প্রিয় মনোবন্ধু,
আমি জানি না, তোমরা আমার এ সমস্যায় সাড়া দেবে কি না। তবু বলছি। আমার একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট আছে। যখন যার ফোন পাই, তার ফোনেই ফেসবুকে লগইন করি। আমার নিজের ফোন নেই। আমি অষ্টম শ্রেণিতে পড়ি। তাই আম্মু ফোন কিনে দেবে না এই বয়সে। সমস্যা হলো, ফেসবুকে অযথা সময় নষ্ট করি আমি। সারা দিন অ্যাকটিভ থাকি, সারা রাতও। এমন কোনো রাত নেই, যে রাতে আমার ঠিকমতো ঘুম হয়। সব সময় ফেসবুকে অ্যাকটিভ। এতে দেখছি, পড়াশোনায় আর মন দিতে পারছি না। পড়তে বসলে ফেসবুক নিয়ে নানা চিন্তা আসে। আরও বড় সমস্যা হলো আম্মু খুব সন্দেহ করে। আগে জানত না আমার ফেসবুক আইডি আছে। আম্মু এখন আর আমাকে ফোন ধরতে দেয় না। পড়াশোনায় মন দিতে পারি না। আর আম্মু আমাকে এত সন্দেহ করে যে ঠিকমতো বাইরে প্রাইভেটেও যেতে দেয় না। ৫ মিনিট দেরি হলেই নানা প্রশ্ন করে আমাকে। এখন এমন অবস্থা যে প্রাইভেট বন্ধ হওয়ার উপক্রম। একটা সমাধান দাও।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
বিএল সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, সিরাজগঞ্জ
উত্তর: ফেসবুক বা ইন্টারনেটের অধিক ব্যবহার সেটার ওপর আসক্তি জন্মায়। আর আসক্তি জন্মালে দৈনন্দিন কাজের ক্ষতি হয়, পড়ালেখার ক্ষতি হয়, চিন্তা আর আচরণের সমস্যা দেখা দেয়। তুমি খেয়াল করে দেখো তোমার ঘুমের সমস্যা হচ্ছে, নানা চিন্তা মাথায় আসে, পড়াশোনায় মন দিতে পারছ না। এ অবস্থায় তোমাকে অবশ্যই ফোনের ব্যবহার বন্ধ রাখতে হবে, ট্যাব বা ল্যাপটপ—কোনো মাধ্যমেই ফেসবুক ব্যবহার করবে না। কমপক্ষে চার-ছয় মাস এ অবস্থায় থেকে নিজেকে প্রশ্ন করবে তুমি দায়িত্বশীলভাবে, নির্দিষ্ট সময় মেনে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারছ কি না। যদি না পারো, তবে আরও বেশি সময় ইন্টারনেট থেকে দূরে থাকো। যখন তুমি ও তোমার অভিভাবক মনে করবে যে তুমি যথেষ্ট দায়িত্বশীলভাবে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে সক্ষম, তখন কেবল তা ব্যবহার শুরু করবে। দায়িত্বশীল ইন্টারনেট ব্যবহারের অর্থ হচ্ছে প্রয়োজন অনুযায়ী ইন্টারনেট ব্যবহার করা, সীমিত সময় ফেসবুক ব্যবহার করা এবং কোনো কারণে ব্যবহার করতে না পারলে অস্থিরতা অনুভব না করা। সেই সঙ্গে মনে রাখতে হবে যে ইন্টারনেট ব্যবহারের কারণে যেন পড়ালেখা, ঘুম বা আচরণের কোনো নেতিবাচক পরিবর্তন না হয়। মাকে বুঝিয়ে বলো, আমাদের পরামর্শ তাঁকে পড়ে শোনাও, তিনি যেন তোমাকে মিথ্যা সন্দেহ না করেন, সে বিষয়ে তাঁর প্রতি আমাদের পরামর্শ রইল। প্রাইভেট বন্ধ করলে তো তোমার পড়ার ক্ষতি হবে, তাই মা-বাবার তত্ত্বাবধানে প্রাইভেট পড়তে যেতে পারো।
এই বিভাগে তোমরা তোমাদের মানসিক নানা সমস্যা, যা তোমার শিক্ষক, মা-বাবা বা অন্য কাউকে বলতে পারছ না, তা আমাদের লিখে পাঠাও। পাঠানোর ঠিকানা—মনোবন্ধু, কিশোর আলো, ১৯ কারওয়ান বাজার, ঢাকা। ইমেইল করতে পারো [email protected]-এই ঠিকানায়। ইমেইলে পাঠাতে হলে সাবজেক্টে লিখবে - ‘মনোবন্ধু’, তারপর তোমার সমস্যাটি ইউনিকোড ফরম্যাটে লিখে পেস্ট করে দেবে মেইলের বডিতে। নাম, বয়স লিখতে ভুলবে না। তোমার সমস্যা বোঝার ক্ষেত্রে এগুলো গুরুত্বপূর্ণ।