ঘরে থাকার দিনলিপি
মার্চ ১৭, ২০২০—জুন ২৭, ২০২০; এই সময়ের মধ্যে আমি একমুহূর্তের জন্যও বাইরে বের হইনি। এই কীর্তির জন্য আমি আমার নিজস্ব ‘গিনেস ডায়েরি’তে একটা রেকর্ড করে ফেলেছি। ক্রিকেট মাঠে সেঞ্চুরি করতে না পারলেও রীতিমতো সেঞ্চুরি করে ফেলেছি ঘরে থাকার। টানা ১০৩ দিন ঘরে! কয়েক মাস আগে এ ধরনের কথা কেউ বললে হেসেই উড়িয়ে দিতাম। বিশ্বাসই হয় না মাঝেমধ্যে। প্রথমে ভেবেছিলাম, যাক, স্কুল নেই, টিচার নেই, সারা দিন টিভি, ঘুম আর খাওয়া। যেখানে আমি রোজ ছয়টায় ঘুম থেকে উঠতাম, সেখানে এখন আটটা ছাড়া উঠতেই পারি না। তবে দিনগুলো খুব একটা খারাপও লাগছে না। টিভিতে ক্লাস হয়। বন্ধুদের সঙ্গে মোবাইলে কথা হয়। গান শুনে, মুভি দেখে সময় কেটে যাচ্ছে। আর বই পড়তে আমার এমনিতেই একটু সময় লাগে। তবু এই দিনগুলোতে প্রায় ৪৫টি বই পড়েছি। শুরুর সবচেয়ে বড় কথা হলো, বাসায় সবাই একসঙ্গে আছি। এ রকম এত দিন কখনো একসঙ্গে ছিলাম বলে মনে পড়ে না। তবে একটা সমস্যা হচ্ছে। তা হলো সবকিছু ভুলে যাচ্ছি। দিন, তারিখ—সব। দিন মোটামুটি ভালোই যাচ্ছে। তবু মাঝেমধ্যে মনটা খারাপ হয়ে যায়। যেদিন ভারী বৃষ্টি হয়, সেদিন আকাশে কালো মেঘ জমে, তখন জানালার পাশে বসে ওপরে তাকিয়ে নিজে নিজেই বলি, আচ্ছা, পৃথিবীর আকাশ থেকে এই কালো মেঘ কবে যাবে?
লেখক : শিক্ষার্থী, অষ্টম শ্রেণি, পটুয়াখালী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, পটুয়াখালী