আবেগের মশাল

বই ভালো হয়, খারাপ হয়। তবে আমার সঙ্গে অনেক খারাপ মানুষের পরিচয় হলেও খারাপ বইয়ের দেখা এখনো মেলেনি। তাই সব বই-ই আমার বন্ধু। গত মাসে (ডিসেম্বর, ২০১৯) আমি বরেণ্য লেখক আনিসুল হকের দুষ্টু মেয়ের দল বইটি পড়ি। আমি নিজে একটা মেয়ে এবং নবম শ্রেণির তুলনায় দুষ্টুমি একটু বেশিই করি। তাই নামটা নিজের কথাই মনে করিয়ে দেয়। এই গল্পে কোনো প্রধান চরিত্র নেই। আছে একটা দল। দলের ভিন্ন ভিন্ন সদস্যের ভিন্ন ভিন্ন চরিত্র। আমার কাছে রাশেদাকে ডানপিটে বলে মনে হয়। আমি আমাকে পাই বা হারিয়ে ফেলি ওর মাঝে। গল্পটা মূলত গ্রামাঞ্চলের মেয়েদের ফুটবল খেলা নিয়ে। গ্রামাঞ্চল তো পরের কথা, আজকাল শহরেই মেয়েদের মাঠে খেলা মানা। ছেলেরা আছে যে! তবে এখানে মেয়েরা যে ছেলেদের থেকে কম নয় বরং বেশি, তার প্রমাণ খুব সুন্দরভাবে দেওয়া আছে। এখানকার মেয়েরা পিছিয়ে যায়নি। লড়াই করেছে। কত কষ্ট করে তাদের লড়াই চালাতে হয়েছে, তা গল্পটা পড়লে বোঝা যায়। একসময় মনে হয় আমি বইটিতে হারিয়ে গেছি। মেয়েদের বাস্তব চিত্র এই গল্পে খুব সুন্দরভাবে ফুটে উঠে এসেছে। গল্পের প্রশংসা করে আমি শেষ করতে পারব না। শুরু থেকে শেষ অবধি এ গল্প হৃদয়ে এমন এক তোলপাড়ের সৃষ্টি করে, যা বলে বোঝানো যায় না। কখনো গ্রামের মেয়েদের দুষ্টুমিতে হাসতে হাসতে মাটিতে লুটাতে হয়, কখনো তাদের সাহসিকতার জন্য গর্ব করতে হয়। কখনো আনন্দে উচ্ছ্বসিত হয়ে প্রাণ চিৎকার করে বলে ‘গোল! গোল! গোল!’ সর্বোপরি গল্পটা যেন আবেগের মশাল, হৃদয়তলে তা যেন জ্বলে সর্বক্ষণ।

লেখক: শিক্ষার্থী, মনিপুর উচ্চবিদ্যালয়, ঢাকা