২২ অক্টোবর বেলা তিনটায় একদল উৎসুক কিশোর-কিশোরী সমবেত হলো কিআ সভাকক্ষে। উদ্দেশ্য ৭৮তম কিআড্ডায় অংশ নেওয়া। সবাই আসার পর সভার সঞ্চালক কিশোর আলোর সহকারী সম্পাদক পাভেল মহিতুল আলমের ‘কেন কিআড্ডায় আসা?’ প্রশ্ন দিয়ে শুরু হলো এবারের সভা। একে একে সে প্রশ্নের উত্তর দিল কিআড্ডায় উপস্থিত থাকা সবাই। দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া ছোট্ট কিআ পাঠক রাই জানায় কিআর সঙ্গে তার পথচলা শুরুর গল্প। ছোট্ট রাই তখনও পড়তে শেখেনি, কিআয় ছাপা ছবি আর কার্টুন দেখার মাধ্যমেই শুরু হয় কিশোর আলোর সঙ্গে তার যাত্রা। আর এখন সে কিআড্ডার একজন অংশগ্রহণকারী।
এরপরই স্কুলপড়ুয়া ছাত্রী রাদিয়া ইসলাম পরিবেশন করে 'পুরষ্কার' চলচ্চিত্রের ‘হারজিত চিরদিন থাকবেই’ গানটি। গান শেষ হতে না হতেই সবার মাঝে উপস্থিত হন কিশোর আলোর সম্পাদক আনিসুল হক।
সাফ বিজয়ী নারী ফুটবলারদের সঙ্গে কিশোর আলোর নবম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন করতে কলসিন্দুর গ্রামে গিয়েছিলেন কিআ সম্পাদক। সেখানকার অভিজ্ঞতা শোনালেন তিনি। জানালেন অদম্য ফুটবলারদের জীবনের নানা সংগ্রাম নিয়ে। আনিসুল হক দিলেন দারুণ একটি ঘোষণাও—কিশোর আলোর পক্ষ থেকে কলসিন্দুর গ্রামের সেই ফুটবলারদের দেওয়া হবে বৃত্তি। “কঠিন সমস্যার সহজ সমাধান” কীভাবে করা যায়, তা নিয়ে মূল্যবান সব উপদেশ দেন জনপ্রিয় এই লেখক। বলেন, ‘সফল হওয়ার কোনো সহজ পথ নেই।’ এ জন্য করতে হবে অনেক অনুশীলন, মানতে হবে ‘টেন থাউজেন্ড ল’ বা কোনো বিষয়ে ১০ হাজার ঘণ্টা অনুশীলন করার নীতি।
এরপরই শুরু হয় সভার নিয়মিত পর্ব—সম্পাদকের সঙ্গে কিআ নিয়ে পাঠকদের আলোচনা। কিআড্ডায় অংশগ্রহণকারী সবাই ছিল কিআর নিয়মিত পাঠক। তাই আলোচনা জমে উঠল পুরোদমে। অক্টোবর সংখ্যা নিয়ে তাদের ভালো লাগা, মন্দ লাগা নিয়ে মন খুলে কথা বলে পাঠকেরা। সেই সঙ্গে কিআর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়েও আলোচনা হয় এ পর্বে।
এ পর্বের শেষে প্রথম আলো ট্রাস্টের সমন্বয়ক মাহবুবা সুলতানা রবীন্দ্রসংগীত ‘প্রাণ ভরিয়ে তৃষা হরিয়ে’ পরিবেশন করেন। মুগ্ধ হয়ে গানটি শোনে উপস্থিত সবাই।
এরপরই পাঠকদের সঙ্গে যুক্ত হন বিজ্ঞানচিন্তা ম্যাগাজিনের সম্পাদনা দল। আলোচনা চলে নোবেল ২০২২ নিয়ে। এ ছাড়া বিজ্ঞানচিন্তার সহসম্পাদক উচ্ছ্বাস তৌসিফ জানান, বিজ্ঞানচিন্তা আয়োজিত বিজ্ঞান উৎসবের কথা। কিআর নিয়মিত লেখক গোলাম মমীতের প্রকাশিত প্রথম বই ‘আমিনুলের ঘরে ওটা কী থাকে?’ নিয়েও চলে আলোচনা।
গল্পে গল্পে কিআ পাঠকেরা পৌঁছে যায় কিআড্ডার শেষ পর্যায়ে। তখনই সভায় যুক্ত হয় ব্যান্ড ‘অবান্তর’। অবান্তর ব্যান্ড নিয়ে একসঙ্গে চলে গল্প আর গান। ব্যান্ডের সদস্য নূর-ই-নাজনীন, হাসান মোহাম্মদ আসিফ ও আমিনুল শাহির শরিফ নিজেদের গানের তালে তালে জমিয়ে তোলেন কিআড্ডা। নিজেদের মৌলিক গান ‘এলোমেলো’, ‘ঘোর’, ‘বেণিমাধব’–এর মতো চমৎকার সব গান পরিবেশন করে মুগ্ধ করেন শ্রোতাদের। তাঁরা গানের সঙ্গে বাজিয়ে দেখান লোকগীতির প্রচলিত বাদ্যযন্ত্র খমক বা আনন্দলহরি।
আর এভাবেই হইহুল্লোড়ে ভরপুর কিআড্ডা শেষে মন ভালো করার মতো সব রকম টোটকাসহ যে যার বাড়ি ফিরে যায় পাঠকেরা।
সভার আরও ছবি দেখো এই লিংকে।