প্রিয় মনোবন্ধু,
আমি কীভাবে শুরু করব, ঠিক বুঝতে পারছি না। আমি আসলে আর কয়েকজন ১৪ বছর বয়সী মেয়ের মতো নয়। আমার আবেগ ও অন্য কয়েকজন মানুষের মতো নয়। শেষবার কিশোর আলোর ‘তুমি কতটা আবেগী’ পরীক্ষায় আমার নম্বর ছিল মাত্র ১৫, আমার মন খারাপ থাকলে কাউকে কিছু বলতে পারি না। বিশ্বাস করো, আমার খুব করে বলতে ইচ্ছা করে, তবে শেষ মুহূর্তে গিয়ে আর বলতে পারি না। আমি কাঁদতেও পারি না। এমনকি কেউ মারা গেলেও না। সবাই বলে, আমি অনেক শক্ত। কিন্তু আসলেই কি তাই? এমন কিছু যদি সত্যি শক্ত হওয়া বিষয় হয়, তাহলে আমি তা হতে চাই না। আমারও মন খারাপ হয়, আমার আওয়াজ করে কাঁদতেও ইচ্ছা করে। তবে পারি না কোনোটাই। ইদানীং বন্ধুদের সঙ্গেও খুব একটা মিশতে পারি না। কোনো বেস্ট ফ্রেন্ডও নেই আমার। এখন কেউ একটু কিছু বললেই খুব চটে যাই। ইচ্ছা করে সবার কাছ থেকে দূরে চলে যেতে, অনেক দূরে...।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
উত্তর: প্রিয় বন্ধু, আমি প্রথমে তোমাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। তোমার সমস্যাগুলো খুব সুন্দর করে গুছিয়ে লিখতে পেরেছ এখানে। তুমি বলেছ যে তুমি কাউকে কিছু বলতে পারো না। কিন্তু তুমি এখানে এত সুন্দর করে যেটা লিখতে পেরেছ, আমি বিশ্বাস করি তুমি চাইলে সুন্দর করে বলতেও পারবে। তোমার মধ্যে একধরনের সামাজিক ভীতি বা সোশ্যাল অ্যাংজাইটি আছে, যাতে মানুষের সামনে যেতে বা বন্ধুদের সঙ্গে মিশতে উদ্বিগ্ন বোধ করো। তুমি প্রতিদিন একবার করে নিজেকে ধন্যবাদ দেবে। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে বলবে, আমি চাইলেই নিজেকে পাল্টে ফেলতে পারি। মনের আবেগগুলো চেপে না রেখে প্রকাশ করবে, অন্যের সামনে প্রকাশ করতে অসুবিধা হলে নিজে একা প্রকাশ করবে। তোমার প্রয়োজন সাইকোথেরাপি বা কাউন্সেলিং। জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট বা মনোরোগবিদ্যা বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগাযোগ করে তুমি সেখানে প্রয়োজনীয় সেবা পেতে পারো।
এই বিভাগে তোমরা তোমাদের মানসিক নানা সমস্যা, যা তোমার শিক্ষক, মা-বাবা বা অন্য কাউকে বলতে পারছ না, তা আমাদের লিখে পাঠাও। পাঠানোর ঠিকানা—মনোবন্ধু, কিশোর আলো, ১৯ কারওয়ান বাজার, ঢাকা। ইমেইল করতে পারো [email protected]-এই ঠিকানায়। ইমেইলে পাঠাতে হলে সাবজেক্টে লিখবে - ‘মনোবন্ধু’, তারপর তোমার সমস্যাটি ইউনিকোড ফরম্যাটে লিখে পেস্ট করে দেবে মেইলের বডিতে। নাম, বয়স লিখতে ভুলবে না। তোমার সমস্যা বোঝার ক্ষেত্রে এগুলো গুরুত্বপূর্ণ।