পানি ছাড়া আমরা অচল, তবু কেন যেন পানির প্রতি গুরুত্ব দিতেই চাই না আমরা। অনেকে তো ভুলেই যাই পানি খাওয়ার কথা। কিন্তু পানির উপকারীতা গেল সত্যিই অবাক করার মতো। চলো দেখি।
পানি পানে উপকার
ওজন কমানো
অতিরিক্ত ওজনের জন্য শারীরিক সমস্যায় ভুগছ? ওজন নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে পানি হতে পারে তোমার হাতিয়ার। কারণ, তৃষ্ণা মেটানোর ক্ষেত্রে এটি কোমল পানীয়ের একটা বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। কোমল পানীয়তে বেশ বড় একটা পরিমাণে ক্যালরি থাকে। এই বিরাট পরিমাণ ক্যালরি ওজন বাড়ানো এবং স্থূলতাসংক্রান্ত স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য দায়ী। অপরদিকে বিশুদ্ধ পানিতে কোনো ক্যালরি বা চিনির উপস্থিতি নেই। আবার অনেক সময় আমরা ভাবি, আমাদের খিদে পেয়েছে। আসলে সে সময় আমরা তৃষ্ণার্ত থাকি। তাই সে সময় পানি পান করাটা বেশ কার্যকর। তাই তুমি যদি ভাবো ওজন কমাবে, তাহলে সমাধান: বেশি বেশি পানি পান।
শরীরের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি
পানিশূন্যতা তোমায় শারীরিকভাবে দুর্বল করে দিতে পারে। এমনকি তোমার পুরো শরীরের ওজনের ১ বা ২ শতাংশ পানির ঘাটতি দেখা দিলে তাও-ও তোমায় দুর্বল করে দিতে পারে। এবং এ থেকে হতে দেখা দিতে পারে ক্লান্তি বা মাথা ঘোরার মতো উপসর্গ।
মাথাব্যথার সমাধান
শরীরে পানির ঘাটতির আরেকটি উপসর্গ হলো মাথাব্যথা। অনেক সময়ই আমাদের মাথাব্যথা হয়, শুধু যথেষ্ট পরিমাণে পানি পান না করা। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে মাথাব্যথার আরও অনেক কারণ আছে। কিন্তু এর মাঝে একটি সাধারণ কারণ হলো পানিশূন্যতা।
তরতাজা ত্বক
পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করলে তোমার ত্বক হবে পরিষ্কার এবং আর্দ্র, তোমায় দেখাবে আরও তাজা এবং উদ্দীপ্ত। প্রতি সপ্তাহে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করার মিশনে নামো, আর দেখো ত্বকের ওপর তার প্রভাব!
সঠিক পরিপাকে
ঠিকঠাক খাবার হজমের জন্য দরকার পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি। পানি প্রায়ই অ্যাসিডিটিসংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। আঁশজাতীয় খাদ্যের সঙ্গে পানি পান করলে তা কোষ্ঠকাঠিন্য সমাধানেও বেশ কার্যকরী।
বিষাক্ত পদার্থ দূরীকরণে
আমাদের শরীরে সব সময়ই অসাড় এবং বিষাক্ত পদার্থ তৈরি হয়, যা একটি নির্দিষ্ট সময়ের বেশি শরীরে অবস্থান করলে তা শারীরিক সমস্যা তৈরি করে। যত বেশি পানি পান করবে, তত ভালোভাবে কাজ করবে তোমার কিডনি।
ব্যায়ামের সময়
আমরা সবাই জানি শারীরিক ব্যায়ামের সময় পানি পান করাটা প্রয়োজনীয়। কিন্তু জানো, আগে থেকে পানিশূন্যতায় ভুগলে সেটাও গুরুতরভাবে ব্যায়ামে ব্যাঘাত ঘটায়। ব্যায়ামের গতি কমিয়ে দেয় এবং তোমার জন্য সেটি করা কঠিন হয়ে যায়। তাই শুরুর দুই ঘণ্টা আগে হলো ব্যায়াম করার মোক্ষম সময়। আর হ্যাঁ, ব্যায়ামের সময় এবং পরেও পর্যাপ্ত পানি পান করতে ভুলো না কিন্তু!
৬ উপায়ে নিয়মিত পানি পানের অভ্যাস তৈরি
১. প্রতিবার খাবারের পরে এক গ্লাস পানি পান করো।
২. পুরো দিন সঙ্গে রাখো একটি পানিভর্তি বোতল।
৩. পড়াশোনার সময় হাতের কাছেই রাখো পানি।
৪. হালকা খাবার খেতে ইচ্ছে করলে আগে পানি পান করো।
৫. চা, কফি আর কোমল পানীয়—কোমল পানীয়র বিকল্প হোক বিশুদ্ধ পানি।
৬. রোজ কত গ্লাস পানি পান করছ, সেটার হিসাব রেখো।
মানুষের শরীরে—
রক্তে পানির পরিমাণ ৯২ শতাংশ
হাড়ে ২২ শতাংশ
মাংসপেশিতে ৭৫ শতাংশ
প্রাকৃতিক ওষুধ!
মানবদেহে পানির মূল কাজ হলো শরীরের তাপমাত্রা ঠিক রাখা, অসাড় ও বিষাক্ত পদার্থ দূর করা এবং প্রাকৃতিক পুষ্টি উপাদানগুলো কোষে পৌঁছে দেওয়া। কিন্তু বেশ কিছু অসুখ এবং স্বাস্থ্যসংক্রান্ত জটিলতায় বেশ দারুণ কাজ করে পানি।জটিলতায় বেশ দারুণ কাজ করে পানি।
রসাল মৌসুমি ফলও হতে পারে পানির দারুণ উৎস!
অসুখ-বিসুখ এড়াতে নজর রাখো পানির বিশুদ্ধতার প্রতি।