নিজেকে জানো
তুমি কতটা ঘুমকাতুরে
‘ঘুমপাড়ানি মাসি–পিসি’কে দিনে এক শ–বার নেমন্তন্ন করলেও নাকি তারা পাত্তা দেয় না কাউকে কাউকে। আবার কেউ নাকি চোখ বন্ধের শূন্য দশমিক ১১ ন্যানো সেকেন্ডের মধ্যে ঘুমিয়ে নাক ডেকে আবার স্বপ্নের রাজ্যেও চলে যায়। কেউ মুখ হাঁ করে ঘুমায়, কেউ মুখ ঢেকে ঘুমায়। কেউ আবার কোলবালিশ, চাদর নিয়ে আরাম করে ঘুমায়। সবকিছুকে ছাপিয়ে যায় কারা? যাদের চোখে সারা দিনই লেগে থাকে ঘুম। তুমিও কি সেই দলে পড়ো? বেশি ভাবতে হবে না, প্রশ্নের উত্তর দিয়ে স্কোর মিলিয়ে নাও। আর জেনে নাও তুমি কতটা ঘুমকাতুরে মানুষ।
১. সকাল সাতটা। অ্যালার্মের ‘ক্রিং ক্রিং’। তোমার মনোভাব যা হয়—
ক. সকাল সাতটা? আমি তো ঘুমাতে যাই ভোরের দিকে। সারা রাত ঘুম হয় না যে!
খ. উঠে পড়ব। একবার অ্যালার্ম বাজতেই আমি ঘুম থেকে উঠে পড়ি।
গ. অ্যালার্ম বন্ধ করে আবার ঘুম দেব। কিংবা আর মাত্র পাঁচ মিনিট করতে করতে এক দুই ঘণ্টা দেরি করব।
২. আকাশে ঘন কালো মেঘ। এমন আবহাওয়া যেন একটু পরেই বৃষ্টি নামবে। শীত শীত ভাব। এ রকম আবহাওয়ায় তুমি যা করো—
ক. আপনি কি আমাকে কিছু বলছেন? দেখুন আমি ঘুমে থাকি, আমার এসব হিসাব থাকে না। আবহাওয়া এমন হলে যে ঘুমটা দেব ভেবেই এখনই আমার ঘুম পাচ্ছে।
খ. এ রকম আবহাওয়া উপভোগ করার সৌভাগ্য কি আর আমার আছে? পড়ালেখা করতে হয় তো!
গ. অস্বীকার করব না এমন আবহাওয়ায় সুযোগ পেলে একটু ঘুমাব কিংবা মুভি দেখব, কিন্তু কাজ থাকলে সেটাকেই অগ্রাধিকার দেব।
৩. ধরো, তোমাকে একটা সুযোগ দেওয়া হলো। তোমাকে কোনো কারণ ছাড়াই তোমার প্রিয় খাবার ট্রিট দেওয়া হবে অথবা তোমাকে লম্বা একটা সময় ঘুমাতে দেওয়া হবে। খুবই আরামদায়ক একটা পরিবেশে। তুমি কোনটা বেছে নেবে?
ক. দেখুন, আমার ঘুম বা খাওয়াদাওয়া নিয়ে খুব একটা মাথাব্যথা নেই। না হয় ঘুম, না হয় ঠিকমতো খাওয়াদাওয়া।
খ. কোথায়? কখন? কে দিচ্ছে সুযোগটা। তাকে ‘ধন্যবাদ মশাই’ বলে এখনই সুযোগটা কাজে লাগাতে চাই।
গ. অবশ্যই খাবার নেব। এত না ঘুমালেও চলে, তবে প্রিয় খাবার হাতছাড়া করা একবারেই ঠিক হবে না।
৪. প্রতি ঘণ্টা ঘুমের জন্য যদি এক শ টাকা করে দেওয়া হতো, তবে আমার অর্থের পরিমাণ দাঁড়াত—
ক. বিল গেটসকে চেনেন? তাঁর অর্থের পরিমাণ কত? আমার তাঁর চেয়েও তিন গুণ বেশি থাকত। কারণ আমি সারা দিন ঘুমাই!
খ. ভাগ্যিস, এ রকম কিছু সত্যি ঘটবে না! কারণ, আমি তো খুব বেশি ঘুমাই-ই না।
গ. আমি সুযোগ পেলেই ঘুমাই। কিন্তু তার মানে এই না বহু টাকাপয়সার মালিক হয়ে যাব।
৫. চোখ বন্ধ করার ঠিক কত সময় পর তুমি ঘুমিয়ে পড়ো?
ক. সারা রাত জেগে থাকি। এপাশ–ওপাশ করি। তখন ঘুম হয় না। কিন্তু সকাল হলেই ঘুম পায়।
খ. সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ২০ মিনিট লাগে বোধ হয়।
গ. আমার জন্য প্রশ্নটা খুবই উল্টো হবে। ঠিক কত সময়ের জন্য আমার চোখ খুলে থাকে, এটাই আমার ভাবার বিষয়!
৬. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা কোনো কাজের স্থানে, যাওয়ার পর থেকেই তোমার যে বিষয়টি মাথায় ঘুরতে থাকে—
ক. কখন ঘুমাব! কখন বাসায় যাব, আর আমার বালিশটা মাথার নিচে দিয়ে একটা ঘুম দেব।
খ. আমি যখন যেখানে যাই, সেখানে সেই সম্পর্কিত বিষয়গুলোকেই প্রাধান্য দিই। অন্য কিছুর কথা মাথায় আসে না।
গ. খুব একঘেয়ে পরিস্থিতি হলে ঘুমের কথা ভাবি, অন্যথায় আনন্দ নিয়ে সেই পরিস্থিতিতেই মনোযোগ দিই।
৭. ছুটির দিনে যে কাজটা করতে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসো তুমি—
ক. খেলাধুলা! কিংবা যেকোনো ধরনের কাজ, যেটাতে শরীর ও মন উজ্জীবিত থাকে।
খ. ছুটির দিনের সমার্থক শব্দ ঘুম না? আমি তো তা–ই জানি। ওটাই আরকি। ঘুমাব।
গ. নিজেকে বিশ্রাম দেব। তবে খুব বেশি অলস সময়ও আমি কাটাতে পারি না।
৮. ঘুমানোর সময় তুমি যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখো—
ক. পুরো ঘরটা অন্ধকার থাকা চাই। কোলবালিশ থাকা চাই। নইলে আমার ভালো ঘুম হয় না।
খ. আমাকে ইটের ওপর ঘুমাতে দিলেও আমি ঘুমাতে পারব। শুধু এটুকু নিশ্চিত করা জরুরি, কেউ যেন বিরক্ত না করে!
গ. ঘুম নিয়ে আমার এত গবেষণা নেই। আমি জানি, যা-ই করি না কেন, আমার সহজে ঘুম আসবে না।
৯. ঘুম থেকে উঠে শুনলে নতুন নিয়ম জারি হয়েছে। এখন থেকে পাঁচ ঘণ্টার বেশি ঘুমানো যাবে না। তুমি যেটা করবে—
ক. আবার ঘুমিয়ে পড়ব। এমন কথা আমি দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারি না।
খ. পাঁচ ঘণ্টা? এত সময় মানুষ ঘুমায় কীভাবে?
গ. আমি সচরাচর সাত ঘণ্টা ঘুমাই, একটু এদিক–সেদিক করে ঠিক মানিয়ে নিতে পারব।
১০. ঘুমানোর আগে যে কাজটা করো তুমি—
ক. বই পড়ি! তাহলে মিনিট দশেকের মধ্যেই ঘুম চলে আসে আমার।
খ. মোবাইল নিয়ে থাকি। এরপর ঘুম আসে না। এপাশ–ওপাশ করি।
গ. ঘুমাই। আমি ঘুমানোর আগে ঘুমাই। ঘুম থেকে উঠে আবার ঘুমাই। ঘুমাতেই থাকি। ঘুম ছাড়া কী আছে জীবনে?
নম্বর
১. ক. ০ খ. ৫ গ. ১০
২. ক. ১০ খ. ০ গ. ৫
৩. ক. ০ খ. ১০ গ. ৫
৪. ক. ১০ খ. ০ গ. ৫
৫. ক. ০ খ. ৫ গ. ১০
৬. ক. ১০ খ. ০ গ. ৫
৭. ক. ০ খ. ১০ গ. ৫
৮. ক. ৫ খ. ১০ গ. ০
৯. ক. ১০ খ. ০ গ. ৫
১০. ক. ৫ খ. ০ গ. ১০
তুমি যেখানে দাঁড়িয়ে
০–৪০: ঘুম নিয়ে এত অবহেলা? ‘পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজনীয়তা’ বিষয়ে একটু পড়ালেখা করে দেখতে পারো। ঘুম মানুষকে বিশ্রাম দেয়। আর পর্যাপ্ত বিশ্রাম না পেলে কিন্তু শরীর ও মন দুটিই খারাপ করে। সারা রাত জেগে থেকে সকালের দিকে ঘুমাতে যাওয়া, এরপর সারা দিন ক্লান্তি বা অবসাদ অনুভব করা কিন্তু মোটেও কোনো কাজের কথা না। ঘুমের খুব বেশি অনিয়ম হলে সেখান থেকে ইনসমনিয়ার মতো রোগ হতে পারে। কাজেই নিজের ঘুমের রুটিন ঠিক করে পর্যাপ্ত বিশ্রাম দাও নিজেকে।
৪৫–৭০: তুমি খুবই আরামপ্রিয় মানুষ। সুযোগ পেলে ঘুমাতে কে ছাড়ে? তবে ঘুমকে অগ্রাধিকার দিয়ে বাদবাকি সবকিছু ভুলে থাকার মানুষ আবার তুমি নও। কাজের সময় কাজ আর ঘুমের সময় ঘুম। মাঝেমধ্যে অবশ্য ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়ে যায় তোমার। তবে সেটা সবারই হতে পারে। তুমি ভারসাম্য বজায় রেখে ঘুমপ্রিয় মানুষ।
৭৫-১০০: এই যে! একটু চোখ তুলে তাকাও? প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে আবার ঘুমিয়ে পড়লে নাকি? তোমার মতো ঘুমকাতুরে মানুষের জুড়ি মেলা ভার। অনেক মানুষের চোখে ঘুমই আসে না, আর তোমার অবস্থা? টম অ্যান্ড জেরির টমের মতো। আঠা দিয়ে চোখের পাতা কপালের সঙ্গে লাগিয়ে রাখলেও তোমার চোখ বন্ধ হয়ে যায়। নাওয়া-খাওয়া সব ভুলে তুমি ঘুম নিয়েই থাকো। এমনকি ঘুমের রাজ্যে নির্বাচন করলে তুমিই হবে প্রধানমন্ত্রী! এত ঘুমানোও কিন্তু ভালো নয়, ঘুম রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী সাহেব! অতিরিক্ত ঘুমানো স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বলেই বলছি, পর্যাপ্ত ঘুমের পাশাপাশি নিয়ম মেনে চলা উচিত।