তোমরা নিশ্চয়ই রজনীকান্ত সেনের নাম শুনেছ। কবি, গীতিকার ও সুরকার হিসেবে স্মরণীয় হয়ে আছেন তিনি। ‘স্বাধীনতার সুখ’ নামে অপূর্ব একটা কবিতা আছে তাঁর। চড়ুই পাখি সাধারণত মানুষের বাড়িতে বাসা বানায়। কবি রজনীকান্ত সেন তেমনই একটা চড়ুইকে নিয়ে কবিতা লিখেছেন। অট্টালিকায় থাকে বলে একটা চড়ুইয়ের অনেক গর্ব। রোদ–বৃষ্টিতে কোনো ঝামেলায় পড়তে হয় না চড়ুইকে। এদিকে বাবুই পাখি থাকে নিজের বাসায়। খড়কুটো দিয়ে বহু কষ্টে বাসা তৈরি করে বাবুই। ঝড়বৃষ্টিতে বেশ ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি হয় সেই বাসায়। চড়ুই তাই তাচ্ছিল্য করে বাবুইকে বলে, আমি তো মহাসুখে অট্টালিকায় থাকি। তুমি কুঁড়েঘরে থেকে শিল্পের বড়াই করো? বাবুই তখন বলে, কুঁড়েঘর হলেও এটা আমার নিজের বাসা। ‘পাকা হোক তবু ভাই নিজের বাসা/ নিজ হাতে গড়া মোর কাঁচা ঘর খাসা।’ নিজের ঘরে শত প্রতিকূলতা থাকে, তারপরও সেটা নিজের ঘর। দেশের ব্যাপারটাও তা–ই। শত সমস্যার পরও দেশটা কিন্তু আমাদেরই। নিজের একটা দেশ, সংস্কৃতি, পতাকা যে কত গুরুত্বপূর্ণ, সেটা আমরা হয়তো সব সময় বুঝতে পারি না। কারণ, আমরা একটা স্বাধীন দেশেই বসবাস করি। শুধু সমস্যাগুলোই আমাদের চোখে পড়ে। কিন্তু খেয়াল করে দেখো, পৃথিবীতে এখনো অনেক মানুষ একটা স্বাধীন দেশ পাওয়ার জন্য যুদ্ধ করছে, প্রাণ দিচ্ছে। আমরাও স্বাধীনতা অর্জন করেছি অসংখ্য মানুষের আত্মত্যাগের বিনিময়ে। উনিশ শতকের মার্কিন কবি জে আর লওয়েল বলেছিলেন, ‘আমি একটা স্বাধীন দেশের নাগরিক—এর চেয়ে বড় গৌরব আর কী হতে পারে?’ আমরা সবাই স্বাধীন দেশের নাগরিক। নিজেদের কাজটা আমরা যদি ঠিকভাবে করি, নিয়ম মেনে চলি, মানুষের পাশে দাঁড়াই, তাহলে আমাদের দেশটা আরও সুন্দর হবে। সবাইকে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা।