আমার কষ্ট বোঝার মতো কেউ নেই

আমার বয়স ১৬ বছর। কিছুদিন আগে ক্যানটিনে খেলতে গিয়ে মারাত্মক দুর্ঘটনার শিকার হই আমি। আমার নাকটা বিকৃত হয়ে যায়। নাক ও গালে প্রায় ২৫টি সেলাই লেগেছিল। এখন আমি মোটামুটি সুস্থ। লেখাপড়া করছি। যেহেতু হোস্টেলে থাকি, তাই আমার কোনো বন্ধু নেই। মা-বাবা দূরে। হয়তো ফোনে যোগাযোগ হয়। আমার কষ্ট বোঝার মতো কেউ নেই। আমি যখন কলেজের উদ্দেশে বের হই, অনেকেই আমার দিকে তাকিয়ে থাকে। খুব খারাপ লাগে আমার। তাই নিচের দিকে তাকিয়ে হাঁটি আমি। পড়তে বসলে মাঝেমধ্যে যখন ঘটনাটা মনে পড়ে, পড়ায় আর মন বসে না। এমনকি ঘুমাতে গেলেও মনে পড়ে একই কথা। নিজের পুরোনো ছবি দেখে আফসোস হয়। নিজেকে সব সময় লুকিয়ে রাখতেই পছন্দ করি আমি। মাঝেমধ্যে কান্না আসে, তবে আমার অনুভূতিটা আমিই বুঝি। জানি না এর কারণ কী!

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

উত্তর: আমি তোমার মনের অবস্থা বুঝতে পারছি। তুমি কত দিন হলো এ অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছ? সময়টা নির্দিষ্ট করে জানালে আমার বুঝতে সুবিধা হতো। ছোট্ট একটা চিঠিতে পুরোটা বোঝা যায় না। আমার মনে হয়, তুমি শারীরিক ও মানসিক চাপের মধ্যে আছ। এ অভিজ্ঞতা তোমার শরীর ও মনের ওপর গভীর ছাপ ফেলেছে। এই দুর্ঘটনার পরবর্তী মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা, ভয় ও হতাশা অনেকের ক্ষেত্রে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাবা-মা, ভাইবোন, বন্ধু ও আপনজনদের সান্নিধ্য ও ভালোবাসায় অনেকটা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। তুমি হোস্টেলে থাকার কারণেও বেশি কষ্ট পাচ্ছ। আমার মনে হচ্ছে তোমার এখনকার অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য কাউন্সেলিং প্রয়োজন। অভিজ্ঞ কাউন্সেলরের সহযোগিতায় তুমি কেমন করে আবেগকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, হীনমন্যতা এড়িয়ে নিরাপদ থাকা যায়, কেমন করে নিজের নরম কোমল মনটির যত্ন নেওয়া যায়, এসব দক্ষতা অর্জন করতে পারবে।

এই বিভাগে তোমরা তোমাদের মানসিক নানা সমস্যা, যা তোমার শিক্ষক, মা-বাবা বা অন্য কাউকে বলতে পারছ না, তা আমাদের লিখে পাঠাও। পাঠানোর ঠিকানা—মনোবন্ধু, কিশোর আলো, ১৯ কারওয়ান বাজার, ঢাকা। ইমেইল করতে পারো [email protected]-এই ঠিকানায়। ইমেইলে পাঠাতে হলে সাবজেক্টে লিখবে - মনোবন্ধু, তারপর তোমার সমস্যাটি ইউনিকোড ফরম্যাটে লিখে পেস্ট করে দেবে মেইলের বডিতে। নাম, বয়স লিখতে ভুলবে না। তোমার সমস্যা বোঝার ক্ষেত্রে এগুলো গুরুত্বপূর্ণ।