পড়ালেখায় কতটা মনোযোগী তুমি

বড়রা সব সময় উপদেশ দেয়, মন দিয়ে পড়ালেখা করো। পড়ালেখা করতে কি কারও ভালো লাগে? তোমার ক্ষেত্রে যদি উত্তরটা ‘হ্যাঁ’ হয়, তবে তোমাকে বাহবা জানাই। তবে উত্তর ‘না’ হলেও দোষের কিছু নেই। স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ স্কুল পালাতেন। ভালো লাগুক, কিংবা না-ই লাগুক, পড়ালেখা তো সবাইকে করতেই হয়। পড়ালেখায় মনোযোগ রাখাটাই অনেকের জন্য কষ্টকর। তা তুমি পড়ালেখায় কেমন মনোযোগী? নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও ঝটপট করে। আর স্কোর মিলিয়ে জেনে নাও তুমি কতটা পড়ালেখায় মনোযোগী!

১. ঠিক সন্ধ্যা সাতটায় পড়তে বসবে ঠিক করেছিলে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখো, সাতটা পাঁচ বেজে গেছে। এরপর তুমি যা করবে...

ক. তাড়াতাড়ি বই নিয়ে বসে পড়ব। পড়ালেখা নিয়ে গড়িমসি করা একদম ঠিক নয়।
খ. সাতটা পাঁচ? একেবারে আটটার সময়ই পড়তে বসব। কিন্তু সেটাও যদি আটটা পাঁচ হয়, তাহলে নয়টা...ইয়ে মানে, এভাবে চলতেই থাকে...
গ. আরও খানিকটা সময় গড়িমসি করতে পারি। মানে মিনিট বিশেক, তারপর পড়তে বসব।

২. পড়তে বসার মিনিট দশেক পরেই যে কাজটা করো তুমি...

ক. যে বিষয়টা পড়ছি, সেই বিষয়টা কত কঠিন এবং পড়তে যে একটুও ভালো লাগছে না, সে ব্যাপারটা সবাইকে জানাতে ফেসবুকে একটা ছোটখাটো পোস্ট দিয়ে দিই।
খ. ১০ মিনিট পার হয়েছে, সেটা আমার খেয়ালই থাকবে না। একবার পড়া শুরু করলে আমার আর দিনদুনিয়ার কথা মাথায় থাকে না!
গ. এত পড়ালেখা করে কী হবে? দীর্ঘশ্বাস লুকিয়ে, মনে মনে এমনটা ভাবতে ভাবতে পড়তে থাকব।

৩. পড়তে বসার ঠিক আগমুহূর্তে তোমার যা অবস্থা হয়...

ক. কী কী বিষয় পড়ব, সেই বইগুলো আলাদা করি। সব গুছিয়ে তারপর পড়তে বসি।
খ. সত্যি বলতে কি, কতটুকু সিলেবাস পড়ব, সেটা খাতায় তুলতে তুলতেই আমার আধঘণ্টা, এক ঘণ্টা পার হয়ে যায়...
গ. সবাইকে একবার করে বলতে থাকি, ‘যাই, পড়তে বসি।’ বলতেই থাকি, কিন্তু পড়তে আর বসি না...

৪. পরীক্ষার আগে তোমার অবস্থা কেমন হয়?

ক. দম ফেলার সময় থাকে না। এক রাতে সিলেবাস শেষ করতে গেলে যা হয় আরকি!
খ. সারা বছর কিছুই পড়িনি। এক রাতে পড়ে তো আর পাস করতে পারব না। তাই ধীরে ধীরে যতটুকু পারি, পড়ি।
গ. মাত্র দুইটা রিভিশন দিয়েছি? সব কমন পড়বে কি না, ভেবে আরেক দফা রিভিশন করতে শুরু করি।

৫. পরীক্ষার ফলাফল বের হয়েছে। নম্বর দেখে তোমার যেটি মনে হয়?

ক. আরেহ! পাস করলাম কীভাবে? এ তো অবিশ্বাস্য!
খ. এবারও মোটামুটি নম্বর? পরের পরীক্ষায় একদম দুর্দান্ত করব, হাহ!
গ. অমুক আমার চেয়ে এক বেশি পেয়ে সর্বোচ্চ পেল। কী পড়ালেখা করলাম, আর দুইটা নম্বর যদি বেশি পেতাম!

৬. এর মধ্যে কোন কথাটি তুমি প্রায়ই বলো?

ক. ‘কাল থেকে সত্যি পড়তে বসব!’
খ. ‘পড়ালেখা করতে আর ভালো লাগে না, কেন যে পড়ালেখা শেষ হয় না...’
গ. পরের পরীক্ষায় এক শতে এক শ না পেলে, আমার নাম ব্যাটম্যান না!

৭. ধরো, প্রায় এক মাসের ছুটি পেলে। ছুটিতে পড়ালেখার পেছনে কতটা সময় ব্যয় করবে?

ক. পুরো ছুটিই কাটিয়ে দেব পড়তে পড়তে। এত বড় সিলেবাস নইলে পরে শেষ করতে গিয়ে অবস্থা কাহিল হয়ে যাবে।
খ. ছুটিটা শেষ হওয়ার আগমুহূর্তে মনে পড়বে কত কত পড়া বাকি, তখন পড়তে বসব।
গ. ছুটি মানেই তো পড়ালেখা থেকে ছুটি, শুধু শুধু পড়তে বসব কেন? ক্লাস শুরু হলেই পড়ব।

৮. নিচের কোনটি ঘুম, পড়ালেখা আর তোমার সমীকরণ?

ক. পড়তে বসলেই ঘুম পায় আমার!
খ. আমার পড়ার টেনশনেই ঘুম উধাও হয়ে যায়!
গ. পড়াটা ঠিকঠাক শেষ হলেই আরাম করে একটা ঘুম দেব।

৯. নিচের কোনটি গান, পড়ালেখা আর তোমার সমীকরণ?

ক. মাঝেমধ্যে গান শুনতে শুনতে পড়ি কিংবা অঙ্ক করা বা লেখার কাজগুলো করি। তবে খেয়াল রাখি যেন পড়ার ক্ষতি না হয়...
খ. আর বলবেন না, পড়তে বসলেই মাথায় একটা না একটা গান বাজতে শুরু করে। কেন যে আমার সঙ্গেই এমন হয়?
গ. পড়ার মধ্যে গান শোনার জন্য বিরতি নিই। একটা গান শুনে পড়তে বসব ভাবলেও শেষে গিয়ে পাঁচ–ছয়টা গান শুনে খেয়াল হয়, এখন পড়া দরকার!

১০. অনেকেই মনে করেন, কারও মনোযোগই খুব বেশিক্ষণ থাকে না। তাই পড়ার সময় বিরতি নিয়ে পড়া ভালো। সাধারণত তুমি কতটা সময় পড়ার বিরতি নাও?

ক. আমার পড়ালেখা একদম গোছানো। তিন–চার ঘণ্টা পড়ার পর ১০–১৫ মিনিট বিরতি নিই। অবশ্য মাঝেমধ্যে বিরতি নিতেও ভুলে যাই।
খ. বিশ্বাস করুন, ইচ্ছা করে না...১০ মিনিট বিরতি নিতে গিয়ে কখন যে সেটা এক ঘণ্টা হয়ে যায়।
গ. আমি সারাক্ষণই পড়ার বিরতিতে থাকি। বিরতির ফাঁকে ফাঁকে ১০–১৫ মিনিট পড়ি।

নম্বর

১. ক. ১০ খ. ০ গ. ৫
২. ক. ০ খ. ১০ গ. ৫
৩. ক. ১০ খ. ৫ গ. ০
৪. ক. ৫ খ. ০ গ. ১০
৫. ক. ০ খ. ৫ গ. ১০
৬. ক. ০ খ. ৫ গ. ১০
৭. ক. ১০ খ. ৫ গ. ০
৮. ক. ০ খ. ১০ গ. ৫
৯. ক. ১০ খ. ০ গ. ৫
১০. ক. ১০ খ. ৫ গ. ০

তুমি যেখানে দাঁড়িয়ে

০–৪০: মনবিয়োগী বলে কোনো শব্দ আছে? পড়ালেখার ক্ষেত্রে তোমার মনো‘যোগ’ তো দূরে থাকুক, ‘বিয়োগ-গুণ-ভাগ’ কিছুই নেই যেন! পড়তে বসলেই তোমার এটা–সেটা, হাজারটা কথা মনে পড়তে থাকে। এমন না তুমি একেবারেই পড়তে চাও না, কিন্তু পড়ায় মনটাই দিতে পারো না। যতই ঠিক করো, কাল থেকে পড়তে বসবে, এই আগামীকালটা যেন আসেই না। পড়ি পড়ি করেও আর পড়া হয় না। তোমাকে এক শতে এক শ পাওয়ার মতো মন দিয়ে পড়তে বলছি না, কিন্তু পড়ালেখায় মন দেওয়াটা তোমার জন্য সত্যিই জরুরি। পড়ালেখা করতে কারোরই ভালো লাগে না, কিন্তু করতে তো হবে বলো? তাই মনোযোগী হও।

৪৫–৭০: পড়ালেখায় তুমি মোটামুটি মনোযোগী। অনেক সময় ধরে তোমার মনোযোগ থাকে না এটা ঠিক, কিন্তু বিরতি নিয়ে পড়ো তুমি, আর কোনো না কোনোভাবে সিলেবাসটা সামাল দিয়ে ফেলো। তবে মাঝেমধ্যে পড়ালেখায় মনোযোগের ভারসাম্য রাখাটা তোমার জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। তাই আরেকটু মনোযোগী কিন্তু হতেই পারো তুমি।

৭৫-১০০: আরে, তুমিই তো প্রকৃত পড়ালেখায় মনোযোগী! এত মন দিয়ে খুব কম মানুষই পড়ালেখা করতে পারে। কিন্তু তোমার আবার আরেক সমস্যা। অনেক সময় তুমি ভালো ফল করেও মন খারাপ করে ফেলো। মাঝেমধ্যে তুমি এতই মন দিয়ে পড়তে থাকো যে তোমার পাশ দিয়ে স্বয়ং আইনস্টাইন হেঁটে গেলেও তুমি টের পাবে না! পড়তে পড়তে দিনদুনিয়ার কথা ভুলে গেলেও কিন্তু চলবে না। সব দিকেই ভারসাম্য রাখতে হবে।