সেদিন আমি ঘুম থেকে উঠলাম। শীতকাল, বার্ষিক পরীক্ষা শেষ। পড়াশোনার চাপ নেই। বাসাভর্তি মেহমান। সবাই মনে হয় ড্রয়িংরুমে বসেছে। আমি হাত–মুখ ধুয়ে সবার সঙ্গে দেখা করার জন্য সেখানে গেলাম। কিন্তু একি! রুমে ঢুকতেই দেখি সবাই অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। চাচাতো বোন ছোট্ট মিনা ভয়ে ভয়ে বলল, ‘ভাইয়া, তোমার চুল কই?’
‘আমার চুল...’ বলেই ভয়ে ভয়ে মাথায় হাত দিলাম, একি! আমার চুল কোথায় গেল? অদৃশ্য হয়ে গেল নাকি? এখন টাক্কু হয়ে থাকতে হবে?
হঠাৎ পেছন থেকে আমার ছোট্ট দুষ্টু ভাই রবিন দেখি কাঁচি নিয়ে আসছে। আমার যা রাগ উঠল, বলার মতো নয়। ছোটদের ওপর আমি কখনো রাগ করিনি। এবার এমন রাগ উঠল যে আমাকে অনেক কষ্ট সহ্য করতে হলো। ঠান্ডা মাথায় একটা পরিকল্পনা করলাম। রাতে তো ও আমার সঙ্গেই ঘুমায়। দাঁড়াও না বাবা। রাত হোক, মজা দেখাচ্ছি।
সারা দিন ক্যাপ পরে ঘুরলাম। বড়দের নানা প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে হয়রান হয়ে গেলাম। কখন রাত আসবে?
আস্তে আস্ত গভীর রাত এল। কাঁচিটা নিয়ে কুচ কুচ করে রবিনের মাথার চুল কেটে দিলাম আমি। রবিন বুঝতেও পারল না। পরদিন সকালে ও যে এই রকম একটা শাস্তি পেল, তা আজীবন আমার মনে থাকবে, আর কখনো ও আমার চুল কাটার সাহস পায়নি।