তুমি কতটা বৃষ্টিবিলাসী

অলংকরণ: রাকিব রাজ্জাক
জানালার ধারে বসে আছো তুমি। হাতে ধোঁয়া ওঠা এক কাপ গরম চা। বাইরে টাপুরটুপুর শব্দে বৃষ্টি পড়ছে। তোমার মাথায় বাজছে, ‘বৃষ্টি পড়ে টাপুরটুপুর নদেয় এল বান...’। কী, ভাবতেই খুব চমৎকার লাগছে? বৃষ্টি নিয়ে কবি বা লেখকেরা বরাবরই একটা আলাদা আবেগ অনুভব করেন, তাই বলে সাধারণ মানুষও মাতামাতিটা কম করে না কিন্তু। তা, তুমি কি বৃষ্টি ভালোবাসো? বেশি ভাবার প্রয়োজন নেই, নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও। আর স্কোর মিলিয়ে জেনে নাও তুমি আসলেই কতটা বৃষ্টিবিলাসী।

১. রাত বাজে দেড়টা। এমন সময় প্রবল বৃষ্টি শুরু হলো। তুমি যে কাজটি করবে—

ক. রাত দেড়টায় বৃষ্টি? আমি হয়তো জানবই না, ঘুমিয়ে থাকব কিংবা জানলেও আমার কিছু যায়-আসে না।
খ. একমুহূর্তও ভাবব না, সোজা বৃষ্টিতে ভিজব। বৃষ্টি আমার এতই প্রিয়, রাত-দিন বিষয় না।
গ. দিনদুপুরে হলে ভিজতাম। রাতে হলে প্রশ্নই আসে না। বড়জোর খানিকক্ষণ বৃষ্টি দেখব।

২. ক্লাসে যাবে। ব্যাগ নিয়ে সকাল সকাল বের হয়েছ, কোনোভাবেই ক্লাসে দেরি হয় না যেন। এমন সময় বলা নেই, কওয়া নেই বৃষ্টি নামল। তোমার প্রতিক্রিয়া—

ক. এমনি সময় বৃষ্টি ভালোই লাগে। কিন্তু কাজের সময় বৃষ্টি নামলে খানিকটা মেজাজ খারাপ হয়।
খ. এটা কোনো কথা? বৃষ্টি নামার আর সময় পেল না? খুব খুব রাগ হয় এমন হলে...
গ. কী চমত্কার! হয়তো বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতেই ক্লাসে চলে যাব। না ভিজলেও অন্তত খুশি হব যে বৃষ্টি দেখে সকালটা শুরু!

৩. বৃষ্টি মানেই তোমার কাছে—

ক. দুহাত মিলে মনের আনন্দে বৃষ্টিতে ভেজা!
খ. রাস্তাঘাটের কাদা, তাই বাড়িতে বসে থাকা।
গ. গরম-গরম খিচুড়ি আর অলসভাবে সময় কাটানো।

৪. ধরো, তোমাকে এমন একটা দেশে যেতে হবে, যেখানে কখনোই বৃষ্টি হয় না। তার বিনিময়ে তোমার একটি ইচ্ছা পূরণ করা হবে। এমন একটা প্রস্তাবে তোমার মতামত হলো—

ক. সঙ্গে সঙ্গে রাজি হব। রাজি না হওয়ার তো কোনো কারণ পাচ্ছি না।
খ. এটা নির্ভর করবে সময় আর মুডের ওপর। বৃষ্টি ছাড়া থাকতে হবে—এটা ভালো লাগছে না, আবার ইচ্ছাপূরণের বিষয়টাও এড়িয়ে যেতে পারছি না।
গ. একটা ইচ্ছা পূরণ করা হবে তো? আমার ইচ্ছা খুব সুন্দর বৃষ্টি হয় এমন দেশটাতে আবার ফেরত পাঠানো। বৃষ্টি ছাড়া থাকা অ-স-ম্ভ-ব!

৫. খুব মন দিয়ে কাজ করছ। এমন সময় দেখলে বৃষ্টি পড়ছে। টাপুরটুপুর বৃষ্টি। তুমি যা করবে—

ক. ইয়ে না মানে, সত্যি বলতে কাজ ফেলে বৃষ্টির দিকে হাঁ করে তাকিয়ে থাকা আমার জন্য নতুন কিছু নয়।
খ. মন দিয়ে কাজ করছি তো? দেখা যাবে বৃষ্টি পড়ছে, সেটা খেয়ালই করিনি।
গ. মাঝে মাঝে বৃষ্টি দেখব আর কাজ করব। তবে কাজ বন্ধ করে দেব না পুরোপুরি।

৬. বৃষ্টিতে শেষ কবে ভিজেছ—

ক. সে অনেক অনেক কাল আগের কথা। এক দেশে ছিল এক রানি...ওহ্, ভুলে রূপকথা বলতে শুরু করেছি। অনেক দিন আগের কথা কিনা, সময়টা মনে করতে পারছি না।
খ. শেষ কবে বৃষ্টি হলো? কয়েক দিন আগেই না? হ্যাঁ, তবে কদিন আগেই।
গ. কয়েক বছর আগে। এখন খুব একটা ভেজা হয় না।

৭. তোমার সঙ্গে এরই মধ্যে যে ব্যাপারটি ঘটেছে বা প্রায়ই ঘটে—

ক. আমি বৃষ্টিতে ভিজতে গেলেই দেখি বৃষ্টি থেমে যায়। আমার সঙ্গেই যে কেন এমন হয়!
খ. আমি ঘর থেকে বের হলেই বৃষ্টি নামে, ঘরে থাকলে বৃষ্টি হয় না। কী যে বিরক্তিকর!
গ. বৃষ্টিতে ভিজে হাত-পা বরফের মতো জমে যায়, তবু বৃষ্টিতে ভিজতে থাকি!

৮. যে কারণে তুমি বৃষ্টিতে ভিজতে চাও না—

ক. আমার বৃষ্টিতে ভিজতে ইচ্ছাই করে না, আবার কেন!
খ. বৃষ্টিতে আমি ভিজব আর ঠান্ডা জ্বর হবে না—এমনটা কখনো হয় না। তাই ভিজতে চাই না।
গ. কী? বৃষ্টিতে ভিজতে চাইব না? এমনটা কখনোই হয় না। এমনকি আমি শীতকালেও চাই বৃষ্টি হোক, যেন বৃষ্টিতে ভিজতে পারি।

৯. বৃষ্টির দিনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের হোম পেজ দেখে তোমার প্রতিক্রিয়া যা হয়—

ক. বেশ ভালো লাগে। সবাই বৃষ্টি নিয়ে কত কবিতা, গান শেয়ার করে। আমি নিজেও বৃষ্টি নিয়ে পোস্ট দিই।
খ. অ-স-হ্য! বৃষ্টি নিয়ে এত মাতামাতি করার কী হলো? এটাই আমি বুঝি না।
গ. বৃষ্টি ভালো লাগে, কিন্তু বেশি মাতামাতিটা একদম ভালো লাগে না।

১০. বৃষ্টির দিনে এর মধ্যে যে বিষয়টি তোমার সবচেয়ে ভালো লাগে?

ক. মাটির সোঁদা গন্ধ!
খ. সত্যি বলি? বৃষ্টির দিন বিশেষভাবে ভালো লাগার কী আছে?
গ. সব ভালো লাগে! কদম ফুল, টিনের চালে বৃষ্টির শব্দ, বৃষ্টির গান...তালিকাটা বিশাল। একটা-দুটো বলা যাবে না।

নম্বর

১. ক. ০ খ. ১০ গ. ৫
২. ক. ৫ খ. ০ গ. ১০
৩. ক. ১০ খ. ০ গ. ৫
৪. ক. ০ খ. ৫ গ. ১০
৫. ক. ১০ খ. ০ গ. ৫
৬. ক. ০ খ. ১০ গ. ৫
৭. ক. ৫ খ. ০ গ. ১০
৮. ক. ০ খ. ৫ গ. ১০
৯. ক. ১০ খ. ০ গ. ৫
১০. ক. ৫ খ. ০ গ. ১০

তুমি যেখানে দাঁড়িয়ে

০-৩৫: যা বোঝা যাচ্ছে, বৃষ্টির সঙ্গে তোমার বোঝাপড়া একদমই ভালো নয়। বৃষ্টি উত্তর মেরুতে হলে তুমি দক্ষিণ মেরুতে গিয়ে পালিয়ে থাকতে চাও। বৃষ্টি নিয়ে তোমার একদমই ভালোবাসা নেই, এটা তুমিও জানো; বরং অন্য কাউকে বৃষ্টি নিয়ে মাতামাতি করতে দেখলে তুমি কিঞ্চিত বিরক্ত হও। বৃষ্টিকে আরেকটু ইতিবাচকভাবে দেখো, দেখবে ঠিক বৃষ্টি ভালো লাগবে।

৪০-৭০: অঙ্কে বুঝি তুমি বেশ ভালো? তুমি বৃষ্টি মাপমতো পছন্দ করো। একটু কমও না আবার বেশিও না। যখন কাজের সময়, তখন বৃষ্টি নিয়ে মাথা ঘামাও না। আবার অবসরে বৃষ্টি উপভোগ করো। মাঝেমধ্যে বৃষ্টিতে ভিজতে ইচ্ছে করে তোমার, কিন্তু নানা কারণে তা আর হয়ে ওঠে না। তবে মাঝেমধ্যে বৃষ্টি সৌন্দর্য উপভোগ না করে, নিজের কাজেই ব্যস্ত থাকো বেশি। আরেকটু বৃষ্টিকে ভালোবাসতেই পারো, তাতে খারাপ কিছু নেই।

৭৫-১০০: বৃষ্টিবিলাসী শব্দটা তোমার জন্যই অভিধানে টিকে আছে। সবাই এত কর্মব্যস্ত থাকে যে বৃষ্টিকে ভালোবাসার মতো কারোরই যেন সময় নেই। কিন্তু তুমি তাদের দলের নও। তুমি ঠিকই প্রকৃতির এই অপূর্ব বিষয়টিকে মন থেকে ভালোবাসো। তবে মাঝেমধ্যে একটু বেশিই বৃষ্টিবিলাস করো; ফলে বিপত্তিতেও পড়তে হয় তোমাকে। বৃষ্টি প্রিয় হওয়া মন্দ কিছু না। তবে তার জন্য শতেক রকম ঝামেলা তৈরি করাও কাজের কথা নয়।