যে ১৫টা সহজ নিয়ম মানলে সুস্থ থাকা যাবে
শরীর ভালো রাখতে আমরা সবাই চাই। অসুখ-বিসুখ হলেই বুঝতে পারি, সুস্থ থাকাটা কত জরুরি। কতগুলো খুব সহজ নিয়ম আছে, যা মানলেই আমরা সুস্থ থাকতে পারি।
১. চিনি কম খাবে। সরাসরি চিনি আছে, এমন খাবার, যেমন মিষ্টি, পায়েস, চকলেট, লজেন্স, বিস্কুট, বোতলের বা প্যাকেটের পানীয় কম খাবে। তোমার রোজকার ক্যালরি যা তুমি গ্রহণ করো, তার ১০ ভাগের বেশি চিনি থেকে আসতে পারবে না। সরাসরি চিনি তোমার দেহে কোলেস্টেরল বাড়াবে, আর দাঁতের ক্ষতি করবে।
২. প্রচুর পানি পান করবে। পানি খেলে কিডনিতে পাথর হবে না, শরীরের তাপমাত্রা ঠিক থাকবে, কোষ্ঠকাঠিন্য হবে না। আট বছরের বেশি বয়সী শিশুদের রোজ কম পক্ষে দুই লিটার পানি পান করা উচিত।
৩. কোমল পানীয়কে ‘না’ বলো। কোমল পানীয়তে শুধু চিনি বেশি থাকে, তা–ই নয়; এতে থাকে সালফেট, যা হাড়ের জন্য ক্ষতিকর। চিনি আছে, এমন ফলের রসও খাওয়া থেকে বিরত থাকো। রস নয়, ফল খাও।
৪. পেট ভরে খাওয়া, বেশি করে খাওয়া ঠিক নয়। মা–বাবা অনেক সময় ছেলেমেয়েদের বেশি করে খাইয়ে তৃপ্ত হন। এটা ঠিক নয়। বাচ্চারা যতটুকু খেতে পারে, তা–ই তাদের খেতে দেওয়া উচিত। তবে শিশুর ওজন যদি কম থাকে, ডাক্তার বা পুষ্টিবিদ দেখাতে হবে।
৫. খাবার হতে হবে সুষম। এতে শাকসবজি, ফল, দুধ, আমিষ, ডাল, ভাতের মতো খাবার থাকতে হবে।
৬. পর্যাপ্ত ঘুম দরকার। রাতে ঘুমাবে, দিনে জেগে থাকবে। ৬ থেকে ১২ বছরের শিশুদের ৯ থেকে ১২ ঘণ্টা ঘুম দরকার। ১২ থেকে ১৮ বছরের শিশুদের ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত।
৭. পর্দার সামনে কম সময় থাকতে হবে। টিভি হোক, কম্পিউটার হোক, দিনে দুই ঘণ্টার বেশি নয়।
৮. প্রচুর খেলাধুলা করতে হবে। দিনে কম পক্ষে এক ঘণ্টা ছোটাছুটি হয়, এমন খেলার মধ্যে থাকতে হবে। সাইকেল চালাও, সাঁতার কাটো, স্কিপিং করো; ফুটবল, ক্রিকেট, ভলিবল, ব্যাডমিন্টন, টেবিল টেনিসের মতো খেলায় মাতো। দাঁড়িয়াবাঁধা–গোল্লাছুটের মতো খেলাও উপকারী। এক্কাদোক্কাও তো চলতে পারে।
৯. বসার ভঙ্গি, দাঁড়ানোর ভঙ্গি, হাঁটার ভঙ্গি ঠিকঠাক হতে হবে। বসতে হবে মেরুদণ্ড সোজা করে। হাঁটু দুটো থাকবে সমান উচ্চতায়। চিবুক থাকবে মাটির সমান্তরাল। দুই কাঁধ থাকবে একই উচ্চতায়।
১০. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। হাত ধোয়ার নিয়ম মানতে হবে। হাঁচিকাশি দিতে হবে টিসু পেপারে, তারপর তা বিনে ফেলতে হবে। না হলে কনুই ভাঁজ করে নাকেমুখে ধরে সেখানে হাঁচি দিতে হবে। হাতের নখ বড় রাখবে না।
১১. দাঁত মাজতে হবে নিয়মিত—রাতে শোয়ার আগে আর সকালে নাশতার পর। দাঁত মাজারও নিয়ম আছে। ঠিকঠাক ব্রাশ ব্যবহার করতে হবে। দাঁতে সমস্যা হলে ডেন্টিস্টের কাছে যেতে হবে।
১২. তোমার কোনো খাবারে বা জিনিসে বা পরিবেশে অ্যালার্জি থাকতে পারে। এটা শনাক্ত করে ফেলো। কারও বাদামে অ্যালার্জি থাকে, কারও–বা হাঁসের ডিমে, চিংড়ি বা ইলিশ মাছ বা গোরুর মাংসে থাকে অ্যালার্জি। বিড়াল ঘরে থাকলেও কারও অ্যালার্জি হয়। ধুলাবালিতে অনেকেরই অ্যালার্জি থাকে। কারও অ্যালার্জি থাকে ফুলের রেণুতে। তোমার কোনো অ্যালার্জি থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তাঁর কথামতো চলো।
১৩. লবণ কম খাবে। চিপস–জাতীয় খাবার কম খাওয়া ভালো। একজন ডাক্তারকে আমি বলতে শুনেছিলাম, আমরা যদি চিনি আর লবণ কম খাই, পৃথিবী থেকে অর্ধেক অসুখ চলে যাবে।
১৪. লিফট বাদ দিয়ে সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করা ভালো। দু–তিনতলা পর্যন্ত হেঁটেই ওঠানামা করো। কাছের দূরত্বে রিকশা বা গাড়ি না চড়তে পারলে ভালো।
১৫. নিয়ম করে ডাক্তার দেখানো ভালো। ডাক্তারের পরামর্শমতো চলতে হবে। তোমার মা–বাবা ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে কত দিন পরপর তোমার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে, তা ঠিক করবেন। তোমার ওজন ঠিক আছে কি না, চোখে কোনো অসুবিধা হচ্ছে কি না, দাঁতে কোনো সমস্যা আছে কি না—এসব বিষয়ে ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন।
(মম জাংশন ডট কম থেকে মুক্ত রূপান্তর।)