প্রিয় মনোবন্ধু,
আমার বয়স ১৬। এ বছর এসএসসি পরীক্ষা দেব। ক্লাস সেভেন থেকে আমার মধ্যে হাত ধোয়ার বাতিক আছে। হাত ধোয়ার ভয়ে ওয়াশরুমেও যাই না। জানি, এটা লজ্জার ব্যাপার। আবার কোনো কিছু ভুল করলে নিজের ওপর রাগ হয়। জিনিসপত্র ছুড়তে ইচ্ছা করে। আবার অনিচ্ছা সত্ত্বেও আপত্তিকর চিন্তা মাথায় আসে। ঘুমে অনিয়মও হচ্ছে, আট ঘণ্টা ঘুমাতে না পারলে মেজাজ খিটখিটে হয়। হাত ধোয়ার চিন্তায় মাঝেমধ্যে পড়তেও পারি না। আমাকে সাহায্য করো প্লিজ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
উত্তর: প্রথমে শুভেচ্ছা নিয়ো। তুমি অনেক সুন্দর করে গুছিয়ে তোমার সমস্যার কথাগুলো লিখতে পেরেছ। তোমার সমস্যাটির নাম ওসিডি (অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিজঅর্ডার)। মনে রাখবে, এটি নিছকই একটি মানসিক স্বাস্থ্যসমস্যা। ভয়, লজ্জা বা রাগের বিষয় নয়। তুমি ধৈর্য ধরে চিকিৎসা করালে এ সমস্যা থেকে বের হয়ে আসতে পারবে। তুমি কয়েকটি অভ্যাস পালন করতে পারো—১. হাতে কিছু ধুলাবালু লাগিয়ে হাত না ধুয়ে প্রথম দিন ৫ মিনিট, পরের দিন ১০ মিনিট, এরপর আস্তে আস্তে ৩০ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করে পরে হাত ধোবে। ২. আপত্তিকর চিন্তা এলে সে সময় অন্য কোনো কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়তে পারো। ওসিডির জন্য কিন্তু ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন হয়। তাই তুমি যে শহরে থাকো, সেখানকার নিকটবর্তী মেডিকেল কলেজের সাইকিয়াট্রি বিভাগ বা ঢাকার জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের বহির্বিভাগে যোগাযোগ করে ওষুধ নিতে পারো। পাশাপাশি জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে প্রতি বৃহস্পতিবার সকালে ওসিডির জন্য বিশেষ গ্রুপ থেরাপি করা হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগবিদ্যা বিভাগেও ওসিডি বিষয়ে বিশেষ চিকিৎসাসেবা আর কাউন্সেলিং দেওয়া হয়। মনে রাখবে, ওসিডি একটি দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা, তবে ধৈর্য ধরে চিকিৎসা করালে এটি ভালো হয়।
এই বিভাগে তোমরা তোমাদের মানসিক নানা সমস্যা, যা তোমার শিক্ষক, মা-বাবা বা অন্য কাউকে বলতে পারছ না, তা আমাদের লিখে পাঠাও। পাঠানোর ঠিকানা—মনোবন্ধু, কিশোর আলো, ১৯ কারওয়ান বাজার, ঢাকা। ইমেইল করতে পারো [email protected]-এই ঠিকানায়। ইমেইলে পাঠাতে হলে সাবজেক্টে লিখবে - ‘মনোবন্ধু’, তারপর তোমার সমস্যাটি ইউনিকোড ফরম্যাটে লিখে পেস্ট করে দেবে মেইলের বডিতে। নাম, বয়স লিখতে ভুলবে না। তোমার সমস্যা বোঝার ক্ষেত্রে এগুলো গুরুত্বপূর্ণ।