বাস্তবে ভূত বলতে কিছু থাকুক বা না-ই থাকুক, ভূত আছে মানুষের কল্পনায়। ভূতের বসবাস আমাদের মনে। তাই পৃথিবীতে ভূত আছে কি না, সে বিষয়ে বিস্তর বিতর্ক থাকতে পারে। কিন্তু ভূতের গল্প যে আছে, তা এক শ ভাগ নিশ্চিত। পাঠকের বয়স যতই হোক, তার কাছে ভূতের গল্পের আবেদন কখনোই হারিয়ে যাওয়ার নয়।
অতিপ্রাকৃত গল্প সাধারণত হয় ভয়ের। থাকে নৃশংসতা, রোমাঞ্চ, অ্যাডভেঞ্চার। আবার মজার ভূতও কিন্তু আছে। আছে মেছো, গেছো, কেলো ভূত। কুকুর-বিড়াল মরলেও যে ভূত হবে না, এ নিশ্চয়তা দেয় কে? ভূতের সঙ্গে কিছু সময় থাকার অভিজ্ঞতাটা কেমন হতে পারে? কিংবা প্রভুভক্ত কুকুরও কি প্রতিদান দিতে ফিরে আসে মৃত্যুর পরে? এসব প্রশ্নের উত্তর পাবে সুলেখক মিজানুর রহমানের লেখা অদ্ভুত বারো ভূত বইটিতে।
বইটির কিছু গল্প বেশ অদ্ভুত। যেমন ধরা যাক, আরেক ভুবন গল্পটির কথা। গল্পটি পড়ে পাঠককে ভাবিয়ে তুলবে, এটা প্যারালাল ওয়ার্ল্ডবিষয়ক কোনো সায়েন্স ফিকশন, নাকি নিখাদ ভূতের গল্প! আবার জগা ডাকাত ওরফে জগন্নাথ মাইতির ভূতের সঙ্গে বসবাসের অভিজ্ঞতাটাও কিন্তু কম কৌতূহলোদ্দীপক নয়। রয়েছে দিল্লিতে লেখকের ভূতদর্শনের বাস্তব অভিজ্ঞতা, যার কোনো ব্যাখ্যা তিনি দাঁড় করাতে পারেননি। বাদ পড়েনি বহুল প্রচলিত ভৌতিক লোককাহিনিও। মেছো ভূতকে হত্যা করে জেলে ফজর আলির প্রায়শ্চিত্তের গল্পটিও বিচিত্র অনুভূতি সৃষ্টি করে পাঠকের মনে।
বইটির আরেকটা দিক হলো, এর ভাষা ভারি সোজা। লেখক একেবারে রোজকার ভাষায় সহজভাবে ছোট ছোট বাক্যে লিখেছেন প্রতিটি গল্প। রয়েছে যত্নের ছাপও। পড়ে ফেলা যায় অল্প সময়ে, তরতর করে। পাশাপাশি মোস্তাফিজ কারিগরের আঁকা প্রচ্ছদটিও বইটিকে দিয়েছে ভিন্নমাত্রা।
মিজানুর রহমানের বেশির ভাগ গল্পের ভূতগুলো ভারি অদ্ভুত আর মজার হলেও তাদের কেউ কেউ যে তোমায় ঝড়ের রাত্তিরে ভয় পাইয়ে দেবে না, সে নিশ্চয়তা দেয় কে? প্রকৃতি থেকে প্রকাশিত বইটি সংগ্রহ করতে পারো রকমারি ডটকম থেকে।