৫ বলে ১১ রান দরকার। বাংলাদেশ বনাম ইংল্যান্ডের খেলা। ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ। বল করতে আসছে...কী, ক্রিকেট ম্যাচের কথা শুনেই তোমার মুখটা এক শ ওয়াট বাল্বের মতো উজ্জ্বল হয়ে গেল? নাকি মুখটা একদম ভার করে ফেললে? ঠিক আছে। তোমার ক্রিকেট কতটা ভালো লাগে, সেটা আর ভেবে বের করতে হবে না। নিচের প্রশ্নগুলোর ঝটপট উত্তর দাও। আর স্কোর মিলিয়ে জেনে নাও, তুমি কতটা ক্রিকেটপ্রেমী!
১. ইংল্যান্ড বনাম অস্ট্রেলিয়ার সিরিজ চলছে। অ্যাশেজ। তুমি যা করবে—
ক. অ্যাশেজ আবার কী? নিজের দেশের খেলা হলেই খুব একটা দেখা হয় না, আর অ্যাশেজ দেখতে যাব কোন দুঃখে?
খ. স্কোর জানব। কিন্তু খেলা হয়তো দেখব না।
গ. অ্যাশেজ হবে আর আমি দেখব না? প্রতিটি ম্যাচই আগ্রহ নিয়ে দেখব।
২. বাংলাদেশের উইকেট চলে গেছে পাঁচটা। জিততে এখনো অনেক রানের প্রয়োজন। আশার কথা, সাকিব এখনো মাঠে আছেন। আশা নিয়ে খেলা দেখছ, এমন সময় সাকিবের উইকেট পড়ল। তোমার প্রতিক্রিয়া যা হয়—
ক. কষ্ট পাব, আশাহত হয়েই খেলা দেখতে থাকব। কিন্তু ধরে নেব ম্যাচটা আর আমাদের হাতে নেই।
খ. ধুর! কষে কয়েকটা গালি দেব আগে। খেলাই দেখব না আর...এসব খেলা দেখে মেজাজ খারাপ করার কোনো কারণ নেই।
গ. হিসাব কষব কত বলে কত করে নিলে ম্যাচটা আমরা জিততে পারি। আশা ছাড়ব না, শেষ বল অবধি খেলা দেখব।
৩. তুমি টিকিট খুঁজছ। কিন্তু পাচ্ছ না। তোমার ক্লাসের কোনো একটা মেয়ে হয়তো সেই ম্যাচটির টিকিট পেয়েছে। এ নিয়ে তুমি মনোভাব যা দেখাবে—
ক. ওকে গিয়ে বলব, আমি টিকিটটা কিনতে চাই। ক্রিকেট যে আমার ধ্যানজ্ঞান, এটা সবাই জানে। পেলে তো ভালোই। না পেলে কী আর করা, টিভিতেই দেখে নেব।
খ. আমার চেয়ে খেলা ভালো আর কেউ বোঝে নাকি? টিকিটটার অপচয় হচ্ছে ভেবেই বিরক্ত হব।
গ. টিভিতেই খেলা দেখি না, আবার স্টেডিয়ামে শখ করে টিকিট কেটে দেখতে যাব কেন?
৪. তোমার প্রিয় দল মাত্র দুই রানের জন্য হেরে গেল...
ক. কষ্ট পাব, কিন্তু সেটা নিয়ে খুব বেশি মাথা ঘামাব না।
খ. দুই রান? আগামী দুই দ্বিগুণে চার দিন আমার মুখ আর কেউ দেখবে না। নিজের ঘরে বসে থাকব। খেলাটা নিয়ে ভাবনা চলতেই থাকবে...
গ. এটা তো একটা খেলামাত্র। হার–জিত নিয়ে এত ভাবার কী আছে? অন্য কাজে মন দেব।
৫. খেলা দেখতে গেলেই তুমি যে বিষয়গুলো লক্ষ রাখো—
ক. আমি খেলা দেখলে প্রিয় দল হারে, তাই মাঝেমধ্যে সেটা মাথায় রেখে খেলা দেখি না। স্কোর জানতে থাকি শুধু।
খ. আমি আমার লাকি জার্সি বা জামাটা পরে নিই। আমি খেলা না দেখলে তো আর প্রিয় দল জিতবে না। তা ছাড়া, খেলার মধ্যে কোন বিজ্ঞাপনটা দিলেই উইকেট পড়ে, এসবও লক্ষ করতে থাকি!
গ. খেলাটা বেশি বিরক্তিকর যেন না লাগে, তাই মোবাইল বা খাবারদাবার হাতের কাছে রাখি!
৬. খেলায় টানটান উত্তেজনা। দুই বলে চার রান দরকার। তাহলেই কাপ জিতবে বাংলাদেশ। এ রকম মুহূর্ত সামলাও যেভাবে—
ক. চোখ বন্ধ করে একটানা প্রার্থনা করতে থাকি। এ ছাড়া তো কিছু করার নেই!
খ. ফেসবুকে পোস্ট করতে থাকি। নইলে বন্ধুকে ফোন দিতে থাকি। খেলার টেনশন কমাতে চেষ্টা করি।
গ. খেলা বন্ধ করে বসে থাকব। তারপর স্কোর শুনব। এত টেনশন নেওয়ার কিছু নেই।
৭. পরীক্ষার জন্য বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ম্যাচ মিস করে ফেললে। কিন্তু পরীক্ষা শেষে জানতে পারলে, বাংলাদেশ জিতেছে। এ ক্ষেত্রে তুমি যা করো
ক. ম্যাচের ফলাফল জেনে খুশি হব। আর কী করব?
খ. এমন একটা ম্যাচ মিস! আফসোস লাগবে, পুরো ম্যাচ এসে আবার অনলাইনে দেখব।
গ. সময় পেলে শুধু হাইলাইটস দেখব। নইলে খবর পড়ে নেব, কে কেমন করেছে।
৮. খেলা চলছে। কিন্তু তুমি ঘরের বাইরে। সে ক্ষেত্রে কী করো?
ক. খেলা খেলার মতো চলুক। আমি আমার মতো চলব। বাসায় থাকলেও যে খেলা দেখতাম, তা তো না!
খ. আমি তো আগে থেকেই ব্যাকআপ রাখি। খেলার স্কোর জানার জন্য কোন ওয়েবসাইটে বা রেডিওতে খোঁজ রাখতে হবে, এসব জেনেই বের হব। তবে একটা সিক্রেট বলি? খেলার দিন আমি সহজে ঘরে থেকেই বের হই না, স্টেডিয়াম যেতে হলে ভিন্ন কথা।
গ. যে কাজে যাচ্ছি, সে কাজে মন দেব। তবে সুযোগ থাকলে খেলার খবর রাখব।
৯. মনে করো, ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কোনোভাবে তোমার দেখা হওয়ার সুযোগ মিলল। এই দিকে লর্ডসে খেলা দেখারও একই দিনে সুযোগ পেলে। তুমি কোনটি বেছে নেবে?
ক. ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করে আমি কী করব? আমার স্বপ্ন রীতিমতো লর্ডসের মাটিতে একবার হলেও খেলা দেখব। অবশ্যই সেই সুযোগ বেছে নেব।
খ. পৃথিবীর অন্যতম ক্ষমতাধর মানুষটার সঙ্গে দেখা করার সুযোগ নেব। খেলার স্কোর জানলেও তো চলবে। এমন সুযোগ তো প্রতিদিন আসে না!
গ. দুইটার একটাও খুব একটা আহামরি মনে হচ্ছে না। তবে খেলা দেখার চেয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করা ভালো।
১০. প্রিয় ক্রিকেটারের সঙ্গে তোমার দেখা হলো। তুমি কী করবে?
ক. ওই গানটা শোনেননি, ‘আমি জ্ঞান হারাব, মরেই যাব...’? আসলে কী করব, মাথার ঠিক থাকবে না।
খ. আমার তো কোনো ক্রিকেটারই সেভাবে প্রিয় না। তবু বন্ধুদের দেখাতে ফটো তুলব।
গ. অটোগ্রাফ আর ফটোগ্রাফ একদম নিশ্চিত নিচ্ছি। আরও সময় পেলে গল্প করব।
নম্বর
১. ক. ০ খ. ৫ গ. ১০
২. ক. ৫ খ. ০ গ. ১০
৩. ক. ১০ খ. ৫ গ. ০
৪. ক. ৫ খ. ১০ গ. ০
৫. ক. ৫ খ. ১০ গ. ০
৬. ক. ১০ খ. ৫ গ. ০
৭. ক. ০ খ. ১০ গ. ৫
৮. ক. ০ খ. ১০ গ. ৫
৯. ক. ১০ খ. ৫ গ. ০
১০. ক. ১০ খ. ০ গ. ৫
তুমি যেখানে দাঁড়িয়ে
০–৩০: আচ্ছা, তামিম ইকবালকে তো চেনো? পারলে বলো তো তামিম ইকবালকে কোন সুপারহিরোর সঙ্গে তুলনা করা যায়? পারছ না? কেন, ‘ব্যাটম্যান’–এর সঙ্গে! আচ্ছা, খুব সহজ জোক করলাম দেখে বিরক্ত হোয়ো না। তুমি একদমই ক্রিকেটপ্রেমী না। তাই একটা জোক বলে দেখলাম, অন্তত ক্রিকেট নিয়ে জোক তোমার ভালো লাগে কি না! তাতেও গুড়ে বালি। তুমি ক্রিকেট পছন্দ তো করোই না, বরং ক্রিকেট নিয়ে আলোচনা শুনলেও সেখান থেকে কেটে পড়ো। কখনো কখনো তুমি এটাও ভাবো যে ক্রিকেটের চেয়ে ফুটবলটাই ভালো।
৩৫–৫০: তুমি খুব একটা ক্রিকেট দেখো না। তবে নিজ দেশের খেলা হলে ভিন্ন বিষয়। তখন আবার স্কোরটার ঠিকই খোঁজখবর রাখো। কোনো কোনো সময় দেখোও বটে! তবে তুমি যে দলকে সমর্থন করো, সেটিকে হারের পথে দেখলেই বিরক্ত হয়ে খেলা দেখা ছেড়ে দাও। আবার বিশ্বকাপ এলে খেলা দেখো। অনেক সময় তুমি খেলা নিয়ে খুব একটা ভাবো না। কিন্তু সবাই দেখছে বা আলোচনা করছে, তাই তোমাকেও করতে হবে, এমনটা ভেবে খেলা নিয়ে কিছুটা আগ্রহ দেখাও। তোমাকে সিজনাল ক্রিকেটপ্রেমী বলা যেতে পারে বড়জোর।
৫৫-৭০: তুমি খেলা দেখো, খেলা বোঝো, আবার খেলা নিয়ে আলাদা গবেষণাও করো। তুমি ক্রিকেট শুধু ভালোবাসো এমন নয়, ক্রিকেট খেলতেও পছন্দ করো। শুধু ক্রিকেট খেলাই নয়, এর বাইরেও তোমার মাথায় থাকে, কবে কোন সিরিজে কে জিতেছিল, কে হোয়াইট ওয়াশ হয়েছিল। তোমাকে সমঝদার ক্রিকেটপ্রেমী বলা যায়। তবে এটাও অস্বীকার করা যাবে না, মাঝেমধ্যে এর পরের বলে কী হবে কিংবা ম্যাচের প্রেডিকশন করতে গিয়ে খেলা দেখার মূল মজাটাই নষ্ট করে ফেলো। তোমার এ প্রবৃত্তিও আছে, তুমিই খুব ভালো ক্রিকেট বোঝো, বাকিরা বোঝে না। যেটা পরিবর্তন করা জরুরি।
৭৫-১০০: আচ্ছা, লর্ডসের সেই ম্যাচটার কথা মনে আছে? তামিম ইকবাল যে সেঞ্চুরি করল? কাকে কী প্রশ্ন করছি, তোমার মনে না থাকলে আর কার মনে থাকবে? তুমি ক্রিকেটপ্রেমী নও শুধু, ক্রিকেট–পাগলও বটে! যেকোনো ক্রিকেট সিরিজের অভ্যন্তরীণ খবর বলে দিতে পারো তুমি। ক্রিকেট নিয়ে এমনই পাগল তুমি যে বিশ্বকাপের আগে নিজের পছন্দের একাদশ নিজেই তৈরি করে ফেলো। নাওয়া-খাওয়া বাদ দিয়ে সারা দিন ক্রিকেট নিয়ে পড়ে থাকো। আর পছন্দের দল হারলে তো সেদিন কোনো কথাই নেই! ক্রিকেট যে একটা খেলা, এটা তুমি ভাবতে পারো না। খুব বেশি সিরিয়াসলি নিয়ে ফেলো। ক্রিকেট নিয়ে অন্য রকম আবেগ কাজ করে তোমার মধ্যে। তোমাকে ক্রিকেটবোদ্ধা বলাই যায়, তবে ক্রিকেট নিয়ে সারা দিন পড়ে থাকার ফলে অন্য সবকিছুতে পিছিয়ে পড়ো না যেন!