এত দিন পাড়ায় আমার বেশ একটা বুদ্ধিজীবী হিসেবে নামডাক ছিল। কিন্তু আমাদের এই বাসার তিন তলায় হাঁটুর বয়সী ক্লাস সেভেনে পড়ুয়া অনির্বাণ এসে আমার জায়গাটা দখল করে নিতে চাইছে! দখল করে নেওয়াটাই স্বাভাবিক। মোটা ফ্রেমের চশমা পরে যেভাবে মোটা মোটা সব বইপত্র নিয়ে ঘোরাঘুরি শুরু করেছে, এতে করে আমার নামডাক কমে যেতে বাধ্য! এই তো সেদিন আমাকে জিজ্ঞেস করল, ‘আচ্ছা আঙ্কেল, আপনার সঙ্গে মেটাফিজিকস নিয়ে একটু আলাপ করতে চাইছিলাম।’
ঢোঁক গিলে ভয়ে ভয়ে বললাম, ‘ফিজিকস-ই জানি না, মেটাফিজিকস নিয়ে আলাপ করব কী করে?’
যেন সামনে দাঁড়িয়ে আমি একটা তেলাপোকা, এমন দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে অনির্বাণ বলল, ‘এটা যে ফিজিকসের কোনো বিষয়ই নয়। ফিলোসফি, মানে দর্শনের এক শাখা।’
তাতেই বুঝলাম, বুদ্ধিজীবী হিসেবে দিন ফুরিয়ে এসেছে আমার!
সেই থেকে ভয়ে ভয়ে এড়িয়ে চলি অনির্বাণকে। দেখা হলেই এমনভাবে সরে পড়ি যেন কোথাও আগুন লেগেছে, সেটা নেভাতে যেতে হবে আমাকে! কিন্তু সেদিন আর পালাতে পারলাম না। গাঁক করে আমাকে পাকড়াও করল অনির্বাণ। বলল, ‘আঙ্কেল, একটা লাইব্রেরি করছি। নাম দিয়েছি নীহারিকা।’
কাষ্ঠ হেসে বলি আমি, ‘ভালো তো, খুব ভালো। নীহারিকা খুব ভালো নাম। ধূমকেতু, উপগ্রহ—এসবের চেয়ে ঢের ভালো।’
‘আচ্ছা, কী কী বিভাগের বই রাখব লাইব্রেরিতে বলুন তো?’ জিজ্ঞেস করে অনির্বাণ।
‘কেন? কমিকস, গোয়েন্দা গল্প, সায়েন্স ফিকশন...’
আরও কিছু বলতে গিয়েছিলাম, কিন্তু আমাকে থামিয়ে অনির্বাণ বলল, ‘এসব রাখাটা কি ঠিক হবে? আমি ভাবছিলাম ইতিহাস, সমাজবিজ্ঞান, চিরায়ত সাহিত্য, দর্শন এসব বিষয়ের বই রাখব।’
জেদ চেপে যায় আমার। এই নব্য বুদ্ধিজীবীর আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্যই হড়বড়িয়ে বলি আমি, ‘কিন্তু যদি হাসির গল্প না থাকে তোমার লাইব্রেরিতে তাহলে সেটা কখনোই পরিপূর্ণ হবে না।’
‘হাসির বই! কেমন হালকা হয়ে যায় না? সন্দিহান কণ্ঠে জিজ্ঞেস করে অনির্বাণ।
‘মোটেও হালকা হবে না। ভারী হবে হাতির চেয়েও। দেশ-বিদেশের তাবত্ বাঘা বাঘা লেখকেরা যেসব হাসির গল্প লিখে রেখেছেন, কোনো তুলনা নেই ওগুলোর’—একদমে বলি আমি।
‘দু-একটা উদাহরণ দিতে পারবেন?’, এখনো সন্দেহ যায়নি অনির্বাণের।
‘দু-একটা কেন, হালি হালি, ডজন ডজন পারব’, বুক ফুলিয়ে বলি। এরপর শুরু করি আমার কথা।
একদম প্রথমেই বলি উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী (১৮৬৩-১৯১৫)-এর কথা। উপেন্দ্রকিশোরের অনেকগুলো অসাধারণ হাসির গল্প আছে। কিন্তু তাঁর টুনটুনির বই না পড়লে পাঠক জীবনই বৃথা! এই বইয়ের ভূমিকার লেখক আজ থেকে ১২৬ বছর আগে লিখেছিলেন, ‘সন্ধ্যার সময় শিশুরা যখন আহার না করিয়াই ঘুমাইয়া পড়িতে চায়, তখন পূর্ববঙ্গের কোনো কোনো অঞ্চলের স্নেহরূপিণী মহিলাগণ ওই এই গল্পগুলো বলে তাহাদিগকে জাগাইয়া রাখেন।’ টুনটুনির বই-এর রসাল গল্পগুলো একবার পড়লে ভোলা অসম্ভব। ‘টুনটুনি আর রাজার কথা’, ‘পান্তাবুড়ির কথা’, ‘বাঘের উপর টাগ’, ‘বুদ্ধুর বাবা’—এসব গল্পের মতো রসাল গল্প বিশ্বসাহিত্যেই বিরল। বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জে জন্ম নেন এই লেখক। উপেন্দ্রকিশোরের পুত্র সুকুমার রায়ের (১৮৮৭-১৯২৩) অমর গল্পগুলো না পড়লেও সম্পূর্ণ হয় না বাংলা বই পাঠ। সুকুমার রায়ের হাসির ছড়া, হাসির গল্পের জুড়ি নেই। তাঁর হযবরল বইতে পাওয়া যাবে এমন এক জায়গার কথা, যেখানে কখনো সাত দুগুণে হয় তেরো টাকা চৌদ্দ আনা তিন পাই, আবার কখনো চৌদ্দ টাকা এক আনা নয় পাই! ভোলা অসম্ভব সুকুমার রায়ের ‘রাম গরুড়ের ছানা’দের—হাসতে যাদের মানা! কিংবা তার অবিস্মরণীয় চরিত্র ‘পাগলা দাশু’র মজার মজার কাণ্ড আমাদের বাধ্য করে হাসতে। ‘চিনে পটকা’ ‘টুকে-মারি আর মুখে মারি’-এই গল্পগুলো পড়তেও মজা আর হাসি। ওই পরিবারেই মেয়ে লীলা মজুমদারের (১৯০৮-২০০৭) গল্পগুলোতেও হাসিখুশির ধারা সমান বহমান। তাঁর পদিপিসির বর্মিবাক্স সেই অর্থে হাসির বই না হলেও এর পরতে পরতে লুকিয়ে আছে হাসির সব উপকরণ। লীলা মজুমদারের সব ভুতুড়ে বইটাও পড়া দরকার। ভূতের গল্পের আড়ালে যে নির্মল মজা আর আনন্দ লুকিয়ে থাকতে পারে, তার অনন্য এক উদাহরণ এই বইটি। ভূত-রহস্য-অ্যাডভেঞ্চার গল্পের মোড়কে যে কীভাবে পেট ফাটানো হাসির সব গল্প বলা যায় তার অদ্বিতীয় উদাহরণ হলো শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের (১৯৩৫) অদ্ভুতুড়ে সিরিজের বইগুলো। রসাল, মজারু নানান কাণ্ডকারখানায় ভরপুর তবে ছোট আয়তনের কিশোর উপান্যাসগুলো পড়া চাই-ই চাই। শীর্ষেন্দুর গোঁসাই বাগানের ভূত, মনোজদের অদ্ভুত বাড়িসহ অন্য সব বইগুলোই অবিস্মরণীয়। শীর্ষেন্দুর অমর গোয়েন্দা চরিত্র বরদাচরণের গল্পগুলো জোগান দেয় অফুরন্ত হাসির।
যে চরিত্র দুটোর কথা মনে পড়লেই হাসি পায়, মন ভালো হয়ে যায়, তেমন দুটো চরিত্র হলো প্রেমেন্দ্র মিত্রর (১৯০৪-১৯৮৮) ‘ঘনাদা’ এবং নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের (১৯১৮-১৯৭০) ‘টেনিদা’। বনমালি লস্কর লেনের বাসিন্দা ঘনাদার গল্পে টানটান রহস্য আর উত্তেজনা তো রয়েছেই, সঙ্গে রয়েছে গল্প বলবার অনবদ্য এক ধরন। এ কারণে পাঠকের ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠবেই উঠবে। ‘টেনিদা’র লাইনে লাইনেও মজা। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের এই কালজয়ী চরিত্র পটলডাঙ্গার ‘টেনিদা’ আর তার শাগরেদ হাবুল সেন, প্যালারাম আর ক্যাবলার দুরন্ত সব কীর্তির জুড়ি নেই। এমন রসাল সব লেখা যে না চাইলেও হাসতে হয়।
পল্লীকবি জসীমউদ্দীন (১৯০৩-১৯৭৬)-এর বাঙ্গালীর হাসির গল্প পাওয়া যায় দুই খণ্ডে। এখন বাংলা ১৪২৩ সাল। বাঙালির হাসির গল্প বেরোয় আজ থেকে ঠিক ৫২ বছর আগে ১৩৭১ সালে। বাংলাদেশের প্রচলিত অনেক হাসির গল্প মিলবে এই বইয়ের দুই খণ্ডে। এহসান চৌধুরীর (১৯৪০) ‘কাঠিমামা’ সিরিজের বইগুলোয় রহস্য, অ্যাডভেঞ্চার যেমন আছে, তেমনি আছে পাতায় পাতায় হাসি। আমাদের গুরুত্বপূর্ণ লেখক রাহাত খানের (১৯৪০) ‘দিলুর গল্প’ বইতে কিশোর জগেক এমন অমর করে তুলে ধরেছেন যে হাসি ঠেকানো দায়। আজ থেকে পাক্কা ৪৫ বছর আগে বেরোনো বইটি তাই আজও সমান রঙিন। ‘খুব লম্বা না দেখতে কিন্তু বেশ মজবুত শরীর। মাথায় শজারুর কাঁটার মতো চুল’-দিলুর এমন বর্ণনা দিয়ে শুরু হওয়া বইটি পড়া শুরু করলে শেষ না করে ওঠাই যাবে না; ইংরেজিতে যাকে বলে ‘আন পুট ডাউনেবল।’ সরাসরি হাসির না হলেও রসে টইটম্বুর এক বই আনোয়ারা সৈয়দ হকের (১৯৪০) ‘ছানার নানাবাড়ি’। যখন বইটির একদম প্রথম দিকেই আমরা পাই ‘ছানা-ছানা, এই ছানা, হতচ্ছাড়া, পাজি, নচ্ছার ভূত’—তখনই বুঝে যাই আমরা যে হাসি আর মজার এক জগতে প্রবেশ করছি। হাসির গল্পের তালিকায় রাখতেই হবে মোহাম্মদ নাসির আলীর (১৯১০-১৯৭৪) লেবুমামার সপ্তকাণ্ড বইটি, যার পাতায় পাতায় মজার সব গল্প। মনে পড়ছে মাত্র ২২ বছর বয়সে মারা যাওয়া লেখক খান মোহাম্মদ ফারাবীর (১৯৫২-১৯৭৪) অমর অমর গল্পঅলা বই মামার বিয়ের বরযাত্রী বইটির কথা। বলতেই হবে আমাদের দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদের (১৯৪৮-২০১২) কথা। তার ছোটদের জন্য বিস্তর লেখা রয়েছে। জাদুকরি গল্প বলার ক্ষমতা ছিল জীবদ্দশায় কিংবদন্তি হয়ে ওঠা এই লেখকের। সরাসরি হাসির গল্প লেখেননি তিনি। কিন্তু তাঁর লেখাগুলোয় থাকে বিস্তর মজার উপকরণ। হুমায়ূন আহমেদের বোতল ভূত, পিপলী বেগম, এলেবেলে (দুই পর্বে), একি কাণ্ড! চেরাগের দৈত্য এবং বাবলু, মজার ভূত, ভূত ভূতং ভূতৌ, তোমাদের জন্য রূপকথা, রাক্ষস খোক্কস এবং ভোক্কস বইগুলোতে মন কেমন করা গল্প যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে মন ভালো করা হাসির উপকরণ। হুমায়ূন আহমেদেরই ভাই মুহম্মদ জাফর ইকবাল (১৯৫২) বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় কিশোর সাহিত্যিক। তাঁর যেসব বই পড়লে হাসি আটকানো দায় তার মধ্যে রয়েছে বিজ্ঞানী সফদর আলীর মহা মহা আবিষ্কার, দস্যি ক’জন, দুষ্টু ছেলের দল, কাবিল কোহকাফি, বিজ্ঞানী অনিক লুম্বা, বাচ্চা ভয়ংকর কাচ্চা ভয়ংকর, টুকি এবং ঝায়ের (প্রায়) দুঃসাহসিক অভিযান, শাহনাজ ও ক্যাপ্টেন ডাবলু, ব্ল্যাকহোলের বাচ্চা, আমড়া ও ক্র্যাব নেবুলা, সায়রা সায়েন্টিস্টসহ আরও সব বই। আহসান হাবীবও (১৯৫৭) হুমায়ূন আহমেদের ভাই, ছোট ভাই। উন্মাদ পত্রিকার এই সম্পাদককে বলা হয় ‘গ্র্যান্ডমাস্টার অব জোকস’। আহসান হাবীবের লেখা অসংখ্য রম্যরচনা আর জোকস সংকলনেও রয়েছে অফুরন্ত হাসি। শাহরিয়ার খানের (১৯৬৬) কমিকস স্ট্রিপ সংকলন বেসিক আলী আর বাবুও দারুণ মজার। খণ্ডে খণ্ডে মেলে এই পাঠকপ্রিয় স্ট্রিপ। এ ছাড়াও শাহরিয়ার খানের আঁকা অন্য কমিকসেও রয়েছে বিস্তর হাসির উপকরণ। কমিকসের কথা যখন উঠলই তখন নারায়ণ দেবনাথের (১৯২৫) কথা বলতেই হয়। তাঁর অনবদ্য কমিকস চরিত্র নন্টে-ফন্টে, হাঁদা ভোঁদা, বাটুল, বাহাদুর বেড়াল, ডানপিটে খাজ আর পরে কেমিক্যাল দাদুসহ অনন্য সব সৃষ্টিই আমাদের শৈশব কৈশোরকে হাসি-আনন্দে মজিয়ে রেখেছে। আমাদের পাঠকপ্রিয় লেখক ইমদাদুল হক মিলনেরও (১৯৫৫) রয়েছে কিশোরোপযোগী দারুণ মজার মজার সব লেখা। তাঁর আরও অনেক বইয়ের মতো হাসির-ভূতের উপন্যাস ভূতের নাম রমাকান্ত কামার। ভূতের এই নামখানা ভারি অদ্ভুত সোজা পড়লেও যা, উল্টো দিক থেকেও তাই! নামের মতোই মজার তার কাণ্ডকারখানা। কাইজার চৌধুরীর (১৯৪৯) লেখাও যেন রসগোল্লার রসে ডোবানো। তাঁর ন্যাড়ার বাড়ির ভূত, বিলটু মামার গাড়ি, বিলটু মামার যত কাণ্ড, হাসির ছক্কা—এই বইগুলো অনবদ্য। ছড়াকার হিসেবে আমাদের খুব প্রিয় লুৎফর রহমান রিটন (১৯৬১)। তাঁর হ্যান করেংগা ত্যান করেংগা, ভূতের ডিমের ওমলেট, ভূতের সঙ্গে দেখা হলো, ধুত্তুরি—বইগুলো দারুণ মজার। পড়া চাই-ই চাই নাসিরুদ্দীন হোজ্জা, গোপালভাঁড়, আর তেনালীরামের সব গল্প। অনেক লেখকই এই চরিত্রগুলোকে নিয়ে প্রচলিত গল্পগুলো নিজেদের মতো করে লিখেছেন; পড়লে হাসি পাবেই পাবে।
সারাজীবন শুধু হাসির গল্পই লিখে গেছেন ছোটদের জন্য এমন লেখকও আছেন। তেমনই আশ্চর্য এক লেখক শিবরাম চক্রবর্তী (১৯০৩-১৯৮০)। তাঁর একেকটি গল্প যেন একেকটি জ্বলজ্বলে হিরে। তাঁর হাসির গল্পগুলোতে কোনো প্যাঁচ নেই, তিক্ততা নেই, অবসাদ নেই, শ্লেষ নেই, ব্যঙ্গ নেই—আছে শুধু নির্মল, নির্ভেজাল আনন্দ। দুশোর বেশি গল্প, আর তেরোটি উপন্যাস নিয়ে তাঁর ছোটদের হাসির সাম্রাজ্য। কী সব মজার নাম তাঁর গল্পের—কাণ্ড নয় প্রকাণ্ড, বাড়ির ওপর বাড়াবাড়ি, ঠিক ঠিক পিকনিক—এমন কত মজার গল্প। দুই শব্দ মিলিয়ে মজা করার ক্ষেত্রে বাংলা ভাষায় শিবরাম অদ্বিতীয়। শিবরামের গল্প এগোয় তরতর করে আর হাসতে হাসতে পেটে খিল ধরে পাঠকের। ছোটদের জন্য বিস্তর হাসির গল্প লিখেছেন সাহিত্যিক আনিসুল হকও (১৯৬৫)। তাঁর লেখা গোয়েন্দা কাহিনিগুলো এবং গুড্ডুবুড়ার সিরিজটি দারুণ মজার। আনিসুল হকের প্রতি বৃহস্পতিবার রাতে আমাদের বাসায় চোর আসে এবং ছোটরা যেদিন বাড়ির কর্তা-ও পড়া চাই।
একটানা লম্বা এই বক্তৃতা দিয়ে যেই থেমেছি, অমনি অনির্বাণের মন্তব্য, ‘ঠিক আছে আঙ্কেল, এত করে যখন বলছেন তখন না হয় এই হাসি-মজার বইগুলো রাখব আমার লাইব্রেরিতে। কিন্তু একটা বিষয়ের ওপর কিছু বই না রাখলে যে লাইব্রেরির সম্মানই থাকে না। ওই বিষয়ের ওপর কিছু বইয়ের নাম দিন না।’
‘কী বিষয়?’ জিজ্ঞাসা আমার।
‘সাহিত্য সমালোচনার উত্তর-আধুনিক ধারার ওপর কিছু বইয়ের খবর দিন তো’, ষড়যন্ত্রকারীর মতো করে বলে অনির্বাণ।
বুঝি, হেরে গেছি আমি। মাথা নিচু করে বলি, ‘জানি না।’
বুদ্ধিজীবীর তকমা অনির্বাণের মাথায় পরিয়ে ঐ ওখান থেকে পালিয়ে বাঁচি আমি।
পেছনে মিচকে হাসি হাসে নব্য বুদ্ধিজীবী মহাশয়।