশমিক বসবে। অর্থাৎ উত্তর হবে ৮.৮৮।
এখানে তোমরা চতুর্থ ধাপ না করেই সমাধানে পৌঁছাতে পারো। সে জন্য ১০-এর পরিবর্তে ভাগ করতে হবে ১০০ দিয়ে। তাহলে একবারে উত্তর পাবে ৮.৮৮।
একনজরে দেখে নাও
৪৪.৪ ÷ ৫ → ৪৪৪ ÷ ৫ → ৪৪৪ × ২ = ৮৮৮ → ৮৮৮ ÷ ১০ = ৮৮.৮ → ৮.৮৮।
আশা করি, এ পর্যন্ত বুঝতে তোমাদের কোনো অসুবিধা হয়নি। আর যদি ভালো করে বুঝতে না পারো, তাহলে ওপর থেকে আরেকবার মনোযোগ দিয়ে দেখো। নিশ্চয়ই বুঝতে পারবে। কিন্তু তুমি যদি ইতিমধ্যে সবটা বুঝতে পারো, তাহলে জলদি নিচের সমস্যাগুলোর সমাধান করো। চেষ্টা করো, খাতা–কলম ব্যবহার না করে মাথার মধ্যে সমস্যার সমাধান করতে।
অনুশীলন (সহজ)
১. ৪৯ ÷ ৫ =
২. ৭৬ ÷ ৫ =
৩. ৮১ ÷ ৫ =
৪. ১১৮ ÷ ৫ =
৫. ২৭৭ ÷ ৫ =
অনুশীলন (কঠিন)
১. ৩৩.৩ ÷ ৫ =
২. ২৩০ ÷ ৫০ =
৩. ৪৩.৫ ÷ ০.৫ =
৪. ৯২০ ÷ ৫০ =
৫. ৮,৩০০ ÷ ৫০০ =
সমাধান (সহজ)
১. ৪৯ ÷ ৫ = ৯.৮
২. ৭৬ ÷ ৫ = ১৫.২
৩. ৮১ ÷ ৫ = ১৬.২
৪. ১১৮ ÷ ৫ = ২৩.৬
৫. ২৭৭ ÷ ৫ = ৫৫.৪
সমাধান (কঠিন)
১. ৩৩.৩ ÷ ৫ = ৬.৭
২. ২৩০ ÷ ৫০ = ৪.৬
৩. ৪৩.৫ ÷ ০.৫ = ৮৭
৪. ৯২০ ÷ ৫০ = ১৮.৪
৫. ৮,৩০০ ÷ ৫০০ = ১৬.৬