চোখ ভালো রাখতে যে নিয়ম মানতে হবে
আধুনিক প্রযুক্তি বলতে আমরা বুঝি কম্পিউটার, ল্যাপটপ, মোবাইল, ট্যাব, টিভি; বিশেষ করে রঙিন টিভি। এসব আধুনিক প্রযুক্তি এখন আমাদের ঘরে অতি সহজলভ্য। এসব প্রযুক্তি আমাদের পৃথিবীকে ছোট করে ফেলেছে। আমরা পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে বসবাসরত আপনজনকে যেমন দেখতে পারি, তেমনি কথাও বলতে পারি। কর্মজীবী মায়েরা শিশুকে মোবাইলে কার্টুন দেখিয়ে শান্ত রাখেন, ব্যস্ত রাখেন; এমনকি খাবার খাওয়ান। যার ফলে শিশু শুধু খাবার গেলে, চিবায় না।
লেখাপড়া, কোচিং করা, অনলাইন ক্লাস এখন সাধারণ ব্যাপার। ঘরে বসে কেউ কেউ কম্পিউটারের মাধ্যমে চাকরি করেন। সাত দিনের কাজ এক–দুই ঘণ্টায় করেন। সব পেশার মানুষ মোবাইলে বাসার খোঁজ নেওয়া, খবর পড়া, যোগাযোগ রক্ষা করা থেকে শুরু করে ইন্টারনেটে পড়াশোনা করতে পারে। এসব সুবিধার পাশাপাশি প্রযুক্তির কিছু কুফল রয়েছে। শিশুকে মোবাইল-ট্যাবে কার্টুন দেখিয়ে খাবার খাওয়ানো, ব্যস্ত রেখে নিজের কাজ করা—এতে প্রায়ই দেখা যাচ্ছে শিশু ঠিকমতো যথাসময়ে কথা বলে না। চিবিয়ে খাবার না খাওয়ার কারণে পেটের পীড়া লেগেই থাকে। একধ্যানে অনেকক্ষণ মোবাইল বা কম্পিউটারের স্ক্রিনে তাকিয়ে গেম খেলে। অনেক সময় ধরে মোবাইল বা স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকলে চোখের স্বাভাবিক পানি শুকিয়ে যায়, চোখ শুষ্ক হয়ে যায়। ফলে মাথাব্যথা, চোখব্যথা প্রায় অনেকের মধ্যেই দেখা যায়।
৫ থেকে ১৮ বছর বয়সের ছেলেমেয়েদের চোখে প্রায়ই চশমা লাগে। মধ্যম বয়সের মানুষেরা চাকরির জন্য অথবা প্রয়োজনীয় কাজের জন্য দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটার ব্যবহার করেন। অনেকক্ষণ একধ্যানে তাকিয়ে থাকতে হয়। এ কারণে তাঁদেরও ড্রাই আই সিনড্রোম দেখা যায় অর্থাৎ চোখ খচখচ করে, লাল হয়ে যায়, মাথা ব্যথা করে। এসব উপসর্গ থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে মাঝেমধ্যে চোখ পরিষ্কার পানি দ্বারা ধুতে হবে। এ ছাড়া আর্টিফিশিয়াল টিয়ার ব্যবহার করা যেতে পারে। অ্যান্টিরিফ্লেকটিভ গ্লাস ব্যবহার করা যেতে পারে। প্রতি ২০ মিনিট কম্পিউটারে কাজ করার পর ২০ সেকেন্ড চোখকে বিশ্রাম দিতে হবে। শিশু থেকে উঠতি বয়সের বাচ্চাদের ক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার সীমিত রাখাই চোখকে ভালো রাখার উপায়।
লেখক: বিভাগীয় প্রধান, চক্ষুরোগ বিভাগ, ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা