প্রিয় মনোবন্ধু,
আমি সপ্তম শ্রেণিতে পড়ি। এ ঘটনাটা বলতে খুব সংকোচ বোধ করছি, কিন্তু আমাকে বলতেই হচ্ছে! ক্লাস সিক্সে থাকতে আমার সঙ্গে খুব বাজে একটা ঘটনা ঘটে। সেটা ফিজিক্যালি হ্যারেজমেন্ট ছিল। এ ঘটনা সম্পর্কে আমি কাউকে কিছুই বলিনি। এটা নিয়ে আমার শ্রেণিশিক্ষিকার সঙ্গে কথা বলে তেমন কোনো ফল পাইনি। আমার তিনজন বন্ধুকে এটা নিয়ে বলেছিলাম, তাদের মধ্যে দুজন এটা নিয়ে এরপর থেকে কোনো কথা বলেনি। আরেকজন প্রতিদিন এটা সম্পর্কে আমাকে মনে করাবে। তা–ও আবার অন্যদের সামনে। এই তো স্কুল বন্ধ হওয়ার দুই দিন আগেও এটা আমার সহপাঠীদের সামনে বলে ফেলতে গিয়েছিল। ওর এই কথাগুলো এখন প্রতিদিন আমাকে ঘোরের মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে। এটার জন্য আমি আত্মহত্যাও করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু পারিনি। তুমি আমায় প্লিজ হেল্প করো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
উত্তর: প্রথমত, মনে রাখবে আত্মহত্যা কোনো ঘটনার সমাধান নয়। তাই আত্মহত্যার চিন্তার বদলে নিজের মনের যত্ন নিয়ে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নিয়েই তোমাকে এই সমস্যা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। এক বছর আগে তোমার সঙ্গে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গিয়েছিল, সেটার জন্য তুমি মোটেও দায়ী নও। তাই সেই ঘটনাটি নিয়ে তুমি কখনোই কোনো অপরাধবোধে ভুগবে না। আর তুমি বিষয়টি নিয়ে শিক্ষিকা আর বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে খুব ভালো কাজ করেছ। তবে তোমার যে বন্ধু বিষয়টি নিয়ে তোমাকে বিব্রত করে, তাকে বলো যে বিষয়টি এভাবে বলা তুমি পছন্দ করছ না। বরং বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে তুমি এই হ্যারেজমেন্টের বিষয়ে আরও অনেককে সচেতন করে তুলতে পারো। কীভাবে নিজেকে হ্যারেজমেন্ট হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করা যায়, সে বিষয়ে তুমি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সাহায্য নিয়ে অপরকে সচেতন করতে পারো। বিষয়টি নিয়ে তোমার মা-বাবার সাহায্য নাও। তাঁদের ঘটনাটি বুঝিয়ে বলো—তাঁদের ভয় পাবে না। আবারও মনে করিয়ে দিচ্ছি, আত্মহত্যা কোনো সমস্যার সমাধান নয়। বরং নিজের ভেতরের শক্তিকে জাগিয়ে তোলো। নিজেকে প্রকাশ করো। তবে বারবার যদি আত্মহত্যার চিন্তা মাথায় আসতে থাকে, তবে কোনো মনোরোগ–বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারো।
এই বিভাগে তোমরা তোমাদের মানসিক নানা সমস্যা, যা তোমার শিক্ষক, মা-বাবা বা অন্য কাউকে বলতে পারছ না, তা আমাদের লিখে পাঠাও। পাঠানোর ঠিকানা—মনোবন্ধু, কিশোর আলো, ১৯ কারওয়ান বাজার, ঢাকা। ইমেইল করতে পারো [email protected]-এই ঠিকানায়। ইমেইলে পাঠাতে হলে সাবজেক্টে লিখবে - ‘মনোবন্ধু’, তারপর তোমার সমস্যাটি ইউনিকোড ফরম্যাটে লিখে পেস্ট করে দেবে মেইলের বডিতে। নাম, বয়স লিখতে ভুলবে না। তোমার সমস্যা বোঝার ক্ষেত্রে এগুলো গুরুত্বপূর্ণ।