আলবার্ট আইনস্টাইন যদি পদার্থবিজ্ঞানী না হতেন, তবে কী হতেন, বলো তো? উত্তরটা শুনলে অনেকেই একটু বিষম খেতে পারো। তিনি হতেন সংগীতজ্ঞ। সত্যি, নিজেই বলেছেন এমন কথা। তাঁর চিন্তাভাবনায় সংগীত ছিল বড় অনুপ্রেরণা। তিনি বেহালা বাজাতে ভালোবাসতেন। এমনকি প্রিয় বেহালার নাম দিয়েছিলেন লিনা, ভায়োলিনকেই একটু কাটছাঁট করে এই নাম দেওয়া আরকি। আসলে গান কিংবা সংগীতকে না ভালোবেসে পারা যায় না। সে জগৎখ্যাত বিজ্ঞানীই হোক কিংবা পাড়ার মুদিদোকানি। দিনে অন্তত একবার গান কোনো না কোনোভাবে শোনা হয়েই যায় সবার। তবে হ্যাঁ, গান ভালো লাগে না, এমন লোকও কিন্তু পৃথিবীতে আছে। পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার ৩-৪ শতাংশ মানুষ—যাঁরা গানের সঙ্গে নিজের আবেগকে সম্পৃক্ত করতে পারেন না, তাঁদের নিয়ে আবার গবেষণাও করছেন বিজ্ঞানীরা। তুমি কি গানপাগল? যদি সে দলের হয়েও থাকো, নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়ে জেনে নাও তুমি কতটা গানপাগল।
১. সকালবেলায় আরাম করে ঘুমাচ্ছ। এমন সময় গানের আওয়াজ তোমার কানে ভেসে এল। তোমার প্রতিক্রিয়া যা হবে—
ক. বাহ! দিনটা নিশ্চয় দারুণ যাবে। সকাল সকাল গান শুনে ঘুম ভাঙার মতো ব্যাপার তো রোজ রোজ ঘটে না।
খ. খিটখিটে একটা মেজাজ হয়ে থাকবে সারা দিন। সকাল সকাল এসব ভ্যাঁ ভ্যাঁ শোনা যায় নাকি!
গ. গান শুনতে তো ভালোই লাগে। তবে সকালবেলা যদি ঘুম ভেঙে যায় তাতে, সেটা তখন আর ভালো লাগবে না।
২. তোমার পছন্দের সংগীতশিল্পী তোমার এলাকায় গান করতে আসছেন। খবরটা শুনে তুমি যা করবে—
ক. যদি সময়–সুযোগ থাকে তাহলে কেন যাব না কনসার্টে? অবশ্যই চেষ্টা করব যাওয়ার।
খ. আমার প্রিয় শিল্পী গাইবে আর আমি যাব না! এটা তো হতেই পারে না। চাঁদ-তারা-সূর্য সবকিছু মিলিয়ে একটা অমলেট করে নিয়ে যাব দরকার হলে।
গ. প্রিয় শিল্পী আবার কী? আমার এসব কিছু নেইটেই।
৩. যে ধরনের গান শুনতে তুমি ভালোবাসো—
ক. রাস্তাঘাটে চলার সময় যে গান কানে আসে না? ওই সে পর্যন্তই শোনা। এর বেশি আর শুনি না, শুনতেও চাই না।
খ. আমার মুডের ওপর আসলে নির্ভর করে কোন গান শুনব। মন ভালো থাকলে যেমন একধরনের গান শুনি, মন খারাপ হলে আবার আরেক ধরনের।
গ. আমার তো সব রকম গান ভালো লাগে! গান হলেই হলো। শুধু গানের নামে যদি কেউ অখাদ্য কিছু করে, তাহলে সমস্যা।
৪. দিনের মধ্যে ঠিক কতটা সময় গান শুনতে ব্যয় করো?
ক. আমি পারলে সারা দিনই গান শুনি। কানে ইয়ারফোন থাকে সব সময়। মন দিয়ে না শুনলেও গানটা ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে। কানে আরাম দেয় আরকি।
খ. কোথাও যাওয়া–আসার পথে কিংবা রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে—এভাবে হিসাব করলে প্রায় দুই-তিন ঘণ্টা তো প্রতিদিন শোনাই হয়।
গ. মাইনাস ২৩৬৭৯৪০২ ঘণ্টা। হলো?
৫. গানের যে ব্যাপারটা তোমার সবচেয়ে ভালো লাগে—
ক. কোনো কিছুই তো ভালো লাগে না। লোকে কেন শোনে সেটাও বুঝি না।
খ. গানের কথা ভালো লাগে, কারণ সেটা মনের কথার সঙ্গে মিলে যায়। আর সংগীত-সুর বাকি সব ভালো লাগে, কারণ সেটা মন ভালো করে দিতে পারে। মোটের ওপর সবটাই ভালো লাগে। সবটা মিলেই তো গান!
গ. গানের কথা ভালো না হলে গানই শুনি না।
৬. তোমার প্রিয় সংগীতশিল্পীকে নিয়ে কথা হচ্ছে। কিংবা ধরো তোমার পছন্দের গান নিয়ে। আলাপের এক পর্যায় কেউ একজন বলেই বসল, তোমার প্রিয় সংগীতশিল্পীর গান তার ভালো লাগে না। আর তোমার পছন্দের গানটা তার সবচেয়ে বিরক্তিকর গান বলে মনে হয়। তোমার প্রতিক্রিয়া যা হবে—
ক. এসব গান বোঝে না যারা, তারাই বলতে পারে। এসব কথা শুনলে মাথা গরম হয়ে যায়। তর্কাতর্কি বেধে যায় আমার সঙ্গে।
খ. ভালো তো না–ই লাগতে পারে, এটা তো খুব স্বাভাবিক বিষয়। তবে আমার সঙ্গে খাতির হবে না আরকি।
গ. আরেহ! আমার তো কোনো প্রিয় গান বা শিল্পী বলে কিছু নেই। দ্বিমত হবে কীভাবে?
৭. কাজ করতে করতে গান শুনলে কাজের প্রতি তোমার আগ্রহ যেমন হয়—
ক. কাজের সময় গান না শুনলে আমি আবার কাজে মন বসাতে পারি না। গান শুনলে কাজের মোটিভেশন পাই।
খ. কাজের সময় যখন কেউ জোরে জোরে গান বাজায়, আমার বিরক্ত লাগে। জানি না, গান শুনতে শুনতে কীভাবে কাজ করে মানুষ।
গ. আসলে নির্ভর করে কী ধরনের কাজ করছি আমি। অনেক সময় গান শুনতে শুনতে কাজ করি, আবার খুব গভীর মনোযোগের দরকার হলে শুনি না।
৮. গান যদি পৃথিবীতে না থাকত, তবে—
ক. তাহলে খুবই কোলাহলমুক্ত একটা পৃথিবী হতো!
খ. খুবই বোরিং হতো মানুষের জীবন।
গ. আমি এমন পৃথিবীতে থাকতেও চাই না যেখানে গান নেই, হাহ!
৯. কোন অ্যাপের মিউজিক কোয়ালিটি কেমন, কিংবা কোন ডিভাইস দিয়ে গান শুনলে ভালো হবে, এসব ব্যাপারে তোমার ধারণা—
ক. এ ব্যাপারে কোনো পরামর্শ লাগবে? একদম ঠিক মানুষের কাছে এসেছেন। আমার এ বিষয়ে স্বঘোষিত একটা পিএইচডি আছে।
খ. অনেক বেশি ধারণা না থাকলেও নিজের পছন্দ অপছন্দ জানি। কোনটাতে কমফোর্টেবল সেটা জানি।
গ. গানই তো শোনা হয় না আমার। এসব ব্যাপারে কোনো ধারণা নেই আমার।
১০. ভবিষ্যতে গান নিয়ে গবেষণা, পড়ালেখা কিংবা ক্যারিয়ার গড়ার ব্যাপারে তোমার মনোভাব—
ক. মাথাটা তো আমার এখনো খারাপ হয়ে যায়নি যে এই কাজ করব।
খ. গান ভালোবাসি, কিন্তু শেখা বা এই নিয়ে পড়াশোনা কিংবা ক্যারিয়ার করার ইচ্ছা হয়নি।
গ. কোনো কথাই হবে না। এখনই রাজি আমি, কোথায় যেতে হবে? কার সঙ্গে কথা বলতে হবে এ জন্য?
নম্বর
১. ক. ১০ খ. ০ গ. ৫
২. ক. ৫ খ. ১০ গ. ০
৩. ক. ০ খ. ৫ গ. ১০
৪. ক. ১০ খ. ৫ গ. ০
৫. ক. ০ খ. ১০ গ. ৫
৬. ক. ১০ খ. ৫ গ. ০
৭. ক. ১০ খ. ০ গ. ৫
৮. ক. ০ খ. ৫ গ. ১০
৯. ক. ১০ খ. ৫ গ. ০
১০. ক. ০ খ. ৫ গ. ১০
তুমি যেখানে দাঁড়িয়ে
০–৩৫: গান ভালোবাসে না, এমন মানুষ খুব বিরল। তুমি সেই বিরল মানুষদের তালিকায় পড়েছ। কোনো গবেষকের সঙ্গে তোমার দেখা মিললে, সে নিশ্চয়ই তোমাকে নিয়ে গবেষণা শুরু করে দেবে। অন্যদিকে তোমায় নিয়ে গায়ক অনুপম গান লিখবে, ‘তোমায় নিয়েই গবেষণা হোক’। আচ্ছা, গান ভালো না-ই লাগতে পারে, তবে এত খারাপ লাগারও কি কিছু রয়েছে?
৩৫–৭৫: তুমি বেশ গানপ্রিয় মানুষ। তোমার গান নিয়ে বেশ আগ্রহ রয়েছে। নতুন কোনো গান এলেই তুমি সেটা শুনতে বসে যাও। গানের কথা-সুর সবকিছুই ভালো হওয়া চাই তোমার। তবে প্রিয় শিল্পীর গানকেই বেশি প্রাধান্য দাও তুমি। বিভিন্ন মুডের ভিত্তিতে প্লে লিস্টও তৈরি রয়েছে তোমার। মোটের ওপর, তুমি গান ভীষণ ভালোবাসো।
৭৫-১০০: তুমিই সত্যিকার অর্থে গানপাগল! গান নিয়ে যত পাগলামি করা যায়, সবটাই বোধ হয় তোমার করা শেষ। মাঝেমধ্যে গান শুনতে শুনতে তোমার সময় কিংবা কাজের দিকেও খেয়াল থাকে না। কোনো গান একবার ভালো লাগলে এতশতবার শুনতে থাকো তুমি, যতক্ষণ পর্যন্ত না সেটা তোমার কান পচিয়ে দেয়। আবার প্রিয় শিল্পী নিয়ে গবেষণাও শেষ তোমার, তার ব্যাপারে জানার আর কিছু বাকি নেই। প্রিয় শিল্পীকে নিয়ে ভিন্ন মতামত শুনলে, তর্ক জুড়ে দাও তুমি। অন্যের মতামতের ব্যাপারে সহনশীল হতে হবে কিন্তু। সে যা–ই হোক, তোমার মতো পাগলেরও দরকার আছে। কারণ গায়ক তো গেয়েছেনই, ‘পাগল ছাড়া দুনিয়া চলে না...!’